সবশেষ নেপালের মহেন্দ্র বাহাদুর চাঁদকে হারিয়ে আন্তর্জাতিক বাউটে জয় পেয়েছিলেন বাংলাদেশের বক্সার সুর কৃষ্ণ চাকমা। সেই ধারাবাহিকতায় ডাক পেয়েছিলেন বার্মিংহামে বাংলাদেশের হয়ে কমনওয়েলথ গেমসে।
আগের রাতে পতাকা বহন করা এ বক্সারের রিংয়ের লড়াইয়ে নামার কথা ছিল ফিজির এরিয়া রকবুলির সঙ্গে। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে রিংয়ে দাঁড়াতেই পারলেন না সুর কৃষ্ণ চাকমা। ছিটকে গেলেন মেডিক্যাল টেস্ট করতে গিয়ে। এর আগে ২০১৪ সালের গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমসের প্রথম রাউন্ডে বাদ পড়েছিলেন এ বক্সার।
গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পতাকা বহন করার কথা ছিল ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্তের। বাংলাদেশ থেকে এমন প্রস্তুতি নিয়েই যুক্তরাজ্য যান মাবিয়া। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মার্চপাস্টে দেশের পতাকা একজন নয়, বহন করতে হবে দু’জনকে। যে কারণে বক্সার সুর কৃষ্ণ চাকমাকে সুযোগ দেয় বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ)।
বার্মিংহামের মাস্টনগ্রিনে ন্যাশনাল এক্সিভিশেন সেন্টারের চার নম্বর হলে লড়াইয়ে নামার কথা সুর কৃষ্ণের। দুই দিন সেখানে অনুশীলন করে রিংয়ে নামার প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন সুর কৃষ্ণ। ফিজির প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয়ের আশাও করছিলেন তিনি। মেডিক্যাল টেস্টে দেখা গেছে তার রক্তচাপ বেশি। ফলে গেমস কর্তৃপক্ষ তাকে আনফিট ঘোষণা করে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশে দলের চিকিৎসক শফিকুর রহমান বলেন, ‘আসলে এটা ওর দুর্ভাগ্য। ইভেন্টের দিন সকালে রুটিন মেডিক্যাল চেক-আপে ওর উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়ে। এরপর ১৫-২০ মিনিট বিশ্রাম দিয়ে ফের পরীক্ষা করলেও প্রেসার বেশি আসে বলে ওকে খেলতে অনুমতি দেয়নি কর্তৃপক্ষ।
‘এর এক ঘণ্টা পর থেকেই ওর প্রেসার কমতে শুরু করে এবং স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়। তবে গেমসের নিয়ম অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময়ের আগে মেডিক্যাল টেস্ট উত্তীর্ণ হতে হয়। সেটা তিনি করতে পারেননি।’
আক্ষেপ নিয়ে সুর কৃষ্ণ বলেন, 'ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে মেডিক্যাল টেস্ট যখন দেই, তখন কোনো সমস্যা হয়নি। অথচ প্রেশার মেপে ডাক্তাররা বেশি পায়। দ্বিতীয়বারের পরীক্ষাতেও বেশি আসলে আমাকে খেলার অনুমতি দেয়নি। এর কিছুক্ষণ পরেই আমার প্রেশার স্বাভাবিক হয়ে যায়।’
এটাকে দুর্ভাগ্য হিসেবে আখ্যা দিয়ে দেশের একমাত্র প্রফেশনাল বক্সিংয়ে শিরোপা জেতা এই বক্সার বলেন, ‘কোনো নার্ভাসনেস কাজ করেনি আমার মধ্যে। গতরাতে ভালো ঘুম না হওয়ার কারণেই হয়তো এমনটা হয়েছে।’
এদিকে জিমন্যাস্টিকসে আশার আলো দেখিয়েছেন আলী কাদের হক। নিউজিল্যান্ড প্রবাসী এই জিমন্যাস্ট বাছাই পর্বে নিজের বিভাগে ১৩.৭ স্কোর তুলেছেন। সর্বোচ্চ যেখানে ১৪। মূল পর্বে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তার।
অপর দুই প্রতিযোগী সাইদ আহমেদ রাফি ও শিশির আহমেদ প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি।
সাঁতারের পুল থেকে অবশ্য আসেনি ভালো খবর। স্যান্ডওয়েলের অ্যাকুয়াটিক সেন্টারে ৫০ মিটার বাটারফ্লাই ইভেন্টে চার নম্বর হিটে বাংলাদেশের সাঁতারু মাহমুদুন নবী নাহিদ আটজনের মধ্যে হয়েছেন অষ্টম।
হিটেই বাদ পড়া বাংলাদেশের এ সাঁতারু ১০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে পুলে নামবেন ১ আগস্ট। মেয়েদের ৫০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে দুই নম্বর হিটে নামা মরিয়ম আক্তার নিজের হিটে সাত জনের মধ্যে পঞ্চম হয়েছেন।