স্বাধীনতা কাপের দ্বিতীয় সেমি ফাইনাল ম্যাচে পুলিশের গোলে লিড, পরে ইব্রাহিমের গোলে সমতায় ফেরা কিংসের। এরপর নির্ধারিত সময় শেষে ১-১ ব্যবধান।অতিরিক্ত সময়ে টানটান উত্তেজনা। ম্যাচ শেষ হওয়ার ঠিক এক মিনিট আগে ইয়াসিন আরাফাতের গোলে কিংসের জয়োল্লাস! প্রথমবার ফাইনালে খেলার স্বপ্ন শেষ পুলিশের।
এমন নাটকে ভরা ম্যাচ মঙ্গলবার বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ পুলিশ এফসির বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে জিতে নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে চলে গেল বসুন্ধরা কিংস।
কিংসের দুটি গোলই এসেছে স্থানীয় ফুটবলারের পা থেকে। ব্রাজিলিয়ান দানিলোর গোলে পুলিশের লিড নেয়ার পর ইব্রাহিমের গোলে সমতা, এরপর ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে ইয়াসিন আরাফাতের গোলে জয় নিশ্চিত করে কিংস।
এর আগে শেখ রাসেলকে চমকে দিয়ে সেমি ফাইনাল নিশ্চিত করে পুলিশ এফসি। আর শেখ জামালকে হারিয়ে সেমি নিশ্চিত করে কিংস। আর গ্রুপ পর্বে পুলিশকে ১-০ ব্যবধানে হারায় কিংস।
সেমিতে এসে টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়নদের ঘাম ঝড়িয়েছে পুলিশ। কষ্টের জয় দিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করতে হয় অস্কার ব্রুসনের বাহিনীকে।
রোমানিয়ান কোচ এরিস্টিকা সিওবাওর অধীনে দুর্দান্ত ফুটবল খেলে ম্যাচের শুরুতেই লিড নিয়ে ফেলে পুলিশ। কিংসকে চমকে ম্যাচের ৮ মিনিটে আদিল কুসকুসের ক্রস থেকে দারুণ হেডে দলকে লিড এনে দেন অধিনায়ক দানিলো।
ম্যাচের গতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনে ৩০ মিনিটের মাথায় ইব্রাহিমের গোলে সমতায় ফেরে কিংস।
সমতায় থেকে দ্বিতীয়ার্ধে তুলনামূলক ভালো আক্রমণ আসে পুলিশের কাছ থেকে। ম্যাচের দখল থাকে কিংসের হাতে।
ম্যাচের ৭৬ মিনিটে আবারও লিড নিতে পারত পুলিশ। কিংসের ডিফেন্ডারের ভুল ব্যাক পাসে বল পেয়ে যান রকি। সামনে এগিয়ে আসা জিকো বল ক্লিয়ার করার আগেই তা আমিরুদ্দিন শারিফির দিকে এগিয়ে দেন রকি। খালি পোস্ট পেয়েও বলটা লক্ষ্যে ফেলতে পারেননি পুলিশের আফগান ফরোয়ার্ড শারিফি।
কিংসের দুই গোলদাতা ইব্রাহিম ও ইয়াসিন। ছবি: বাফুফে
দ্বিতীয়ার্ধে আরও দুটি ভালো সুযোগ হাতছাড়া করেন শারিফি।
নির্ধারিত সময় শেষে কোনো দল গোলের দেখা না পাওয়ায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে।
বাড়তি সময়ের প্রথমার্ধে সুবর্ণ সুযোগ পায় পুলিশ। ডি-বক্সের বাম প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে কিংসের ডিফেন্ডার বিশ্বনাথকে কাটিয়ে শট নেন শারিফি। প্রথম শটে বলটা গ্লাভস করতে পারেননি গোলকিপার জিকো। পরে তা থ্রোয়ের বিনিময়ে বিপদমুক্ত করে কিংস রক্ষণ।
ম্যাচের ১০৮ মিনিটের মাথায় দূর থেকে নেয়া কিংসের ফরোয়ার্ড রবসন রবিনিয়োর বুলেট শট কর্নারের বিনিময়ে রুখে দেন পুলিশের গোলকিপার নেহাল।
লিড নেয়ার আরেকটি বড় সুযোগটা হাতছাড়া করে পুলিশ। ম্যাচের ১১২ মিনিটে আমিরুদ্দিনের বাড়িয়ে দেয়া বল গোলকিপার জিকোকে একা পেয়েও জালে জড়াতে পারেননি পুলিশের ফরোয়ার্ড আল-আমিন। বল জিকোর গায়ে মেরে লিড নেয়ার সুযোগটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় পুলিশ।
ম্যাচের ১১৯ মিনিটে পুলিশের স্বপ্নভঙ হয়। রবসনের কর্নার কিক থেকে সুফিলের হেড সিক্স ইয়ার্ডের সামনে পড়লে টোকা দিয়ে বল জালে জড়িয়ে কিংস সমর্থকদের উল্লাসে মাতান ডিফেন্ডার ইয়াসিন আরাফাত। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নতুন দলের জার্সিতে নিজের প্রথম গোল করেন সাইফ থেকে কিংসে নাম লেখানো ইয়াসিন।
এ জয়ে টানা দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে চলে গেল অস্কার ব্রুসনের বাহিনী। ফাইনালে তারা পাচ্ছে চতুর্থবারের মতো ফাইনালে আসা আবাহনীকে। ফাইনাল হবে ১৮ ডিসেম্বর একই ভেন্যুতে।