শ্রীলঙ্কার সঙ্গে জয়ের আশা জাগিয়েও কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্তে হার বরণ করে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করতে হয় বাংলাদেশের। এই ম্যাচটা নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
মূলপর্বের এই ম্যাচ নিয়ে নীরবতা ভেঙেছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।
নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মঙ্গলবার দুপুরে ম্যাচের পর্যালোচনা করেছেন তিনি।
বাংলাদেশের ছুড়ে দেয়া ১৭১ রানের টার্গেটে নেমে শ্রীলঙ্কা যখন চার উইকেট হারিয়ে চাপে, তখন চাপ অব্যাহত না রেখে দুই অনিয়মিত বোলারকে দিয়ে বল করানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ওই তিন ওভারে ৩৬ রান নেয় শ্রীলঙ্কা।
মোস্তাফিজকে দীর্ঘ বিরতিতে রেখে সাকিবকেও এ সময় বিশ্রামে রাখা হয়। ম্যাচে কিছু ভুল সিদ্ধান্ত, ক্যাচ মিস ও ম্যানেজমেন্টের সমস্যার কারণে ম্যাচটা হাত থেকে ফসকে গেছে বলে মনে করছেন মাশরাফি।
তিনি লেখেন, ‘ম্যাচের ৯.৪ ওভার ৭৯ রানে ওদের (শ্রীলঙ্কা) ৪ উইকেট, ঠিক তখন আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী ড্রিংকস ব্রেক। তার মানে কোচ মাঠের ভেতর আসবে। আমাদের কোচও এসেছিলেন। তাহলে উনি (কোচ) এসে রিয়াদের (মাহমুদউল্লাহ) সঙ্গে কী কথা বলেছিলেন? যদি বলে থাকেন, তাহলে কি সব দায় রিয়াদের?
‘মানলাম, অন ফিল্ড ক্যাপ্টেন’স কল ইজ ফাইনাল। তবে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের ক্রাঞ্চ মোমেন্টে কি কোচ ডিসকাশন করেন না? ক্যাপ্টেন তখন বিভিন্ন বিষয়ে চাপে থাকে। তার প্ল্যান কী, এটা কি জানতে চেয়েছিলেন কোচ?’
ম্যাচ চলাকালে কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে মাশরাফি বলেন, ‘যদি কোচ এ বিষয়ে রিয়াদের সঙ্গে কথা না বলে থাকেন, তাহলে তো ব্রেকের সময় দলের টিম বয়কেই মাঠে পাঠিয়ে দেয়া যায় হাই-হ্যালো করতে, কোচের আর প্রয়োজন কী!
‘আবারও বলছি, সিদ্ধান্ত রিয়াদ নেবে। কিন্তু ওকে তো হেল্প করতে হবে! কারণ মাঠে ক্যাপ্টেন কখনও কখনও অসহায় হয়ে পড়ে। আর ঠিক তখনই টিম ম্যানেজমেন্টকে টেক অফ করতে হয়। অন্যান্য দলে তো তা-ই দেখি।’
ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ দুটি ক্যাচ মিস নিয়েও কথা বলেন ম্যাশ।
ক্যাচ মিসে কোনো অজুহাতের সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘লিটনের ক্যাচ মিসের কোনো এক্সকিউজ দেব না, এমনকি লিটন নিজেও দেবে না। তবে ক্যাচ মিস খেলার একটা অংশই। তবে ফিল্ডিং কোচের কাছে কি এ বিষয়গুলো নিয়ে জানতে চাওয়া হয়? ক্যাচ মিস কি এই প্রথম হলো?
‘২০১৯ বিশ্বকাপের পর ম্যানেজমেন্টের প্রায় সবাই চাকরি হারিয়েছে স্রেফ বর্তমান ফিল্ডিং কোচ ছাড়া। তাহলে আমরা বিশ্বকাপ বা তারপর কি সেরা ফিল্ডিং সাইড হয়ে গিয়েছি?’
ম্যাচ হারার দায়টা খেলোয়াড়দের ঘাড়েও নিতে হবে বলে জানান সাবেক টাইগার অধিনায়ক।
মাশরাফি লেখেন, ‘তারপরও দায় খেলোয়াড়দেরই নিতে হয়, হবে। এটাই স্বাভাবিক, কারণ মাঠে তারাই খেলে। কিন্তু একটা বিষয় পরিষ্কার, খেলোয়াড়দের সেরকম পরিবেশ করে দিতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে, তাদের বিপদে কেউ পাশে না থাকুক, অন্তত টিম ম্যানেজমেন্ট থাকবে।’
এই ম্যাচের হারে টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর খেপেন মাশরাফি। বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট ‘পুনর্বাসন কেন্দ্র বা রিহ্যাব সেন্টারে’ পরিণত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।‘এখন টিম ম্যানেজমেন্ট দেখলে মনে হয় একটা রিহ্যাব সেন্টার, যেখানে সাউথ আফ্রিকার সব চাকরি না পাওয়া কোচগুলো একসঙ্গে আমাদের রিহ্যাব সেন্টারে চাকরি করছে।
‘এদের বাদ দেয়া আরও বিপদ। কারণ তারা চুক্তির পুরো টাকাটা নিয়ে চলে যাবে। তাহলে দাঁড়ালো কী? তারা যত দিন থাকবে আর মন যা চাইবে, তাই করবে।’ যোগ করেন মাশরাফি