বিশ্বকাপে একের পর এক জয়ে তাক লাগানো মরক্কো সবশেষ ১৫ বছর আগে ফ্রান্সের মুখোমুখি হয়েছিল।
কাতার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে আফ্রিকা ও ইউরোপের দল দুটি। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ মঞ্চে প্রথমবার সাক্ষাৎ হবে তাদের।
কাতারের আল খোরের আল বাইত স্টেডিয়ামে বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে স্বপ্নযাত্রায় উড়তে থাকা মরক্কোর।
কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালকে কাঁদিয়ে ১-০ গোলের জয়ে বিশ্বকাপের শেষ চার নিশ্চিত করে মরক্কো। অন্যদিকে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ স্বপ্ন ধরে রাখার মিশনে ফ্রান্স।
ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেইনের পেনাল্টি মিসে ইংল্যান্ডের কপাল পোড়ে। এতে করে ভাগ্য খুলে ১৯৯৮ ও ২০১৮ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের।
ম্যাচ শেষে সে কথা স্বীকারও করেছিলেন ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশম। তিনি বলেছিলেন, ‘সৌভাগ্যই আমাদের সেমিফাইনালে পৌঁছে দিয়েছে।’
১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালে ইতালির পর প্রথম কোনো ইউরোপিয়ান দল হিসেবে ৮৪ বছর পর ফ্রান্সের সামনে সুযোগ এসেছে বিশ্বকাপ শিরোপা ধরে রাখার।
মরক্কোর বিপক্ষে সেমিফাইনালে খেলতে নামার আগে এবারের বিশ্বকাপে কোনো ম্যাচেই নিজেদের গোলবার সুরক্ষিত রাখতে পারেনি ফ্রান্স। মরক্কোর সঙ্গে তাই বাড়তি সতর্কতা নিতেই হচ্ছে দেশমকে।
অন্যদিকে সেমিফাইনালের ফল যা-ই হোক না কেন, মরক্কোর বর্তমান দলটি ইতোমধ্যেই জাতীয় ও মহাদেশীয় ইতিহাস গড়েছে। আফ্রিকান ও আরব কোনো দেশ হিসেবে এই প্রথম সেমিফাইনালে নাম লিখিয়েছে দলটি।
তিন শীর্ষ দল বেলজিয়াম, স্পেন ও পর্তুগালকে হারিয়ে মরক্কো যে সেমিফাইনালে খেলতে এসেছে, তাতেই রূপকথা রচিত হয়ে গেছে। একমাত্র কানাডা ছাড়া আর কোনো প্রতিপক্ষের কাছেই গোল হজম করতে হয়নি মরক্কোর। গ্রুপ পর্বের সে ম্যাচেও ২-১ গোলের জয় পেয়েছিল দলটি।
সর্বশেষ যে দুটি দল পাঁচ ম্যাচে কোনো গোল হজম না করে ফাইনালে গিয়েছিল সেই ২০০৬ সালের ইতালি ও ২০১০ সালের স্পেন শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল।
মরক্কোর দারুণ সব অর্জন ফ্রান্সের দুরন্ত গতির কাছে ম্লান হয়ে যেতে পারে। এর আগে পাঁচ ম্যাচে মরক্কোর সঙ্গে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ফরাসিরা।
শেষ চারে খেলতে নামার আগে ফ্রান্স দলে কোনো চোট বা নিষেধাজ্ঞা নেই। রাইটব্যাকে বেঞ্জামিন পাভার্ডের জায়গায় জুলেস কুন্ডে মূল দলে দুর্দান্ত খেলছেন। ভাই লুকাস হার্নান্দেজের ইনজুরির সুবাদে দলে জায়গা পাওয়া থিও হার্নান্দেজও নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন।
মরক্কোর বিপক্ষে ম্যাচে গোল করতে পারলে বিশ্বকাপের ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে এক আসরে পাঁচ গোলের রেকর্ড গড়বেন ফ্রান্সের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা অলিভিয়ে জিরুদ।
এদিকে পর্তুগালের সঙ্গে হলুদ কার্ড পাওয়া মরক্কোর স্ট্রাইকার ওয়ালিদ চেডিরা সেমিফাইনালে খেলতে পারছেন না। চোটের কারণে ওয়েস্টহ্যামে খেলা অগার্ড আগের ম্যাচে খেলতে না পারলেও দলে ফিরছেন। অন্যদিকে মূল একাদশের জন্য নিজেকে ফিট করে তুলেছেন অভিজ্ঞ হাকিম জিয়েচ।