৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বিশ্বকাপ জয় করে দেশে ফিরলেন লিওনেল মেসিরা। তিন যুগ পর আর্জেন্টিনা যেন এখন এক অন্য আর্জেন্টিনা। সেই মাটিতেই পা ছুঁল কাপজয়ীদের।
স্বপ্ন পূরণের জন্য যখন কাতারের উদ্দেশে রওনা হন দিয়াগো মেরাডোনার উত্তরসূরিরা; তখন হয়তো ভেবেছিলেন এমন কিছুই ঘটবে। ঘটলোও সেই কাঙিক্ষত ঘটনা। স্বপ্নের কাপ উঠেছে হাতে।
সিএনএন বলছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ভোরে কাতার থেকে আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের বহনকারী বিমানটি বুয়েনস আইরেসে পৌঁছায়। মুহূর্তেই বদলে যায় পুরো বিমানবন্দরের চিত্র। এদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে দেশজুড়ে।
আগে থেকে বিমানবন্দরে অপেক্ষায় ছিলেন শুভাকাঙ্ক্ষিরা। অপেক্ষায় ছিলেন বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মীসহ আরও অনেকে। মেসিদের স্বাগত জানিয়েছেন তারা।
১৩ হাজার ৮০৯ কিলোমিটার দূরের কাতার থেকে মেসিরা যখন দেশের উদ্দেশে রওনা হন, তখন থেকেই অপেক্ষা শুরু হয় দেশবাসীর। উৎসবের নগরীতে পরিণত হয় রাজধানী শহর। সারা দেশে চলতে থাকে নানা আয়োজন। রাস্তায় নেমে এসে খেলোয়াড়দের শুভেচ্ছা জানানোর প্রস্তুতি নেন তারা।
রানওয়েতে অপেক্ষমাণ সাংবাদিক ও কর্মকর্তাদের ভিড়ের মধ্যে মেসিদের বিমানটি নামে ভোরে। সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই উচ্চৈঃস্বরে গান গাইতে থাকেন। পাইলটকে ককপিটের জানালা খুলে উল্লাস করতে দেখা যায়। ব্যান্ড বাজানোর পর মেসি বিমান থেকে উঠে আসেন। ট্রফিটি উঁচু করে ধরে একটি লাল গালিচায় পা রাখেন তিনি।
আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের ট্রেনিং গ্রাউন্ডে বিশ্বকাপজয়ীদের স্বাগত জানাতে আগে থেকেই উপস্থিত হয়েছেন ভক্তরা। সেখানেই প্রথম রাতটি কাটবে মেসিদের। এরপর নানা উদযাপন আয়োজনে অংশ নেবেন তারা। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় দলকে শহরের ঐতিহাসিক ওবেলিসক চত্বরে সংবর্ধনা দেয়া হবে।
লম্বা সময় পর শিরোপা পেয়ে বিশ্ববাসীর প্রশংসায় ভাসছেন মেসিরা। একই সঙ্গে তাদের অভিনন্দনে সিক্ত করছেন সাবেক ফুটবল গ্রেটরা। মেসিদের জয়ে বিশ্বজুড়েই চলছে উৎসব।
কাতার বিশ্বকাপের শুরুটা হোঁচট দিয়ে করলেও দ্বিতীয় ম্যাচ থেকেই ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করে আকাশি নীলরা। একের পর এক দুর্দান্ত জয় বাগিয়ে নিয়ে নাম লেখায় ফাইনালে।
১৮ ডিসেম্বর ফাইনালে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ২-২ গোলে ড্র করার পর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে সেই ফল দাঁড়ায় ৩-৩-এ। এরপর খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। টানটান উত্তেজনার সেই ম্যাচে ৪-২ গোলে ফ্রান্সকে হারিয়ে তৃতীয় শিরোপা ঘরে তোলে আর্জেন্টিনা।