স্তাদে দ্য ফ্রান্সে প্রতিশোধ নেয়া হলো না লিভারপুলের। চার বছর আগে ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে হারের বদলা নিতে পারেনি ইংলিশ জায়ান্টরা। ইউরোপ সেরা দুই ক্লাবের লড়াইয়ে তাদের বাজিমাত করে শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
ফাইনাল ১-০ গোলে জিতে নিজেদের ১৪তম শিরোপা জয় করে রিয়াল। দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেয় রিয়ালের ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিয়াস জুনিয়রের গোল।
শনিবার রাতে ম্যাচ শুরুর আগে দর্শকদের সঙ্গে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর গণ্ডগোলের কারণে কিক-অফ পিছিয়ে দেয়া হয়। দুই দলের সমর্থকরা ফাইনাল দেখার জন্য প্যারিসে পৌঁছালেও অনেকে বিনা টিকিটে মাঠে প্রবেশের চেষ্টা করেন। ফলে তাদের সামলাতে কিছুটা বেগ পেতে হয় পুলিশকে।রাত ১টার বদলে দেড়টায় শুরু হয় ফাইনাল। ম্যাচ শুরুর আগে কিউবান পপস্টার কামিলা কাবেও স্টেডিয়াম মাতান তার পরিবেশনা দিয়ে।
তবে শুরুর আগের উত্তেজনার ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি ম্যাচ শুরুর পর। শুরু থেকেই রক্ষণাত্মক খেলতে থাকে রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচের প্রথম ৩০ মিনিট কোনো আক্রমণ করেনি তারা। লিভারপুল বার দুয়েক চড়াও হলেও রিয়াল গোলকিপার থিবো কোঁতোয়ার প্রচেষ্টায় গোলের দেখা পায়নি। মোহামেদ সালাহ ও সাদিও মানেকে বঞ্চিত রাখেন এ বেলজিয়ান শটস্টপার।
ম্যাড়ম্যাড়ে প্রথমার্ধের একমাত্র উত্তেজনা ছিল বিরতির ঠিক আগে কারিম বেনজেমার গোল বাতিল হওয়া। ৪৩ মিনিটে এ ফরাসি তারকা বল জালে জড়ালেও ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্টের সাহায্য নিয়ে রেফারি অফসাইডের কারণে গোল বাতিল করেন। দুই দলের প্রথমার্ধ শেষ হয় গোল ছাড়াই।
বিরতির পর স্টেডিয়ামে উপস্থিত হাজার পঞ্চাশেক দর্শককে উত্তেজনার স্বাদ দেন ভিনিসিয়াস। এ ব্রাজিলিয়ানের গোলে ৫৯ মিনিট লিড নেয় রিয়াল মাদ্রিদ।
শেষ ৩০ মিনিট তেমন কোনো নাটকীয়তা ছিল না। বারবার আক্রমণ করেও রিয়ালের রক্ষণে ফাটল ধরাতে পারেনি ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যরা।সব আক্রমণ মোটামুটি একা হাতে রুখে দিয়েছেন কোঁতোয়া। বিশেষ করে ৬৪ ও ৮২ মিনিটে সালাহর শট রুখে দিয়ে প্রমাণ করেন কেন তিনি এই মুহূর্তে ইউরোপের সেরা গোলকিপার।
শেষ পর্যন্ত ওই এক গোলে ম্যাচ জিতে টুর্নামেন্ট জিতে নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। ক্রিস্টিয়ানো রোনালডো বিদায় নেয়ার পর এটাই তাদের প্রথম শিরোপা। আর সব মিলিয়ে ১৪তম। সবার চেয়ে বেশি শিরোপা রিয়ালেরই।
অন্যদিকে ফাইনাল হারায় এক মৌসুমে তিন শিরোপা জেতা হলো না লিভারপুলের। গত সপ্তাহে পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটির কাছে লিগ শিরোপা খোয়ানো লিভারপুলকে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে লিগ কাপ ও এফএ কাপের জোড়া শিরোপা জিতেই।
আর কার্লো আনচেলত্তির রিয়াল মাদ্রিদ স্প্যানিশ লা লিগা শিরোপা জয়ের পাশাপাশি জিতল ইউরোপ সেরার ট্রফিও। রিয়ালের হয়ে এটি আনচেলত্তির দ্বিতীয় চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়। এর আগে ২০১৪ সালে ট্রফি জিতেছিলেন এ ইতালিয়ান ট্যাকটিশিয়ান।
এতে করে রিয়াল তাদের পুরোনো সৈনিক ও ক্লাব অধিনায়ক মার্সেলোকে বিদায় জানাল শিরোপা দিয়ে। আর টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়া বেনজেমা লিভারপুলের সাদিও মানের সঙ্গে এগিয়ে গেলেন ব্যালন ডর জয়ের লড়াইয়ে।