৮১ মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার কোচ তাকে উঠিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রেফারির হাতে নাম্বার বোর্ড দেখে কোনো প্রতিক্রিয়া জানালেন না। স্বভাবজাত ঠাণ্ডা মেজাজেই মাঠ ছেড়ে লভ্রো মায়েরকে ম্যাচের শেষ সময়টুকু খেলার সুযোগ করে দিলেন লুকা মডরিচকে।
ততক্ষণে হয়তো তিনি বুঝে গেছেন ৩-০ গোলে এগিয়ে থাকা আর্জেন্টিনার জয় অনিবার্য। মাঠ ছাড়ার সময় লুসাইল স্টেডিয়ামের ৮০ হাজার দর্শক করতালি দিয়ে বিদায় জানাল আধুনিক ফুটবলের এক কিংবদন্তিকে। বিষণ্ণ হাসিতেই যেন উত্তর দিলেন দর্শক অভিবাদনের।
ক্রোয়েশিয়ার সোনালি যুগের সবচেয়ে বড় নাম মডরিচের সামনে এখনও বিশ্বকাপের তৃতীয়-চতুর্থ স্থান নির্ধারনী ম্যাচ বাকি। তবে, গুরুত্ব হারানো সে ম্যাচ তিনি খেলবেন কিনা সেটা নিয়ে সন্দেহ থাকতেই পারে।
শনিবারের ওই ম্যাচে মডরিচ না খেললে শেষ হয়ে যাবে ১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ফুটবলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায়। ২০০৬ সালে ২১ বছর বয়সে যে তরুণ শুরু করেছিলেন অপার সম্ভাবনা নিয়ে ১৬ বছর পর তার বিদায় কিংবদন্তি ও নিজ দেশের সর্বকালের সেরা হয়েই।
৩৭ বছরের মডরিচকে ইউরোপিয়ান ফুটবলে হয়তো আরও কিছু দিন দেখা যেতে পারে। তবে নিশ্চিতভাবেই ৪ বছর পর বিশ্বকাপে থাকছেন না তিনি।
প্রায় এক দশক রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডের নেতা হয়ে থাকা মডরিচ লস ব্লাঙ্কোদের হয়ে জিতেছেন ৫টি চ্যাম্পিয়নস লিগ, ৩টি স্প্যানিশ লিগ ও ৪টি ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ শিরোপা। ব্যালন ডর জিতেছেন একবার।
আর ক্রোয়েশিয়ালে নিয়ে গেছেন বিশ্বকাপ সাফল্যের একেবারে কাছে। ২০১৮ সালে ফ্রান্সের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় তার। আর এবারে হারলেন মেসির আর্জেন্টিনার কাছে।
ফুটবলের সবচেয়ে বড় শিরোপা ছুঁতে না পারলেও সর্বকালের সেরা মিডফিল্ডারদের তালিকায় জিদান, প্লাতিনি, ইনিয়েস্তা, চাভি, পিরলোদের সঙ্গেই উচ্চারিত হবে লুকা মডরিচের নাম সেটা নিশ্চিত।