বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঢাকা যেন বুয়েনস আইরেস

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২ ০২:০০

আর্জেন্টিনার জয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় নেমে পড়েন সমর্থকরা। প্রিয় দলের জার্সি পরে, পতাকা হাতে নেচে গেয়ে উদযাপন করেন জয়। কেউ কেউ বন্ধুদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন মোটরবাইক বা প্রাইভেট কারে। তাদের উচ্ছ্বাসে মাঝরাতেও জীবন্ত হয়ে ওঠে রাজধানী।

৩৬ বছরের অপেক্ষার পালা শেষে এবার সোনার হরিণ বিশ্বকাপের দেখা পেলো ট্যাংগোর দেশ আর্জেন্টিনা। আর সেই সঙ্গে অপেক্ষার পালা ফুরিয়েছে দলটির সমর্থকদের। মাঠের রুদ্ধশ্বাস লড়াই যখন গড়াল প্যানাল্টিতে, তখন দমবন্ধ করেই অপেক্ষায় ছিলেন আর্জেন্টাইন ভক্তরা। জয় নিশ্চিতের পরই শুরু হয় বাঁধভাঙা উল্লাস।

এ রাতে রাজধানী ঢাকা যেন পরিণত হয় আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে।

বাসা বাড়ির পাশাপাশি বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখার আয়োজন ছিল রাজধানীর প্রায় প্রতিটি অলি-গলিতে। বড় পর্দায় প্রিয় দলের খেলা দেখতে সন্ধ্যার পর থেকেই জটলা শুরু হতে থাকে। রাত যত গভীর হয় ততই বাড়তে থাকে ফুটবল ভক্তদের ভিড়।

রাজধানীর শান্তিনগর এলাকার ইস্টার্ন প্লাস মার্কেটের সামনে বড় পর্দায় বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখার আয়োজন ছিল। অনেকের সঙ্গে খেলা দেখতে সেখানে জড়ো হন নানা বয়সী মানুষ। কেউ সমর্থন করছিলেন আর্জেন্টিনাকে কেউবা ফ্রান্স। আবার অনেকে শুধু মেসির খেলা দেখতে হাজির হন।

খেলা দেখতে আসা ফার্মেসি মালিক মো. ফরিদ বলেন, ‘আমি এই বিশ্বকাপে ব্রাজিল সমর্থন করেছি। আমার দল আগেই বাদ হয়েছে। কিন্তু আমি মেসির ভক্ত। তার হাতে বিশ্বকাপ দেখে খুব ভালো লাগছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মেহেরবুবা আলম বলেন, ‘আমি ছোট থেকেই আর্জেন্টিনার ভক্ত। ৩৬ বছরের অপেক্ষা আজ শেষ হলো। এ এক অসাধারণ অনুভূতি।’

শুধু শান্তিনগরই নয়, রাজধানীর ধানমন্ডি, মিরপুর, শাহজাহানপুর, কাকরাইলসহ প্রায় সব এলাকার চিত্রটাই ছিল একই।

আর্জেন্টিনার জয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় নেমে পড়েন সমর্থকরা। প্রিয় দলের জার্সি পরে, পতাকা হাতে নেচে গেয়ে উদযাপন করেন জয়। কেউ কেউ বন্ধুদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন মোটরবাইক বা প্রাইভেট কারে। তাদের উচ্ছ্বাসে মাঝরাতেও জীবন্ত হয়ে ওঠে রাজধানী।

মেসিদের বিশ্বকাপ জয়ে সমর্থকদের বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে মাতে পুরান ঢাকা। ঢোল বাজিয়ে, মিছিল করে, নেচে-গেয়ে উল্লাসে মেতেছে আর্জেন্টিনার সমর্থকরা। পুরান ঢাকার অলিগলি সরগরম হয়ে ওঠে বিজয় মিছিলে।

রোববার রাতে খেলার শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরান ঢাকা। ঢোল বাজিয়ে স্লোগান দিতে দিতে মিছিল বের হয় মহল্লায় মহল্লায়। পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক, রায়সাহেব বাজার, ওয়ারী, বংশাল মোড়, মুরগীটোলা মোড়সহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজ হয়ে ওঠে উৎসবমুখর।

