জেমি ডে’কে হেড কোচের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে অস্কার ব্রুজনকে দায়িত্ব দেয়ার পর জাতীয় ফুটবল দলের ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। বল পজিশনিং ফুটবলের চেতনা নিয়ে গত সাফে সমর্থকদের খুশির মুহূর্ত উপহার দেন অস্কার। সেই চেতনাকে সঙ্গী করে দলে যুক্ত হয়েছে নতুন হেড কোচ মারিও লেমসের ‘নিখুঁত’ কৌশল।
তার বদান্যতায় রোববার চার জাতি টুর্নামেন্টে মালদ্বীপকে হারায় বাংলাদেশ।
এ জয়ে ১৮ বছরের অপেক্ষার অবসান হয় টাইগারদের। গত দেড় যুগে মালদ্বীপকে প্রথমবারের মতো হারায় বাংলাদেশ। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সমালোচনা-প্রশ্ন থেকে মুক্তি পায় লাল-সবুজ বাহিনী।
গত সাফেও মালদ্বীপের কাছে ২-০ গোলে হেরেছিল টাইগাররা। রোববার ২-১ গোলে হারিয়ে বদলা নিল এবার।
এ দিন মালদ্বীপকে বন্দী করে রাখতে সমর্থ হন মারিও লেমস। পাঁচ ডিফেন্ডারের কৌশল নিয়ে কাউন্টার অ্যাটাকে খেলানোর পরিকল্পনায় পুরোপুরি সার্থক বলতে হবে বাংলাদেশের জাতীয় দলের হেড কোচকে।
পুরো ম্যাচে গোলপোস্টের মধ্যে মাত্র একটি শট নিতে পেরেছে মালদ্বীপ। আলী আশফাক-ঘানীদের বন্দী করে রাখতে সফল হয়েছেন বাংলাদেশের রক্ষণ প্রহরীরা।
মালদ্বীপ বধের কৌশলটা ম্যাচের পরে খোলাসা করেছেন মারিও লেমস, ‘নিজেদের কমপ্যাক্ট রাখার পরিকল্পনা ছিল। মালদ্বীপকে সুযোগ কম দেয়াই লক্ষ্য ছিল। তাদের জন্য জায়গা কমিয়ে আনা ছিল কৌমল। যাতে করে আরও ছড়িয়ে খেলার চেষ্টা করে তারা আর এতে যে ফাঁকা জায়গা তৈরি হবে তা কাজে লাগানোর কৌশলে নেমেছিলাম।
‘এবং সেই কৌশল মাঠে ইমপ্লিমেন্ট করতে পেরেছি। আশফাকদের আক্রমণ করার সুযোগ কমিয়ে দিয়েছি। এবং পাল্টা আক্রমণ করেছি বেশকিছু। সফলও হয়েছি।’
মালদ্বীপের কৌশল নিয়ে আগেই ভালোভাবে হোমওয়ার্ক করে রেখেছিলেন বলে জানান জাতীয় দলের হেড কোচ।
লেমস বলেন, ‘আমরা ভালোভাবে মালদ্বীপ নিয়ে গবেষণা করেছি। এই যুগে ডিটেইলিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি আমার কাজটা করেছি। জামাল-তপুরা সেটা পরিপূর্ণ ও সফলভাবে সেরেছে। এ জয়টা আমাদের জন্য অনেক বড় জয়।’
ঘরোয়া ফুটবলের শীর্ষস্থানীয় ক্লাব ঢাকা আবাহনী তার অধীনে মালদ্বীপের দলকে হারিয়েছিল এএফসি কাপের টুর্নামেন্টে। এই ম্যাচে তাই মালদ্বীপ বধের বিশ্বাস ছিল কোচের।
পর্তুগিজ এ কোচের কথায়, ‘এএফসি কাপে মালদ্বীপের দলকে হারিয়েছি এখন মালদ্বীপকে হারিয়েছি। আমার বিশ্বাস আমি প্রতিটা ম্যাচ জিততে পারি। যদিও সেটা সবসময় সম্ভব নয়। এটাই আমার বিশ্বাস। এ জন্যই আবাহনী আমাকে নিয়েছে। জাতীয় দল ডেকেছে।’
মালদ্বীপকে হারানোয় চার জাতি টুর্নামেন্টে ভালো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। এক জয় আর এক ড্রয়ে চার পয়েন্ট নিয়ে টুর্নামেন্টের টেবিলে শীর্ষে আছে লেমসের দল। নিজেদের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ড্র করলেই ফাইনালে খেলবে বাংলাদেশ।
তবে, বিষয়টি হালকাভাবে নিচ্ছেন না মারিও লেমস। তিনি বলেন, ‘কাজ এখনও অনেক বাকি। পরের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। কোনো হেলাফেলার করার সুযোগ নাই।’
টুর্নামেন্টের শেষ ম্যাচটি আগামী ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ খেলবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।