২০১৫ সাল থেকে ২০২১। এই অর্ধযুগে দেশের ফুটবলকে আটবার শিরোপার স্বাদ দিয়েছে বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক মেয়েরা। এশিয়ার কোনো টুর্নামেন্ট কিংবা দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব নিজেদের করে নিয়েছে খেলার নৈপুন্যে। উজাড় করে দেশবাসীকে উল্লাসের মুহূর্ত এনে দিয়েছে মারিয়া-মনিকারা।
কিন্তু এই সময়কালের আগে বাংলাদেশের মেয়েরা সিনিয়র ও বয়সভিত্তিক পর্যায়ে ভুটান-শ্রীলঙ্কার মতো ভুরি ভুরি গোল খেত বিভিন্ন খেলায়।
সাফল্যের গল্পের শুরুটা ২০১৫ সালে। বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ থেকে এক গুচ্ছ কিশোরী নিয়ে আবাসিক ক্যাম্প শুরু। পরে তাদের নিয়েই পথচলা। এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ টুর্নামেন্টে জর্ডান-সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দলকে হারিয়ে আলোচনায় আসতে শুরু করে বাংলাদেশ। পরে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ চ্যাম্পিয়নশিপে দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলের লড়াইয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ।
পরের বছর সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ে লাইমলাইটে আসে বাংলাদেশের মেয়েরা। পরের বছরে একই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়ে শিরোপা ধরে রাখে বাঘিনীরা।
এখানেই থেমে থাকেনি মারিয়া-মনিকারা। ২০১৭ সালেও শিরোপা ঘরে তুলে তারা। হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয়ে বয়সভিত্তিক পর্যায়ে চার বছর আগে দক্ষিণ এশিয়ার এক পরাশক্তিতে পরিণত হয়।
পরের বছর আরও দুটি বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। হংকংয়ে চার জাতির ফুটবল টুর্নামেন্ট জিতে দেশে ফেরে মেয়েরা। একই বছরে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপেও চ্যাম্পিয়ন।
বয়স বাড়তে থাকে সবার। ধীরে ধীরে সিনিয়র দলে খেলতে শুরু করে মেয়েরা। এর মধ্যে ২০১৯ সালে ঘরের মাঠে বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক গোল্ড কাপে যুগ্মভাবে চ্যাম্পিয়ন হন নারী ফুটবলাররা।
২০২০ সাল ভেস্তে যায় করোনায়। ঘরে বসে থাকা ছাড়া উপায় ছিল না। এএফসি-সাফের বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টগুলো পিছিয়ে নেয়া হয় ২০২১ ও ২০২২ সালে।
ঘরের মাঠে অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ দিয়ে আবারও মাঠে নামে মেয়েরা। আশাহত করেনি এবারও। ভারতকে হারিয়ে বিজয়ের মাসে শিরোপা জয়ের মুহূর্ত উপহার দিয়েছে গোলাম রাব্বানী ছোটনের বাহিনী।
এ গল্প এখানেই শেষ নয়। এই মেয়েরাই জাতীয় দলের পাইপলাইনে থাকছেন। সংশ্লিষ্টদের ধারণা- ঠিকঠাকভাবে পরিচর্যা করলে জাতীয় দলের হয়েও আলো ছড়াবেন মারিয়া-মনিকারা।