প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পুরোদমে চলছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের আধুনিকায়নের কাজ। বছর শেষ হওয়ার আগে ইউরোপের স্টেডিয়ামের মতো রূপ নেবে দেশের জাতীয় এই স্টেডিয়াম।সব মিলিয়ে সাতটি ধাপে চলবে স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ। মার্চের মধ্যে ফুটবল পিচ তৈরির লক্ষ্য নিয়ে চলছে সংস্কার কার্যক্রম। একই সময়ের মধ্যে বসানো হবে আধুনিক অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি অ্যাথলেটিক ট্র্যাক স্থাপনের জন্য লাগবে ৩০ কোটি টাকার মতো। ২০ থেকে ২২ কোটি টাকা লাগবে গ্যালারিতে শেড বসাতে। চেয়ার বসাতে লাগবে ১৮ থেকে ২০ কোটি টাকা। ফ্লাডলাইট পরিবর্তন করতে লাগবে ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা। আনুষঙ্গিক খরচ আছে আরও ১০ কোটি টাকা।
আধুনিকায়নে কী কী পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম?
গ্যালারি ও ভিআইপির চেয়ার সরিয়ে সেখানে বসানো হবে উন্নতমানের নতুন চেয়ার। এর মধ্যে ভিআইপি গ্যালারিতে বসানো হবে ফোল্ডিং চেয়ার। বদলে ফেলা হবে স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট। তবে ফ্লাডলাইটের টাওয়ার অপরিবর্তিত রেখে শুধু বদলে ফেলা হবে বাতি। এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো স্টেডিয়ামে আলো ছড়াবে এলইডি বাতি। এর মাধ্যমে মাঠের ভেতরে আলো ও সৌন্দর্য দুটিই বাড়ছে।
তবে, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটা ফুটবল পিচ নিয়ে। সামান্য বৃষ্টিতে মাঠ খেলার অযোগ্য হয়ে পড়ে। তাই পিচে দেয়া হচ্ছে বিশেষ গুরুত্ব। সে জন্য বিদেশের ফরমুলা অনুযায়ী উপড়ে ফেলা হয়েছে ১৪ ইঞ্চি মাটি পর্যন্ত। ইট-খোয়া অন্যান্য সরঞ্জাম দিয়ে ভরাট করে চলছে আধুনিকায়নের চেষ্টা।
মাঠের পিচ নিয়ে গুরুত্বের কথা বলছেন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের প্রশাসক মোবারক করিম লিটন। তিনি বলেন, ‘মাঠে পানি জমবে না এমনভাবেই করা হচ্ছে। যেভাবে করা হচ্ছে সেটা কখনই ছিল না বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে।
‘শুধু ফ্লাডলাইটের টেন্ডার বাকি আছে। বাকি সব কাজ এগিয়ে গেছে। ডিসেম্বরের মধ্যে খেলার উপযোগী করার ভাবনা থেকে সংস্কারকাজ চলছে।’
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের গাইডলাইন মেনে ও আন্তর্জাতিক সূচির বিষয়টি বিবেচনায় এনে সংস্কারকাজ এগোচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
মোবারক করিম লিটন বলেন, ‘এখানে ফুটবল-অ্যাথলেটিকসের বাইরে কোনো ইভেন্ট হওয়ার সুযোগ নাই। এর বাইরে হয়তো ন্যাশনাল প্রোগ্রামগুলো যেগুলো আছে সেগুলো চলবে।’
স্টেডিয়ামটি তৈরি করা হয় ১৯৫৪ সালে। এরপর ১৯৯৮ সালে মহাসংস্কার চলে। তখন প্রথমবার বসানো হয় ইলেকট্রনিক স্কোর বোর্ড। এরপর ২০১১ সালে প্রায় ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্যাপক সংস্কারকাজ হয়েছিল বাংলাদেশে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের জন্য। এই মাঠেই বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটার আয়োজন করে বাংলাদেশ।
তার প্রায় এক দশক পর আবারও শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে স্টেডিয়ামের। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এ স্টেডিয়াম রূপ নেবে বিশ্বমানে।