বৃহস্পতিবারই ঘোষণা দিলেন ছয় মাস দূরে থাকবেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে। আর তার পরদিনই করে বসলেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। তাও আবার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। শুধু সেঞ্চুরিতে থেমে থাকেননি তামিম। সিলেটের বিপক্ষে দলকে এনে দিয়েছেন ৯ উইকেটের দুর্দান্ত এক জয়।
বিপিএলে সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে তামিমের অপরাজিত ১১১ রানের ইনিংসে ভর করে ১৮ বল ও ৯ উইকেট হাতে রেখে নিজেদের দ্বিতীয় জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ঢাকা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে সিলেটকে ব্যাটিংয়ে পাঠান ঢাকা দলপতি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার লেন্ডল সিমন্স ও এনামুল হক বিজয় দলকে গড়ে দেন শক্ত ভীত। গড়েন ৫০ রানের জুটি।
ইনিংসে ষষ্ঠ ওভারে বিজয় ১৮ রানে বিদায় নিলে ভাঙে সেই জুটি। ব্যর্থতার ধারা অব্যাহত রাখেন মোহাম্মদ মিঠুনও। ফেরেন ৬ রানে। পরের ওভারেই রানের খাতা খোলার আগে মাশরাফির শিকার হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন কলিন ইনগ্রাম।
কিন্তু উইকেটের একপ্রান্ত আগলে ধরে রানের চাকা সচল রাখেন সিমন্স। রানের তুবড়ি ছুটিয়ে নাম লেখান চলতি বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে। তার ৬৫ বলে ১১৬ রানের টর্নেডো ইনিংসে ভর করে ৫ উইকেট হারিয়ে ঢাকার সামনে ১৭৫ রানের পুঁজি দাঁড় করায় সিলেট।
ঢাকার হয়ে একটি করে উইকেট নেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, আন্দ্রে রাসেল, এবাদত হোসেন ও কায়েস আহমেদ।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ম্যাচের প্রথম বল থেকেই সিলেটের বোলারদের ওপর আগ্রাসন চালানো শুরু করেন ঢাকার ওপেনার তামিম ইকবাল। চট্টলার সন্তান নিজের ঘরের মাঠে ফিরে আসেন তার স্বরূপে।
২৮ বলে তুলে নেন চলতি আসরের ব্যক্তিগত তৃতীয় অর্ধশতক। হাফ সেঞ্চুরি করে প্রতিপক্ষের বোলারদের প্রতি যেন আক্রোশটা বেড়ে যায় তামিমের। লাগাম ছাড়া ব্যাট ছোটান সেঞ্চুরির দিকে।
৬১ বল খেলে পৌঁছে যান প্রতীক্ষিত ল্যান্ড মার্কে। তুলে নেন চলতি আসরের প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সেঞ্চুরি। এর মধ্য দিয়ে ঘটলো ১০৮৫ দিনের অপেক্ষার অবসান।
২০১৯ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ক্রিকেটের শর্টার ফরম্যাটে সবশেষ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন তামিম। প্রায় তিন বছর পর ঘরের মাঠে তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি।
তামিমের এই ঝড়ো সেঞ্চুরিতে ছিল ১৬ টি চার ও ৩টি ছয়ের মার। বিপিএলের আট আসরের এটি ২৩ তম সেঞ্চুরি আর বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের ভেতর ষষ্ঠ।
কম যাননি সঙ্গি আহমেদ শেহজাদও। প্রথম চার ম্যাচে রানের দেখা না পেলেও চট্টগ্রামে এসে ভোল বদলে মারকুটে রূপ নিলেন তিনিও। তামিমের সঙ্গে জুটি গড়ে তুলে নিয়েছেন চলতি বিপিএলে ব্যক্তিগত প্রথম অর্ধশতক।
১৭৬ রান তাড়ায় তামিম ও আহমেদ শেহজাদের জুটি থেকেই আসে ১৭৩ রান। বিপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সেরা প্রথম উইকেট জুটি গড়ে শেহজাদ বিদায় নিলেও বাকি কাজটা সারেন তামিম।
জয়ের জন্য তখন প্রয়োজন ১৯ বলে তিন রান। সেই অবস্থায় চার মেরে ১১১ রানে অপরাজিত থাকার পাশাপাশি দলকে এনে দেন ১৮ বল হাতে রেখেই ৯ উইকেটের দুর্দান্ত এক জয়।
এই জয়ে টেবিলের তলানি থেকে চারে উঠে এল মিনিস্টার ঢাকা। আর সিলেট নেমে গেছে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে।