টেস্ট ক্রিকেটের কঠিন পরীক্ষায় ভারতের মুখোমুখি বাংলাদেশ। প্রত্যাশার বিপরীতে প্রাপ্তি কম থাকলেও জয়ের বিকল্প ভাবছে না টাইগাররা। ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জেতার পর টেস্টে জয় পেতে মরিয়া তারা।
সাদা পোশাকে আজ থেকে ২২ বছর আগে বাংলাদেশের পথচলার শুরুটা হয়েছিল ভারতের হাত ধরেই। সময়ের প্রতিক্রমায় সাদা পোশাকের লড়াইয়ে ভারতের পারফরম্যান্স আকাশচুম্বি হয়ে গেলেও বাংলাদেশ পড়ে আছে সেই ২০০০ সালের অবস্থানেই।
টেস্ট থেকে পাওয়া সফলতা টাইগারদের অতি নগণ্য। দুই দশকেরও অধীক সময় সাদা পোশাকের নিয়মিত খেলুড়ে দল হলেও উন্নতি হয়নি চোখে পড়ার মতো।
নিজেদের মোট ১৩৪ টেস্টের ভেতর কেবল ১৬টিতে জয়ের দেখা পেয়েছে টিম টাইগার্স। ১০০ হারের বিপরীতে ড্র ১৮টিতে, যার বেশিরভাগই বৃষ্টির সুবাদে। এমনকি নিজেদের গত এক বছরে খেলা শেষ ১০ টেস্টের ভেতর ৮টিতেই হার বাংলাদেশের। এক জয়ের সঙ্গী ১টি ড্র।
এমন বেহাল পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ৭ বছর পর ঘরের মাটিতে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত ভারতকে। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
ভারতের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ১১ দেখায় একবারও জয় বাগিয়ে আনতে পারেনি বাংলাদেশ। ৯ হারের বিপরীতে বাংলাদেশের অর্জন কেবলমাত্র ২টি ড্র। যার প্রথমটির জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল টেস্টে পদার্পণের ৭ বছর পর্যন্ত। আর দ্বিতীয়টি আসে ২০১৫ সালে।
এই দুই ড্রয়ের দুটিই এসেছিল বৃষ্টির সুবাদে। ২০০৭ সালে সাগরিকায় সিরিজের প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। শেষ দিনের শেষ সেশনে বাংলাদেশকে ২৫০ রানের লক্ষ্য দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ভারত।
সেই ম্যাচে ব্যাট করতে নেমে জাভেদ ওমর বেলিমের অপরাজিত ফিফটিতে বাংলাদেশ ২ উইকেট হারিয়ে ১০৪ রান তোলার পর শেষ হয়ে যায় দিনের খেলা। আর তাতে করে ড্র ঘোষণা করা হয় ম্যাচটি।
এরপর দ্বিতীয় জয়ের জন্য অপেক্ষা ২০১৫ সাল পর্যন্ত। চলতি সফরের আগে সবশেষ সেবার বাংলাদেশ সফরে এসেছিল ভারত তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ও একটি টেস্ট খেলতে। ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ জয় পাওয়ার পাশাপাশি ভারতের বিপক্ষে টেস্টে দ্বিতীয় ড্রয়ের স্বাদ আসে বাংলাদেশের সে সিরিজেই।
বৃষ্টির কারনে সেবার ফতুল্লায় ভেস্তে গিয়েছিল আড়াই দিনেরও বেশি সময়ের খেলা। ফলশ্রুতিতে নিশ্চিত ড্রয়েই সমাপ্তি এসেছিল একমাত্র টেস্ট সিরিজের।
ভারতের বিপক্ষে এবারের টেস্ট পরীক্ষাটা একটু কঠিন বাংলাদেশের জন্য। কেননা দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ভারতের বিপক্ষে দলের অন্যতম দুই শক্তিকে ছাড়াই নামতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। তামিম ইকবাল ও তাসকিন আহমেদ থাকছেন না মাঠে। শঙ্কা আছে দলপতি সাকিব আল হাসানকে নিয়েও। শেষ পর্যন্ত তার খেলা না হলে অনেকটা শূণ্য হাতেই ভারতের সামনে লড়াইয়ে নামতে হবে স্বাগতিকদের। যদিও সাকিবের বিষয়ে ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকবে টিম ম্যানেজমেন্ট। চোটে ব্যথা না থাকায় তাকে পেতে আশাবাদী সবাই।
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হতে পারে জাকির হাসানের। টাইগার এই ব্যাটার সিরিজের প্রথম টেস্টে ওপেন করতে পারেন মাহমুদুল হাসান জয়ের সঙ্গে।
পেইস বোলিং ডিপার্টমেন্ট সামলানোর দায়িত্ব পড়বে এবাদত, খালেদ ও শরিফুলের ওপর। আর স্পিন ডিপার্টমেন্ট সামলানোর দায়িত্ব পড়ছে সাকিব আল হাসান ও মেহেদী মিরাজের ওপর।
এদিকে ভারতের শিবিরে রোহিত শর্মায় জায়গায় সিরিজের প্রথম ম্যাচে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে শুভমন গিল অথবা অভিমন্যু ইশ্বরণের। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের জন্য ব্যাট হাতে বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেন অধিনায়ক লোকেশ রাহুল, চেতেস্বর পূজারা ও ভিরাট কোহলি। এছাড়া শ্রেয়াশ আইয়ার আর ঋষভ পন্ত তো আছেনই।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। এরপর দ্বিতীয় টেস্ট হবে ঢাকায় ২২ ডিসেম্বর।