কাতারে ফিফা বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের বিপক্ষে হোঁচট খায় আর্জেন্টিনা। সে ম্যাচের পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি লিওনেল স্কালোনির অধীন দলটির।
তার তত্ত্বাবধানে প্রতি ম্যাচকেই ফাইনাল হিসেবে ধরে খেলতে নেমে শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের ফাইনালে নামবেন মেসি, দি মারিয়ারা।
মরুর বুকে বিশ্বকাপের ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে আর একটি ম্যাচ জিততে হবে স্কালোনির দলের। আর সে ম্যাচ জিতলেই তৃতীয় শিরোপা ঘরে তুলবে আলবিসেলেস্তেরা।
এমন বাস্তবতায় আর্জেন্টিনার সাবেক বিশ্বকাপজয়ী কোচ সিজার লুইস মেনোত্তি ও কার্লোস বিলার্দোর সঙ্গে সবর্কালের সেরা আর্জেন্টাইন কোচদের কাতারে নাম লেখাতে এক ধাপ পেছনে রয়েছেন স্কালোনি।
২০১৮ সালে জর্জ সাম্পাওলির বিদায়ের পর অস্থায়ী কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন ৪৪ বছর বয়সী স্কালোনি। পরে নিজের আসনটিকে পাকাপোক্ত করে নেন তিনি। তার অধীনে আর্জেন্টিনা জিতেছে কোপা আমেরিকা ও ফিনালিসিমা ট্রফি।
আক্রমণাত্মক সাম্পাওলি ও গত বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করা স্কালোনির মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য নেই। রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নেয়ার পর আর্জেন্টিনার কোচ হিসেবে তার নিয়োগ ব্যাপক সমালোচনা ও বিরোধিতার মুখে পড়েছিল। তারা মনে করেছিলেন, সে দায়িত্ব পালনের মতো যোগ্যতা স্কালোনির নেই।
আর্জেন্টিনার সাবেক কোচ দিয়েগো ম্যারাডোনা বিষয়টি পর্যবেক্ষণের পর স্কালোনিকে নিয়ে প্রশংসা করেছিলেন। তখন ক্লারিন নামের এক পত্রিকায় মেসিদের বর্তমান কোচকে বলা হয়েছিল, ‘ট্রাফিক পরিচালনায়ও সক্ষম নন তিনি।’
প্রধান কোচ হিসেবে এর আগে কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না স্কালোনির, তবে সাম্পাওলির উত্তরসূরি খোঁজার জন্য মাত্র দুই মাসের জন্য স্কালোনিকে দায়িত্ব দিয়ে রেখেছিল আর্জেন্টাইন ফুটবল ফেডারেশন। সে সময় বিপর্যস্ত এক দল পেয়েছিলেন স্কালোনি, যেটি ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে পরাজিত।
২০১৫ ও ২০১৬ সালে টানা দুইবার চিলির কাছে কোপা আমেরিকার ফাইনাল হারে আর্জেন্টিনা। দুই বছর পর ২০১৮ সালে আর্জেন্টিনার দায়িত্ব নেন স্কালোনি। তখন থেকেই তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় লিওনেল মেসির ভবিষ্যৎ।
২০১৬ সালে চিলির কাছে ফাইনালে হেরে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন মেসি। মাস দুয়েক পর অবসর ভেঙে জাতীয় দলে যোগ দিলেও ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ ব্যর্থতায় মোহ হারান তিনি। ওই বছর দল নিয়ে স্কালোনির দৃষ্টিভঙ্গি দেখে মুগ্ধ হন মেসি।
স্কালোনি কোচিং স্টাফ হিসেবে পেয়েছিলেন নিজের আইডল পাবলো আইমারকে। ছিলেন সাবেক সতীর্থ রবার্তো আয়ালা, ওয়াল্টার স্যামুয়েলও।
সেই থেকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে স্কালোনির অধীন দলটি চলে গেছে বিশ্বকাপের ফাইনালে। রোববার তারা শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলতে ফ্রান্সের বিপক্ষে।
আর্জেন্টিনা দলের ২৬ সদস্যের মধ্যে ১৯ জনই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। নবাগত সবাই এসেছেন স্কালোনির হাত ধরে।