আগের ম্যাচে মোহামেডান পারেনি। রহমতগঞ্জের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে সাদা-কালো জার্সিরা। দ্বিতীয় সেমিতে কষ্টের জয় পেয়েছে আবাহনী।
ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে বৃহস্পতিবার রাতে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে সাইফ স্পোটিং ক্লাবকে বিদায় করে ফাইনালে উঠে গেল টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ শিরোপাজয়ী আবাহনী ক্রীড়াচক্র।
নির্ধারিত সময় শেষে স্কোর ৩-৩ হলে টাইব্রেকারে গড়ানো ম্যাচ ৪-৩ গোলে জিতে নিয়ে ফাইনালে চলে যায় আবাহনী।
এ জয়ে দুই আসর পর ফাইনালে উঠল আকাশি-নীল জার্সিধারীরা। সবমিলিয়ে সর্বোচ্চ ১৯বার ফাইনাল খেলছে আবাহনী। আর সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিল আগের আসরের রানার্স আপ দল সাইফ।
ম্যাচের শুরু থেকে চলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। শুরুর ৪ মিনিটে নিশ্চিত গোলের সুযোগ হারায় সাইফ। এমফোন সানডের শট গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসে।
তার ঠিক ৪ মিনিট পর পেনাল্টি পায় ঢাকা আবাহনী। রাকিবকে বক্সের ভেতর ফেলে দেন মঞ্জুরুর রহমান। আবাহনীর অধিনায়ক রাফায়েল আগুস্তো স্পট থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন।
ম্যাচেে ১২ মিনিটে আবাহনীকে ব্যবধান বাড়াতে দেননি সাইফের রুয়ান্ডার ডিফেন্ডার এমেরি। রাকিবের শট যখন মনে হচ্ছিল সাইফের জালে জায়গা করে নেবে তখনই গোললাইন সেভ করেন এমেরি।
পিছিয়ে থাকা সাইফ সমতায় ফেরে ম্যাচের ২০ মিনিটে। আসরোর গাফুরোভের শট আবাহনীর গোলকিপার সোহেল ফেরালেও ফিরতে বলে গোল করেন এমফোন উদোহ।
সমতায় থাকা ম্যাচ বিরতির পর আরও নাটকীয় রূপ নেয়।
৭৪ মিনিটে পেনাল্টি থেকে প্রথমবার সাইফকে লিড এনে দেন এমেকা ওগবাহ। তার ১২ মিনিট পরে জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়ার সুযোগ পায় সাইফ। তবে তা গোলে রূপ দেয়া সম্ভব হয়নি ডিয়েগো ক্রুসিয়ানির বাহিনীর।
প্রথম প্রচেষ্টায় গোল করেন এমিরি বায়েসাঙ্গে। তবে ত্রুটি থাকায় দ্বিতীয়বার পেনাল্টি নিতে হয় এমিরিকে। দ্বিতীয় দফায় পেনাল্টিতে এমিরির ত্রুটি খুঁজে পান রেফারি। পেনাল্টি বাতিল করে দিলে স্বস্তি ফিরে আবাহনীর শিবিরে।
ইনজুরি টাইমে যোগ করা তিন মিনিটের মাথায় আবাহনীকে নাটকীয়ভাবে সমতায় ফেরান ড্যানিয়েল কলিনদ্রেস। জুয়েলের বাড়িয়ে দেয়া ক্রস থেকে গোল করেন এ কোস্টারিকান।
নির্ধারিত সময়ে ২-২ স্কোর হওয়ায় ম্যাচ চলে যায় এক্সট্রা টাইমে। শুরুর প্রথম তিন মিনিটেই এবার লিড নিয়ে ফেলে আবাহনী।কলিনদ্রেসের বাড়ানো বল পেয়ে ডি-বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়েন জুয়েল। এগিয়ে দেন সিক্স ইয়ার্ডের সামনে থাকা রয়েলের সামনে। প্রথম প্রচেষ্টা শট নিতে ব্যর্থ হন রয়েল। পায়ে লেগে বল চলে যায় রাকিবের সামনে। আলতো টোকায় বল জালে জড়াতে ভুল করেননি রাকিব। তার গোলে লিডের উল্লাসে মাতে আবাহনী সমর্থকরা।
অতিরিক্ত সময়ের ১৫ তম মিনিটে সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয় সাইফের। ডিফেন্ডার নাসিরের কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সের ভেতর থেকে বুলেট শট নেন এমেকা। দারুণভাবে সেটি ফিস্ট করে বিপদমুক্ত করেন আবাহনীর গোলিকপার সোহেল।
অতিরিক্ত সময়ের নির্ধারিত সময় শেষে ইনজুরি টাইমে নাটক জমিয়ে ফেলে সাইফ। বাম প্রান্ত থেকে এমফোনের লো ক্রসে আলতো টোকায় বল জালে জড়ান বদলি হিসেবে মাঠে নামা সাজ্জাদ হোসেন।
ম্যাচ চলে যায় টাইব্রেকার রোমাঞ্চে। পেনাল্টি মিস করেন সাইফের দুই ফুটবলার এমেকা ও জামাল ভুঁইয়া। আর সবগুলো শট গোলে পরিণত করে ৪-৩ ব্যবধানে জিতে নেয় মারিও লেমসের বাহিনী। দুর্দান্ত দুটি সেভ করেন আবাহনীর গোলকিপার সোহেল।
ফাইনালে আবাহনীর প্রতিপক্ষ রহমতগঞ্জ। দিনের প্রথম সেমিতে মোহামেডানকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে পুরান ঢাকার জায়ান্টরা। ফাইনাল মাঠে গড়াবে ৯ জানুয়ারি।