ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে ম্যানচেস্টার সিটি ও লিভারপুল। আতলেতিকো মাদ্রিদের মাঠে গোলশূন্য ড্র করেছে সিটি আর নিজ মাঠে বেনফিকার সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র করেছে লিভারপুল।
আতলেতিকোর বিপক্ষে প্রথম লেগ ১-০ গোলে জেতায় দুই লেগ মিলিয়ে অ্যাগ্রিগেটে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে শেষ চারে পৌঁছেছে সিটি। আর বেনফিকার মাঠে ৩-১ গোলের জয় পাওয়ায় দুই ম্যাচ শেষে লিভারপুলের পক্ষে অ্যাগ্রিগেট দাঁড়িয়েছে ৬-৪।
বুধবার রাতের হেভিওয়েট ম্যাচ ছিল স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়ন আতলেতিকো মাদ্রিদ ও ইংলিশ চ্যাম্পিয়নস ম্যানচেস্টার সিটির মধ্যে। আতলেতিকোর মাঠ ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে নামার আগে স্বাগতিক কোচ দিয়েগো সিমিওনি বলেছিলেন, তার ছেলেরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।
ম্যাচ শুরু হওয়ার পর দেখা গেল আক্ষরিক অর্থেই যুদ্ধ। আতলেতিকোর খেলোয়াড়রা পুরো ম্যাচে রাফ ট্যাকল, ফাউল ও কড়া মার্কিং করে সিটির খেলোয়াড়দের। অবস্থা এতটাই বিপজ্জনক হয়ে পড়ে যে দ্বিতীয়ার্ধে আঘাত পাওয়ায় দুই মূল তারকা কেভিন ডি ব্রুইনা ও কাইল ওয়াকারকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নেন সিটির ম্যানেজার পেপ গার্দিওলা।
গোলশূন্য ম্যাচে গোলমুখের চেয়ে খেলোয়াড়দের মধ্যে উত্তেজনা বেশি ছিল। শেষ মুহূর্তে ফিল ফোডেনকে ফাউল করে লাল কার্ড পান ফেলিপে অগুস্তো। ৯২ মিনিটের এই লাল কার্ড নিয়ে শুরু হয় খেলোয়াড়দের হাতাহাতি।
আতলেতিকোর ডিফেন্ডার স্টেফান স্যাভিচ ধাক্কা দিয়ে ফোডেনকে সাইডলাইনের বাইরে নিয়ে যান। আর বেঞ্চে থাকা সিটি মিডফিল্ডার জ্যাক গ্রিলিশের চুল ধরে টান দেন। এই দুজন ম্যাচ শেষে টানেলেও হাতাহাতির চেষ্টা করেন। সে সময় দুই ক্লাবের স্টাফরা তাদের আলাদা করেন।
খেলার পর দুই দলের খেলোয়াড়দের আচরণ নিয়ে মন্তব্য করেননি ম্যানচেস্টার সিটির ম্যানেজার পেপ গার্দিওলা। অন্যদিকে আতলেতিকো মাদ্রিদের কোচ দিয়েগো সিমিওনি বলেন, তিনি মারামারি দেখেননি।
ম্যাচ শেষে ফুটবল চ্যানেল বিটি স্পোর্টকে তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনাটা দেখিনি। আমি মাঠে ছিলাম ও দর্শকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছিলাম। আমি যখন ভেতরে গেছি তখন কেউ ওখানে ছিল না।’
গার্দিওলা মন্তব্য না করলেও সিটির ডিফেন্ডার জন স্টোনস জানান, তারা জানতেন এতটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।
তিনি বলেন, ‘জানতাম এখানে খেলা এতটা সহজ হবে না। এখানে বেশ বিপজ্জনক পরিবেশ। সব মিলিয়ে কঠিন একটা সন্ধ্যা ছিল। দুই লেগ মিলিয়ে আমরা যেভাবে ডিফেন্ড করেছি ও নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করেছি, সেটা অবিশ্বাস্য।’
বেনফিকার বিপক্ষে গোল করছেন রবার্তো ফিরমিনো। ছবি: এএফপি
রাতের আরেক ম্যাচে ছিল গোলের ছড়াছড়ি। ইব্রাহিম কোনাটের ২১ মিনিটের গোল লিড নিয়ে নেয় লিভারপুল। ৩২ মিনিটে গনসালো রামোসের গোলে ম্যাচে ফেরে বেনফিকা। বিরতির পর আরও চার গোল হয় ম্যাচে।
রবার্তো ফিরমিনো ৫৫ ও ৭৫ মিনিটে গোল করে ম্যাচ বেনফিকার হাত থেকে বের করে নিয়ে যান। শেষ ২৫ মিনিটে চার গোল দরকার ছিল পর্তুগিজ ক্লাবটির।
৭৩ মিনিটে রোমান ইয়েরেমচুক ও ৮১ মিনিটে ডারউইন নুনিয়েসের গোলে ব্যবধান কমায় তারা। ৩-৩ গোলে ড্র হয় ম্যাচ।
চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হচ্ছে ম্যানচেস্টার সিটি। আর লিভারপুল খেলবে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে।