আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রথম ম্যাচ জিতে আত্মবিশ্বাসী ছিল বাংলাদেশ। রোববার ফুরফুরে মেজাজে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে নামে টাইগাররা। আর সেই আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে সিরিজে সফরকারীদের হোয়াইট ওয়াশ করে ছেড়েছে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয় ম্যাচে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। আর ম্যাচের প্রায় পুরোটা সময় দাপট দেখিয়ে ৬ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে এ নিয়ে টানা তিনটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।
অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখিয়ে ম্যাচ ও সিরিজ সেরা হয়েছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
টি-টোয়েন্টিতে সাধারণত নতুন বলে নাসুম আহমেদকে দেখা গেলেও দুই পেসারকে দিয়ে বোলিং উদ্বোধন করিয়েছেন সাকিব। বাড়তি বাউন্সের সামনে আফগান ব্যাটসম্যানদের কাবু হওয়ার দৃশ্য ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচেই টের পাওয়া গেছে। সে সুবাদে তৃতীয় ওভারের মধ্যেই দুই ওপেনার বিদায়। দুজনই তাসকিনের বলে। হাসান উইকেট না পেলেও তার বলের বাউন্সে নাজেহাল হন আফগানরা।
এরপর ম্যাচে বৃষ্টির বাধা। ঘণ্টা দেড়েক খেলা বন্ধ থাকার পর ম্যাচ শুরু হয়। ম্যাচের দৈর্ঘ্যও নেমে আসে ১৭ ওভারে। কিন্তু আফগানদের দুর্দশা কমেনি। মোহাম্মদ নবী ও ইব্রাহিম জাদরা জুটি গড়লেও তাদের রান তোলার গতি ছিল অনেক কম।
৩৯ বলে ৩২ রান তোলা জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। মোস্তাফিজের ওই ওভার থেকেই অবশ্য ১৪ রান তোলে আফগানরা। তাতে রানরেট ৬ পার হয়। কিন্তু ১১তম ওভারে সাকিব আল হাসান দুবার আঘাত হানেন। ৬৭ রানে ৫ উইকেট হারায় সফরকারীরা।
করিম জানাত ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই ২৯ বলে ৪২ রানের জুটি গড়ে সফরকারীদের লড়াইয়ের পুঁজি গড়ার আশা দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু মোস্তাফিজ আবার আঘাত হানেন। ভেঙে যায় সেই জুটি। ১৬তম ওভারে ৩ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন এই বাঁহাতি পেসার।
স্কোরে কোনো বদল আনার আগেই তাসকিনের আঘাত। ইনিংসের শেষ ওভারে বল করতে এসে প্রথম দুই বলে কোনো রান দেননি। তৃতীয় বলে আউট করে দেন ১৫ বলে ২০ রান করা করিমকে। তাসকিনের বাউন্সারে একটি ছক্কা মেরেছিলেন রশিদ খান। শেষ বলে আবার বাউন্সার, এবার ওয়াইডের আশা করেছিলেন। কিন্তু আম্পায়ার তা না দেয়ায় ১১৬ রানে থামে আফগানিস্তান।
বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১১৯। কিন্তু লিটন দাস ও প্রথমবারের মতো ওপেনিংয়ে নামা আফিফ হোসেনের শুরুটা এমন ছিল যে টার্গেট বুঝি আরও অনেক বড় অংকের। সে সুবাদে ৫ ওভার শেষে বিনা উইকেটে ৫০ রান পেয়ে যায় বাংলাদেশ। পরের ১২ ওভারে মাত্র ৬৯ রান দরকার ছিল স্বাগতিকদের।
জয়ের জন্য দরকার ওভারপ্রতি ৬ রানেরও কম। এই পর্যায়ে ছন্দপতন। পরের দুই ওভারে এসেছে ১১ রান। অষ্টম ও নবম ওভারে এসেছে মাত্র ৬। ৩৬ বলে ৩৫ রান করে মুজিব উর রহমানের বলে ফেরেন লিটন। এক বল পরই ২০ বলে ২৪ রান করা আফিফ বিদায় নেন। ১১তম ওভারের শেষ বলে শান্তও বিদায় নিলে দায়িত্বটা এসে পড়ে প্রথম ম্যাচের নায়ক তাওহীদ হৃদয় ও সাকিব আল হাসানের ঘাড়ে।
২১ বলে ৩১ রানের জুটিতে সে দায়িত্ব ঠিকভাবেই পালন করেছেন দুজন। কিন্তু ওমরজাইকে মারতে গিয়ে হৃদয় আউট হয়ে যান ১৯ রানে। জয় তখনও ১২ রান দূরে। অবশ্য হাতে তখনও ১৫ বল। প্রথম ৬ বলে ৩ রান নিয়ে শামীম হোসেন নিজের ওপর একটু চাপ বাড়ালেন। শেষ ওভারে বাংলাদেশের দরকার ছিল ৪ রান। প্রথম বলেই চার মেরে মাঠ ছেড়েছেন শামীম। ১১ বলে ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন সাকিব।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান: ১৭ ওভারে ১১৬/৭ (ওমরজাই ২৫, ইব্রাহিম ২২, জানাত ২০; তাসকিন ৩/৩৩, হাসান ০/২০, নাসুম ০/১৫, মোস্তাফিজ ২/৩০, সাকিব ২/১৫)
বাংলাদেশ: ১৬.১ ওভারে ১১৯/৪ (লিটন ৩৫, আফিফ ২৪, শান্ত ৪, হৃদয় ১৯, সাকিব ১৮*, শামীম ৭*; মুজিব ২/২৮, ওমরজাই ২/১৭)।
ফল: বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী।