ফিফা বিশ্বকাপের শেষ আটে শেষ দল হিসেবে যোগ দিয়েছে পর্তুগাল। সুইজারল্যান্ডকে ৬-১ গোলে হারিয়েছে তারা। পর্তুগালের পক্ষে হ্যাটট্রিক করেছেন গনসালো রামোস। একটি করে গোল এসেছে পেপে, রাফায়েল গুয়েরেরো ও রাফায়েল লিয়াওয়ের কাছ থেকে। সুইজারল্যান্ডের হয়ে একটি গোল শোধ করেন মানুয়েল আকাঞ্জি।
ম্যাচের প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল পর্তুগাল। দ্বিতীয়ার্ধে তারা স্কোর করে আরও চার গোল।
কাতারের লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দলের অধিনায়ক ও সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় ক্রিস্টিয়ানো রোনালডোকে ছাড়াই একাদশ সাজান পর্তুগালের কোচ ফার্নান্দো সান্তোস। ধীরগতি ও একমাত্রিক খেলার পাশাপাশি কোচের সঙ্গে বিবাদে জায়গা হারান আন্তর্জাতিক ফুটবল রেকর্ড গোল করা রোনালডো।
ম্যাচে অবশ্য রোনালডোর অভাব টের পেতে দেননি জোয়াও ফেলিশ, বার্নার্ডো সিলভারা। রোনালডোকে ফাইনাল থার্ডের বলের জোগান দিতে হবে, এই দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেয়ে অনেকটা সৃষ্টিশীল হয়ে ওঠে পর্তুগালের মাঝমাঠ।
এমনই এক গোছানো আক্রমণ থেকে বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান ফেলিশ। তার ক্রসে বক্সে বল রিসিভ করেন রামোস। চমৎকার বডি ডজে মার্কারকে কাটিয়ে শট নিয়ে পরাস্ত করেন সুইজারল্যান্ডের গোলকিপার ইয়ান সমারকে।
শুধু সৃষ্টিশীলতাতেই নয় ডেড বলেও এগিয়ে ছিল পর্তুগাল। তেমনই এক পরিস্থিতিতে ব্যবধান দ্বিগুণ করে তারা।
৩৩ মিনিটে ফার্নান্দেসের নেয়া কর্নার কিকে মাথা ছুঁইয়ে আবারও সমারকে ফাঁকি দেন পেপে। ৩৯ বছর ২৮৩ দিন বয়সে গোল করে বিশ্বকাপ নকআউটে সবচেয়ে বয়সী গোলস্কোরার বনে যান অভিজ্ঞ এ ডিফেন্ডার।
সুইজারল্যান্ড ম্যাচে ফেরার সুযোগ পেয়েছিল ফ্রি-কিক থেকে। ৩০ গজ দূর থেকে নেয়া জারদান শাকিরির কিক অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে চলে গেলে নির্ভার থাকে পর্তুগাল।
সুইসরা গোলের দেখা না পাওয়ায় ২-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় পর্তুগাল।
দ্বিতীয়ার্ধে আরও ধারাল হয়ে ওঠে তারা। ধীরগতির সুইস মিডফিল্ডকে কোনো জায়গা না দিয়ে একের পর এক আক্রমণো রচনা করেন ব্রুনো ফার্নান্দেস-বার্নার্ডো সিলভারা। আর এর সুফল পান রামোস।
৫১ মিনিটে দিয়োগো দালোতের ক্রস পেয়ে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন রামোস। আর ম্যাচকে সুইজারল্যান্ডের ধরাছোঁইয়ার বাইরে নিয়ে যান রাফায়েল গুয়েরেরো। তার গোলেই পর্তুগালের পক্ষে স্কোর দাঁড়ায় ৪-০।
এর ৩ মিনিট পর হঠাৎই মানুয়েল আকাঞ্জির গোলে লড়াইয়ে ফেরার আভাস দেয় সুইজারল্যান্ড। ম্যাচে তখনও বাকি ৩০ মিনিটেরও বেশি সময়।তবে, আশায় পানি ঢেলে দেন রামোস। ৬৭ মিনিটে পূর্ণ করেন নিজের হ্যাটট্রিক। এবারও তার বলের জোগানদাতা ছিলেন ফেলিশ।
The boy with the world at his feet 🌏 #FIFAWorldCup | #Qatar2022 pic.twitter.com/MGacSyoi5Y
— FIFA World Cup (@FIFAWorldCup) December 6, 2022ওই গোলে নিশ্চিত হয়ে যায় সুইজারল্যান্ডের বড় হার। আর রামোস ২০২২ বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিক করা ফুটবলার হিসেবে নিজের নাম ওঠান রেকর্ডবইয়ে।
৫ গোল খেয়ে হাল ছেড়ে দেয়া সুইজারল্যান্ডকে শেষ ধাক্কা দেন রাফায়েল লিয়াও। ৯২ মিনিটে তার করা গোলেই সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড নিয়ে মাঠ ছাড়ে পর্তুগাল।
রেকর্ড জয়ের উৎসব করার জন্য পর্তুগাল হাতে পাচ্ছে দুই দিন সময়। কারণ শনিবার সেমিতে ওঠার লড়াইয়ে তাদের নামতে হবে স্পেনকে বিদায় করে দেয়া মরক্কোর বিপক্ষে।