পরপর দুই টেস্টে মাত্র দুই ঘন্টায় প্রতিপক্ষকে অলআউট করে দিয়েছে স্পিনাররা। বাংলাদেশের বিপক্ষে কেশাভ মহারাজ ও সায়মন হারমারের স্পিন পালটে দিয়েছেন অনেক হিসাব। বিশেষ করে সাউথ আফ্রিকার প্রচলিত পেইস বান্ধব কন্ডিশনে স্পিন খেলে শৈশব, কৈশোর কাটানো টাইগার ব্যটারদের এ দুই স্পিনারের সামনে আত্মসমর্পণে হতাশ ক্রিকেট ভক্ত ও বিশেষজ্ঞরা।
সাউথ আফ্রিকায় এতদিন পেইস আক্রমণে কোণঠাসা হয়েছে বাংলাদেশ। এবারও সে আতঙ্কে তামিম-মুমিনুলদের মূল প্রস্তুতি ছিল পেইস সামলানোকে ঘিরে। তাদের পেইসারদের নিয়ে অতটা চিন্তায় ছিল না সফরকারী দল।
আর এ কারণেই ডারবান ও পোর্ট এলিজাবেথে মহারাজ ও হারমারের সামনে দল অসহায় আত্মসমর্পণ করায় হতাশ হয়েছেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ ইস্যুতে মন খারাপের সুর তার কণ্ঠে।
সুজনের বলেন, ‘ভালো করতে পারিনি, আমি জানিনা কেন। নিউজিল্যান্ডে তো একটা কারণ ছিল, পেইস বোলারদের বিপক্ষে সিমিং উইকেটে খেলা কঠিন। এখানে স্পিন কেন সামলাতে পারলাম না এটাই আমাদের জন্য বেশি দুঃখ। যেখানে স্পিনে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলি।’
বাংলাদেশ স্পিনে কতটা ভালো তা বোঝাতে অধিনায়ক মুমিনুল হকের একটি মন্তব্য যথেষ্ট। ডারবান টেস্টের পর তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন বিদেশের মাটিতে স্পিনারদের উইকেট দেওয়া অপরাধের সামিল।
মুমিনুল বলেন, ‘আমার মনে হয় বিদেশে এসে স্পিনারদের উইকেট দেওয়া বিরাট বড় অপরাধ। বিদেশে এসে আপনি স্পিনারদের উইকেট দিতে পারবেন না। অবশ্যই এটা ব্যাটিং ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই না।’
তবে মুমিনুলের কথা পাল্টে গেছে পরের টেস্টে। ঘুরে গেছেন পুরো ৩৬০ ডিগ্রি।
সোমবার শেষ হওয়া পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টেও মহারাজ-হারমারে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক বলেন তারা স্পিনে অতটা ভালো না।
মুমিনুল বলেন, ‘শুনতে হয়তো ভালো লাগবে না, তবে সত্য হচ্ছে যে, আমরা স্পিনের বিপক্ষে অতো ভালো খেলোয়াড় নই। দু-একজন হয়তো স্পিন ভালো খেলেন। তবে অধিকাংশ ক্রিকেটারই স্পিন সামলাতে পারেন না।’
যদি মুমিনুলের কথা সত্য হয় তবে এবারের সাউথ আফ্রিকা সফরে বড় এক ভুলই ভাঙলো। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ অন্তত স্পিনে পরাস্ত হওয়ার মতো দল নয়, এমন ভাবনার আর অবকাশ নেই।
দুই টেস্টে বাংলাদেশের হারান ৪০ উইকেটের ২৯টি নিয়েছেন কেশাভ মহারাজ ও সায়মন হারমার। বাঁহাতি কেশবের ঝুলিতে ১৬ ও ডানহাতি অফ স্পিনার হারমারের ১৩টি।
প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ৫৩ রানে। মহারাজ ও হারমার সময় নেন মাত্র ১ ঘন্টা। ওভার লেগেছে ১৯ টি।
দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে সময় লেগেছে প্রায় একই। ২৩.৩ ওভারে ৮০ রানে অলআউট টাইগাররা। এই দুই ইনিংসে মহারাজের ৭টি করে উইকেট, বাকি ৩টি হারমারের।