বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘এআইয়ের কাছে সহজে হারবে না মানবমস্তিষ্ক’

  •    
  • ১০ অক্টোবর, ২০২১ ১২:৩৯

গ্র্যান্ডমাস্টার রাজীব বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কম্পিউটারের সঙ্গে মানুষ হিসাব করে পারবে না। কম্পিউটারের সঙ্গে মানুষের খেলা হওয়া উচিত টাইম লিমিট ছাড়া। তখন বোঝা যাবে যে, কম্পিউটার কতটা ভালো।’

বাংলাদেশে দাবার সবশেষ ও কনিষ্ঠতম গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব। ২০০৮ সালে গ্র্যান্ডমাস্টার নর্ম পাওয়া এ দাবাড়ু মনে করেন, দাবায় মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে ছাড়িয়ে যাওয়া কঠিন হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই)।

নিউজবাংলার সঙ্গে দাবা, নিজের ক্যারিয়ার ও এ সংক্রান্ত নানা বিষয়ে কথা বলেছেন গ্র্যান্ডমাস্টার রাজীব। নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য তার সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।

আপনার যাত্রার শুরুটা কেমন ছিল সেটা যদি জানাতেন...দাবায় কীভাবে আগ্রহ পেলেন?ছোটবেলাতে দাবার বোর্ড দেখে এটার প্রতি কেন যেন এক ধরনের আগ্রহ বোধ করি। তারপরে বাবার সঙ্গে খেলা শুরু করি। সেখান থকেই দাবার প্রতি আকর্ষণের শুরুটা।

এখনকার তরুণদের, যারা আসলে নানা ডিভাইসে ভিডিও গেমস খেলে, তাদের কীভাবে দাবার প্রতি আগ্রহী করে তোলা সম্ভব?দাবাও এখন ডিভাইস বেজড। বিভিন্ন ডিভাইস ব্যবহার করে এটা অনলাইনে খেলতে পারেন। বিশ্বের যেকোনো খেলোয়াড়ের সঙ্গে খেলা সম্ভব। তাদের আগ্রহী করে তোলার জন্য প্রথম আমাদের তরুণদের দাবা শেখাতে হবে। শুরুটা করিয়ে দিতে পারলে দেখা যাবে তারা ভিডিও গেমস খেলা বন্ধ করে দাবার প্রতি আকর্ষণ বোধ করছে।দাবায় শারীরিক ফিটনেস কতটা জরুরি?দাবায় ফিজিক্যাল ফিটনেস খুবই জরুরি। নয় রাউন্ডে প্রতিটা খেলা ৪-৫ ঘণ্টা করে খেলা শারীরিকভাবে ক্লান্তিকর। কিংবদন্তি ববি ফিশার বা এখনকার চ্যাম্পিয়ন দাবাড়ু ম্যাগনাস কার্লসেন ফিটনেসের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন।আমাদের দেশে অবশ্য ফিটনেসের বিষয়টি এতটা গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হয় না। আমি নিজেও ফিটনেস নিয়ে যতটা করা প্রয়োজন ততটা করি না। কিন্তু খুবই দরকার।দাবা টুর্নামেন্টের আগে কীভাবে প্রস্তুতি নেন?প্রস্তুতিটা আসলে কয়েকটা ধাপে হয়। শুরুতে আমরা যদি জানি যে প্রতিপক্ষ কে, তাহলে তার খেলার ধরনের বিপক্ষে নির্দিষ্ট প্রস্তুতি নিতে হয়। যখন জানি না যে প্রতিপক্ষ কে হবেন, তাহলে নিজের সাধারণ প্রস্তুতিটা ভালো করার চেষ্টা করি। সাদা ঘুঁটি নিয়ে খেললে কেমন ওপেনিং খেলব বা কালো ঘুঁটি নিয়ে খেললে শুরুটা কেমন হবে সেটা অনুশীলন করি। এরপর টুর্নামেন্ট শুরু হলে পরের রাউন্ডে কার বিপক্ষে খেলব সেটা নিয়ে কাজ করার সুযোগ থাকে, কিন্তু সময় খুব বেশি থাকে না।দাবার আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ডিপ ব্লু গ্যারি কাসপারভকে হারিয়েছিল। এখন গুগল জিরোর মতো অত্যন্ত শক্তিশালী সফটয়্যার আছে। আপনার কি মনে হয় একসময় এআই দাবা খেলায় মানুষের সক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যাবে?এখন একজন গণিতবিদের সঙ্গে যদি একটা কম্পিউটারের প্রতিযোগিতা করান, তাহলে গণিতবিদ কিন্তু পারবেন না। তাতে কিন্তু গণিতবিদের গুরুত্ব কমছে না। কম্পিউটারকে আমরা একটা টুল হিসেবে ব্যবহার করি। আর মানুষের সঙ্গে কম্পিউটারের যত প্রতিযোগিতা সেখানে সময় বেঁধে দেয়া থাকে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কম্পিউটারের সঙ্গে মানুষ হিসাব করে পারবে না। কম্পিউটারের সঙ্গে মানুষের খেলা হওয়া উচিত টাইম লিমিট ছাড়া। তখন বোঝা যাবে যে কম্পিউটার কতটা ভালো।আলফা জিরোর কথা বলেছেন আপনি। আরেকটা অত্যন্ত শক্তিশালী দাবা ইঞ্জিন আছে স্টকফিশ। এগুলো যে পর্যায়ে চলে গেছে তাতে হয়তো অনেকে ভাবতে পারেন যে সর্বোচ্চ উৎকর্ষে পৌঁছানো হয়েছে, কিন্তু ইঞ্জিনগুলোও তো একে অপরের সঙ্গে হারছে। এর মানে এই এআই ইঞ্জিনগুলো দাবা খেলাটা পুরো আয়ত্ত করতে পারেনি। একটা রহস্য রয়ে গেছে।

একটা দাবা খেলায় সম্ভাব্য চাল অসংখ্য। বলা হয় যে, দৃশ্যমান মহাবিশ্বের যতগুলো অণু আছে, তার চেয়েও বেশি চাল দেয়া সম্ভব দাবার এক খেলায়। কম্পিউটার যতই শক্তিশালী হোক, সহজ না বিষয়টা।

শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টার্স দাবার প্রথম রাউন্ডে খেলছেন এনামুল হোসেন রাজীব। ছবি: সাইফুল ইসলাম/নিউজবাংলা

দাবাড়ুদের লেখা বই পড়েন কি? কার বই ভালো লাগে?আমি ববি ফিশারের ‘মাই সিক্সটি মেমরেবল গেমস’ অসংখ্যবার পড়েছি। আমি যখন শুরু করেছি তখন বই এতটা পাওয়া যেত না। তাই ওই একটা বই অনেকবার পড়তে হয়েছে। পরে অবশ্য গ্যারি কাসপারভের বই পড়েছি; মিখাইল তালের বই পড়েছি। বর্তমানে প্রচুর বই পাওয়া যায়। এর মধ্যে গ্যারি কাসপারভের ‘মাই গ্রেট প্রিডেসেসরস’-এর পাঁচটা খণ্ড আছে, যেটা আমি মনে করি যে, খুবই ভালো। কারপভের সঙ্গে নিজের (কাসপারভ) ম্যাচের বই লিখেছেন; নিজের খেলার ওপরে বই লিখেছেন। সেগুলোও দারুণ।দাবা নিয়ে কখনো কোনো বই লিখবেন কি না?ওই রকম নির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। সময় ও সুযোগ থাকলে দাবা নিয়ে অবশ্যই কিছু লিখতে চাই।

এ বিভাগের আরো খবর