ফিফা বিশ্বকাপের চলতি আসরে সেমিফাইনালে পরাজিত দুই দল ক্রোয়েশিয়া ও মরক্কো। এ দুই দল থেকে নির্ধারণ করা হবে তৃতীয় ও চতুর্থ দল। ইতিহাস গড়া মরক্কো ফাইনাল খেলতে না পারলেও তাদের সুযোগ রয়েছে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে তৃতীয় সেরা দল হয়ে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করার।
কাতারে খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় গতবারের রানার্স আপ ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেছে চলতি বিশ্বকাপে একাধিক অঘটনের জন্ম দেয়া মরক্কো।
কাতার বিশ্বকাপে একই গ্রুপে ছিল ক্রোয়েশিয়া ও মরক্কো। গ্রুপ এফের প্রথম ম্যাচে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। সে ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র করে আসর শুরু করে দল দুটি। একই বিশ্বকাপে আবারও দল দুটি খেলছে একে অপরের বিপক্ষে।
সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে ফাইনালের টিকিট পায়নি ক্রোয়েশিয়া। অন্যদিকে অ্যাটলান্স লায়ন্সরা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের সঙ্গে দুর্দান্ত লড়াই করে শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলে হেরে স্বপ্নের ফাইনালে যেতে পারেনি।
১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়ে নেদারল্যান্ডসকে ২-১ গোলে হারিয়ে তৃতীয় স্থান পেয়েছিল ক্রোয়েশিয়া।
চলতি বিশ্বকাপের আগে একবারই মরক্কো ও ক্রোয়েশিয়া একে অন্যের বিপক্ষে খেলেছিল। ১৯৯৬ সালে কিং হাসান ইন্টারন্যাশনাল কাপের সেমিফাইনালে নির্ধারিত সময়ে ২-২ গোলে ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে ৭-৬ গোলে জিতেছিল ক্রোয়েশিয়া।
অতিরিক্ত সময়ে ও টাইব্রেকারে একের পর এক ম্যাচজয়ী ক্রোয়েশিয়ার জন্য ভাবনার বিষয় হলো বিশ্বকাপের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত তৃতীয় স্থান নির্ধারণী কোনো ম্যাচ স্পট কিকে গড়ায়নি। দারুণভাবে উজ্জীবিত মরক্কোও চাইবে না ম্যাচটি টাইব্রেকার পর্যন্ত যাক।
আফ্রিকা ও আরবের প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে ইতোমধ্যেই ইতিহাস রচনা করেছে মরক্কো। স্পেন, বেলজিয়াম ও পর্তুগালের মতো বড় দলগুলোকে বিদায় করে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকা মরক্কো তাদের শেষ সুযোগ তৃতীয় স্থানে থেকে শেষ করতে চায় বিশ্বকাপ।
দলটির কোচ ওয়ালিদ রেগরাগি বলেন, ‘যদি ভিন্ন কিছু হতো আর আমরা ফাইনালে খেলতাম, তাহলে ভালো লাগত, তবে এখন আমাদের আরেকটি ম্যাচ খেলতে হবে। আমি জানি চতুর্থ হয়ে শেষ করার চেয়ে তৃতীয় হওয়াটা কত গুরুত্বপূর্ণ।’
ফ্রান্সের বিপক্ষে গোল হজমের আগে রেগরাগির দল আগের ছয় ম্যাচে কোনো গোল হজম করেনি। বুধবারের ম্যাচে মাত্র পাঁচ মিনিটেই তাদের গোল দেখতে হয়েছে, তবে ২০১০ সালে স্পেনের পর প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপের এক আসরে টানা পাঁচ ম্যাচে গোল হজম না করার রেকর্ড গড়ে মরক্কো।
আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সেমিফাইনালে হারের ম্যাচটিতে চোট পিছু ছাড়েনি ক্রোয়েশিয়ার। সে ম্যাচে মার্সেলো ব্রোজোভিচকে উঠিয়ে নেয়া হয় অসুস্থতাজনিত কারণে। মরক্কোর বিপক্ষে ম্যাচে শঙ্কা রয়েছে তার খেলার।
২০ বছর বয়সী সেন্টার-ব্যাক গাভাডিওলকে পায়ের ব্যথার কারণে ইনজেকশন পর্যন্ত নিতে হয়েছে। দলটির কোচ জ্লাটকো ডালিচ এরই মধ্যে জানিয়েছেন, শতভাগ ফিট না থাকা খেলোয়াড়দের নিয়ে তিনি কোনো ধরনের ঝুঁকি নেবেন না।
ব্রোজোভিচের স্থানে মধ্যমাঠে লোভরো মায়ের ও ক্রিস্টিয়ান জাকিচ প্রস্তুত রয়েছেন, তবে আরেক হাই রেটেড সেন্টার-ব্যাক জোসিপ সুটালোও গাভাডিওলের স্থানে খেলতে পারেন। অভিজ্ঞ ইভান পেরিসিচ তার জায়গা ধরে রেখেছেন।