সাত বছর আগে সবশেষ বাংলাদেশে ওয়ানডে সিরিজ খেলতে এসেছিল ভারত। সেই সিরিজে ভারতের বিপক্ষে ঘরের মাঠে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ।
২০২২ সালে এসে সেই শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামেই সেই পুরোনো স্মৃতি ফিরিয়ে আনল টাইগাররা। ডেথ ওভারে মুস্তাফিজের চেপে ধরা বোলিংয়ে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে স্বাগতিকরা জিতে নিল ৫ রানে। আর তাতেই ২-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করেছে টাইগাররা।
বাংলাদেশের দেয়া ২৭২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শেষ বলের রোমাঞ্চে ৫ রানের এক শ্বাসরুদ্ধকর জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আর তাতেই এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত হলো স্বাগতিকদের।
রান তাড়া করতে নেমে ইনিংসের শুরুতে ভারতকে ধাক্কা দেন এবাদত হোসেন। রোহিত শর্মার চোটের কারণে ওপেন করতে নামা ভিরাট কোহলিকে দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে ফেরান বোল্ড করে। কোহলির ব্যাট থেকে আসে ৫।
পরের ওভারে ৮ রান করা শিখর ধাওয়ানকে আউট করেন মুস্তাফিজুর রহমান। দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে উইকেটে সময় কাটানোর চেষ্টা করেন ওয়াশিংটন সুন্দার ও শ্রেয়াস আইয়ার।
তাদের বেশিক্ষণ টিকতে দেননি সাকিব আল হাসান। নিজের স্পেলের প্রথম ওভারে ১১ রান করা সুন্দারকে লিটন দাসের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান তিনি।
বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আগেই মিরাজের শিকার বনে ১৪ করেই মাঠ ছাড়তে হয় লোকেশ রাহুলকে। আর তাতেই ৬৫ রানে চার টপ অর্ডারকে হারিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় সফরকারীরা।
ব্যাকফুটে চলে যাওয়া ভারত দ্রুতই ম্যাচে ফেরে শ্রেয়াস আইয়ার ও আক্সার প্যাটেলের ১০৭ রানের জুটিতে ভর করে। এই দুই ব্যাটারের হাল ধরা ব্যাটিংয়ে জয়ের স্বপ্ন ফের জাগিয়ে তোলে ভারত।
দলীয় ১৭২ রানে আইয়ারকে সাজঘরে ফিরিয়ে টাইগার শিবিরে প্রাণ ফিরিয়ে আনেন মিরাজ। মাঠ ছাড়ার আগে ভারতীয় এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে আসে ৮২ রান।
সঙ্গী প্যাটেলকেও ৫৬ রানে থামিয়ে দেন এবাদত। আর তাতেই হাত ফসকে বেড়িয়ে যাওয়া ম্যাচ ফের চলে আসতে থাকে বাংলাদেশের কোর্টে।
সপ্তম উইকেটের পতনের পর মাঠে নামেন রোহিত শর্মা। আর ভারত দলপতির ব্যাটেই জয়ের স্বপ্ন শেষ হতে থাকে বাংলাদেশের। পুরো চাপ নিজের উপর নিয়ে তাণ্ডব চালাতে থাকেন টাইগার বোলারদের ওপর।
১৯ তম ওভারে এবাদত হোসেন ও এনামুল হক বিজয়ের হাতে দুইবার জীবন পান। যেই বলে জীবন পান, পরেই বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে কমিয়ে আনেন বাংলাদেশের জয়ের আশা।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ছিল ২০ রান। মুস্তাফিজের সেই ওভারের প্রথম বল রোহিত শর্মা ডট দিলেও পরের দুই বলে টানা দুটি চার মারেন।
ওভারের চতুর্থ বলটি মিসের সুবাদে তখন প্রয়োজন গিয়ে দাঁড়ায় ২ বলে ১২ রানের। পরের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে জয়ের দিকে এক পা দিয়ে রাখার ইঙ্গিত দেন রোহিত। এক বলে তখন দরকার ৬ রানের।
আর এখানেই জয়টা হয় বাংলাদেশের। শেষ বলটি ইয়র্কার করেন ফিজ। সেটিতে কোন রান নিতে না পারায় শেষ বলের রোমাঞ্চে বাংলাদেশ পায় ৫ রানের অবিস্মরণীয় এক জয়।