বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিলেটে জিতেছেন আসলে দর্শকরা

  •    
  • ২৯ মার্চ, ২০২২ ২৩:০০

বিকেল ৪টার মধ্যেই স্টেডিয়াম এলাকায় দর্শকের ভিড় জমে যায়। টিকিট কিনে লাইন ধরে মাঠে প্রবেশ করেন তারা। খেলা শুরুর আগেই ২২ হাজার ধারণ ক্ষমতার সিলেট স্টেডিয়ামের বেশির ভাগ আসন পূর্ণ হয়ে যায়।

সিলেটে খেলা হলেই গ্যালারি ভরা থাকে দর্শকে। ক্রিকেটে তো বটেই, ‘জনপ্রিয়তা হারানো’ ফুটবলেও গ্যালারি থাকে পূর্ণ। সিলেটের ক্রীড়া সংগঠকরা গর্ব করে তা বলেও থাকেন। সিলেটের মাঠে আন্তর্জাতিক ম্যাচ নিয়ে আসতে তাদের দেনদরবারেরও অন্যতম শক্তি এই দর্শকরা।

তবে এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে সিলেটের মাঠে খেলা নেই। মাঝখানে প্রিমিয়ার লিগের কিছু খেলা হলেও করোনার কারণেই দর্শকদের মাঠে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। দীর্ঘ বিরতির পর সিলেটে যখন আবার ফিরেছে আন্তর্জাতিক ফুটবল, তখন দলের নাম মঙ্গোলিয়া।

চেঙ্গিস খানের কারণে মঙ্গোলিয়ার নাম বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারে বটে, কিন্তু তাদের ফুটবল সম্পর্কে এখানকার দর্শকদের জানাশোনা সামান্যই। আর এই দলের খেলা নিয়ে আগ্রহ আরও কম।

অতি সম্প্রতি মালদ্বীপের কাছে হেরে এসেছে বাংলাদেশ। স্বভাবতই হতাশ সিলেটের ফুটবলামোদী দর্শকরা। ফলে মঙ্গলবার সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ বনাম মঙ্গোলিয়ার ম্যাচে দর্শক হবে কি না এ নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন আয়োজকরা।

তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে দিলেন সিলেটের দর্শকরা। খেলা শুরু হবে সাড়ে ৫টায়। বিকেল ৪টায়ই স্টেডিয়াম এলাকায় গিয়ে দেখা যায় দর্শকের ভিড়। একশ টাকা দিয়ে টিকিট কিনে লাইন ধরে মাঠে প্রবেশ করেন তারা। খেলা শুরুর আগেই ২২ হাজার ধারণ ক্ষমতার সিলেট স্টেডিয়ামের বেশিরভাগ আসন পূর্ণ হয়ে যায়।

খেলা দেখতে আসা নগরের সুবিদবাজারের কলেজ ছাত্র সজিব আহমদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর মাঠে বসে খেলা দেখতে পারছি। এতদিন তো করোনার কারণে মাঠে আসতে পারিনি।’

মাঠে বসে খেলা দেখতে পেরে খুশি জানিয়ে সজিব বলেন, ‘আমরা চাই সিলেটের মাঠে আরও বেশি বেশি খেলা হোক।’

নাতিকে নিয়ে খেলা দেখতে মাঠে এসেছিলেন শিবগঞ্জ এলাকার প্রবীণ আখলাকুর রহমান। শৈশবের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘আমি ফুটবলের জন্য পাগল ছিলাম। দূর-দূরান্তে গিয়ে খেলা দেখতাম। তখন দেশে ফুটবলও জমজমাট ছিল। অনেক ভালো ভালো খেলোয়াড় ছিল।’

ফুটবলের এই সোনালী দিন হারিয়ে যাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘গ্রাম-গঞ্জে ফুটবল এখনও সবচেয়ে জনপ্রিয়। বিশ্বকাপ এলে বোঝা যায় এ দেশের মানুষ ফুটবলকে কতটা ভালোবাসে।’

এই ভালোবাসাকে কাজে লাগিয়ে দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ তার।

গোল না পেলেও বাংলাদেশের আজকের খেলায় মুগ্ধ তরিকুল ইসলাম। সিলেট মদন মোহন কলেজের এই ছাত্র বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে খেলা দেখতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ টিম আজ ভালো খেলেছে। কেবল গোলটাই পায় নাই। কিন্তু বল বেশিরভাগ সময় আমাদের পায়েই ছিল। একটা ভালো স্ট্রাইকার থাকলে আজ কয়েকটা গোল হতো।’

গোল এবং জয় না পাওয়ার আফসোস আছে। তবু মাঠে বসে খেলা দেখতে পেরে মুগ্ধ সিলেটের দর্শকরা। মুগ্ধ বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে।

খেলায়াড়রাও মুগ্ধ সিলেটের দর্শকদের স্পোটিং মনোভাবে। তাই খেলা শেষে বাংলাদেশ ও মঙ্গোলিয়া দলের খেলোয়াড়রা পুরো মাঠ ঘুরে দর্শকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন। দর্শকরাও দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে অভিনন্দিত করলেন খেলোয়াড়দের। এই দৃশ্য দেখে কে বলবে একটু আগেই সর্বাত্মকভাবে এই দলটির পরাজয় চাইছিলেন দর্শকরা!

ফলে মাঠের লড়াইয়ে কেউ জিততে না পারলেও জিতেছেন আসলে সিলেটের দর্শকরা। জয় হয়েছে ফুটবলের আর সিলেটের মানুষের ফুটবল প্রেমের।

এ বিভাগের আরো খবর