আফ্রিকান দেশ হিসেবে প্রথমবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলবে মরক্কো। স্পেন, কানাডা এবং পর্তুগালের বিপক্ষে জয়ে এ ধাপে পৌঁছেছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটি। সেমিতে এখন তাদের সামনে ফ্রান্স বাধা।
বিশ্বকাপের মঞ্চে অ্যাটলাস লায়ন্সরা এমন চমক দেবে তা হয়তো কল্পনা করেনি মরক্কোর সমর্থকরা। ইতিহাস গড়ার লড়াই দেখতে তাই কাতারে মরক্কান সমর্থকদের ঢল নেমেছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোয় বলা হচ্ছে, চাহিদা মেটাতে মরক্কো এবং কাতারের মধ্যে কমপক্ষে ১৫টি অতিরিক্ত ফ্লাইট চালু হয়েছে।
৫৪ বছরের সাঈদ সাজিদ তার দলকে সমর্থন দিতে লন্ডন থেকে দোহায় এসেছেন। তিনি জানান, হাই-ভল্টেজ এই ম্যাচ ঘিরে তার মতো অনেক মরক্কান দোহায় এসেছেন।
সাঈদ বলেন, ‘টুর্নামেন্ট শুরুর দিন কাতার এসেছি। মরক্কোর সবগুলো ম্যাচ স্টেডিয়াম থেকে উপভোগ করেছি।
‘আমার দলের খেলোয়াড়দের উপর পূর্ণ আস্থা আছে। তারা অনেক কিছুই করতে পারে বিশ্বকাপে। অনেকেই হয়তো আমাদের গোনায় ধরেনি। দেখুন আমরা সেমিফাইনাল খেলছি!
‘দলকে সমর্থন দেয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে আমাদের আরও ভক্ত আসবে। প্রতি মিনিটে আমাদের স্বপ্ন বড় হচ্ছে।
‘যখন আমরা গ্রুপ পর্বের যোগ্যতা অর্জন করেছিলাম, তখন উদযাপন করেছি। এবার কিন্তু আমরা শেষ পর্যন্ত উদযাপন করব।’
জাতীয় দলকে সমর্থন দিতে লন্ডন থেকে দোহায় এসেছেন সাঈদ সাজিদ
মাকে নিয়ে বিশ্বকাপ উপভোগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো থেকে মরক্কো ছুটে গিয়েছিলেন ইলিয়াস বুকরিম এবং তার বোন। দোহায় পর্তুগালের বিপক্ষে শনিবার ১-০ গোলের জয়ের সাক্ষী হয়েছে পরিবারটি ।
ইলিয়াস বলেন, ‘আমি যুক্তরাষ্ট্র থাকি। গ্রুপ পর্বে আমাদের খেলা দেখার জন্য ভোর ৪টার দিকে ঘুম থেকে উঠতাম।
‘আমরা ভাল খেলছি। এই টুর্নামেন্টে আন্ডারডগ হতে পারে মরক্কো।’
ফ্রান্সের বিপক্ষে সেমিফাইনাল লড়াইয়ের আগে আরও মরক্কোর ভক্ত কাতারে আসবেন বলে আশা করছেন ইলিয়াস।
তিনি বলেন, ‘তারা (মরক্কো) সবাইকে অবাক করেছে। কারণ অনেকই এমনটা আশা করেনি। মরক্কো ফুটবল দল গোটা আরব বিশ্বকে একত্রিত করেছে। এটি দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা।’
পর্তুগালের বিপক্ষে জয়ের পর বারাতের রাস্তায় উদযাপন চলছে
গ্রুপ পর্বের বাধা পেরুনোর পর নিজ দলের খেলা সশরীরে দেখার জন্য বারাত (মরক্কোর রাজধানী) থেকে দোহা আসেন ২৬ বছরের মাহফুদ আল মুফায়েলহি। স্পেনের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় দেখেছেন; এরপর পর্তুগালের বিপক্ষে আরেকটি বড় জয়।
মাহফুদ বলেন, ‘প্রথম দিন থেকেই উত্তেজনায় রোমাঞ্চিত আমি। আমার একটাই ইচ্ছা ছিল… টুর্নামেন্টে সম্মানজনক পারফরম্যান্স করা। কিন্তু এখন আমাদের চোখ শিরোপার দিকে স্থির।
‘আমার অনেক বন্ধু রাবাত থেকে ফোন করে আমার কাছে টিকেট চাইছে। তারা দোহায় আসতে চাইছে।
‘মরক্কো জাদুর মতো কিছু করার পথে রয়েছে।’
পর্তুগালের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের আগে মরক্কোর সরকারি এয়ারলাইন্সের সাতটি ফ্লাইট ভরে কাতার আসেন অনেক সমর্থক।