ক্ষণে ক্ষণে মোড় ঘুরানো ফাইনাল ম্যাচের পুরো সময়ই ছিল উত্তেজনায় ভরপুর। টাইব্রেকে আর্জেন্টিনার জয় নিশ্চিত হওয়ার পর পরই আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনোস আইরেসের আদলে আনন্দে রাস্তায় নেমে পড়েন ঢাকার সমর্থকরা।

নারিন্দা, ধুপখোলা, কলতাবাজার, লক্ষ্ণীবাজার, পাতলা খান লেনে খেলা শেষে আনন্দ মিছিল বের করে ফুটবল প্রেমীরা। এছাড়াও বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে বেশ কয়েকটি স্থানে রান্না ও খাওয়া দাওয়ারও আয়োজন করা হয়েছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলা দেখতে আসা আর্জেন্টিনার সমর্থক আহনাফ তাহমিদ ফাইয়াজ বলেন, 'আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। শুধু বলতে চাই, মেসি পেরেছে। আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতে গেছে।'

বাহাদুর শাহ পার্কে খেলা দেখতে আসা পুরান ঢাকার আর্জেন্টাইন সমর্থক রিজুয়ান মাহমুদ বলেন, 'অসাধারণ একটা ফাইনাল ম্যাচের সাক্ষী হলাম। মেসির হাতে শিরোপা উঠেছে৷ ফুটবল তার বরপুত্রকে অলংকৃত করেছে।'

মিথিলা দেবনাথ খেলা দেখতে এসেছেন ওয়ারি থেকে। তিনি বলেন, ‘সত্যি কী যে ভালো লাগছে তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। আজ আমাদের কাঙ্ক্ষিত সেই জয় হয়েছে। এই জয় শুধু আর্জেন্টিনার নয়, এ জয় ফুটবলামোদীদের। মেসি যে ফুটবল জগতের এক কিংবদন্তী তা আরও একবার প্রমাণ দিলেন।’

বাহাদুর শাহ পার্কে আর্জেন্টিনার সমর্থকদের বিজয় উল্লাস করতে দেখা যায়। এ সময় পুরান ঢাকার থানাগুলো থেকে পুলিশদের কঠোর অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বিরিয়ানির দোকানে ভিড়। ছবি: নিউজবাংলা

বিরিয়ানির দোকানে লাইন, মিলছে না পার্সেল

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় দেখা যায় আর্জেন্টিনার সমর্থকরা ভিড় জমিয়েছেন বিহারী ক্যাম্প এলাকায়। খাবারের জন্য প্রত্যেক দোকানে ছোট বড় লাইন পড়ছে।

রাত দেড়টায় বোবার বিরিয়ানিতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে অগণিত মানুষের ভিড়। অনেকে বসে আছেন অনেকক্ষণ ধরে, খাবার মিলছে না।

বিরিয়ানি নিতে আসা আসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, 'আমরা প্রায় আধা ঘণ্টা পার্সেল নেয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছি, পাচ্ছি না। বসার জায়গা তো দূরের কথা, অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর লাইন থেকে কিছুটা সামনে এগোতে পেরেছি। আরও কতক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে জানি না।'

বোবার বিরিয়ানর মালিক বলেন, 'আমরা বিরিয়ানি দিয়ে কুলাইতে পারতেছি না। আজকে আর্জেন্টিনা জিতেছে, তাই খেলা দেখে এখানে খাইতে আসছে। আমরা বিরিয়ানি রান্না করেই যাইতেছি।'

একটি কাবাবের দোকানে গিয়েও দেখা যায় লাইন। সেখানে রনি নামের এক ক্রেতা বলেন, 'বিরিয়ানি না পেয়ে কাবাব খেতে এসেছি। তবে বিরিয়ানির দোকানের চেয়ে ভিড় কিছুটা কম। অপেক্ষা করবো, সমস্যা নাই। কারণ আজকে আর্জেন্টিনা জেতার খুশিটাই বড়।'

এ বিভাগের আরো খবর