বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত ‘জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টারস দাবা’ টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতে নিয়েছেন ভারতের আন্তর্জাতিক মাস্টার (আইএম) সংকল্প গুপ্ত।
নাগপুরের এই তরুণ ২০১৯ সালে আইম নর্ম অর্জন করেন। এবারের আসরের শুরুর দুই রাউন্ডে বেশ খানিকটা পিছিয়ে ছিলেন তিনি।
তবে শেষ চার রাউন্ড দারুণ খেলে শিরোপা জিতে নেন ১৮ বছর বয়সী সংকল্প। প্রাইজমানি হিসেবে পেয়েছেন চার হাজার ডলার।শিরোপা জেতার পরপরই নিউজিবাংলার সঙ্গে কথা বলেন দাবার এই ভবিষ্যত তারকা। নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য তার সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো।
সংকল্প প্রথমেই শুভেচ্ছা টুর্নামেন্ট জেতার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ
বাংলাদেশের এই টুর্নামেন্ট সম্বন্ধে কীভাবে জানতে পারলেন?
১০ সেপ্টেম্বর আমার এক বন্ধু কাছ থেকে এই আসরটি সম্পর্কে জানতে পারি। সব কিছু পরিকল্পনা করে ১২ তারিখে আমরা টিকিট কেটে ফেলি বাংলাদেশের।আপনার দাবা খেলার শুরুটা কীভাবে? কাকে দেখে দাবা খেলার অনুপ্রেরণা পেলেন?
আমি সাড়ে চার বছর বয়সে দাবা খেলা শুরু করি। আমরা একান্নবর্তী পরিবারে থাকি। আমার বড় ভাইদের দাবা শেখাতে আসতেন কোচ সেটা দেখে আমি আগ্রহী হই। ছোটবেলায় ভিশ্বনাথন আনন্দ ও ম্যাগনাস কার্লসেনের মতো দাবাড়ুদের দেখে আরও আগ্রহ পাই।
পড়াশোনার পাশাপাশি দাবার এত ব্যস্ত সূচি কীভাবে মানিয়ে চলেন?
দাবা পড়াশোনায় মনোযোগী হতে সাহায্য করে। আমি ছোটবেলা থেকেই খেলছি তাই আমার কাছে খুব একটা সমস্যা কখনই মনে হয়নি। আমার কলেজ আমাকে খুবই সমর্থন করে। তারা টুর্নামেন্টগুলোর সময় আমাকে সাহায্য করে।
এই টুর্নামেন্টে খেলে কেমন লেগেছে? প্রতিপক্ষ কেমন ছিল?
খেলার আয়োজন খুবই ভালো ছিল। আমার শুরুটা ভালো হয়নি। প্রথম দুটি খেলায় জিততে পারিনি। তবে এরপর থেকে আমার খেলা ভালো হয়েছে। শেষ পর্যন্ত জিততে পেরে আমি খুবই খুশি।
মিত্রভা গুহে ছয় রাউন্ড পর্যন্ত আপনার চেয়ে এগিয়ে ছিল। লড়াইটা কেমন উপভোগ করলেন?
মিত্রভা আমার ভালো বন্ধু। ও যখন টানা পাঁচ খেলা জিতেছিল আর আমি পাঁচ ম্যাচের চারটি জিতেছিলাম। আমার আর ওর খেলাটাই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি ভালো প্রস্তুতি নিয়েছিলাম আর ভাগ্য ভালো ছিল যে কালো ঘুঁটি নিয়ে খেলেছি। আমি আমার পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পেরেছি।
শিরোপা জেতার পর প্রাইজমানি গ্রহণ করছেন সংকল্প গুপ্ত। ছবি: সাইফুল ইসলাম/নিউজবাংলা
বাংলাদেশে খেলে কেমন লাগল? আবারও আসবেন কিনা দাবা খেলতে?
এখানে খেলার অভিজ্ঞতা খুবই ভালো ছিল। সবাই খুব বন্ধুসুলভ। আমি নিরামিষভোজী। হোটেল আমার জন্য বিশেষ ভাবে নিরামিষ রান্না করেছে। সুযোগ পেলে আবার আসব।
বাংলাদেশের দাবা সম্বন্ধে খোঁজ খবর রাখেন? এখানকার দাবাড়ুদের কেমন মনে হয়েছে?
আমি বাংলাদেশের দাবাড়ুদের সম্বন্ধে জানি। ২০১৯ সালে গোয়ায় আমি গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের বিপক্ষে খেলেছি। ব্যক্তিগত ভাবে আমি কাউকে চিনি না। কিন্তু গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদের খেলা আমি ফলো করি।
আন্তর্জাতিক মাস্টার থেকে গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার প্রস্তুতি কীভাবে নিচ্ছেন?
বেশি বেশি টুর্নামেন্ট খেলব। ভুল ত্রুটি গুলো কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করব। এই টুর্নামেন্টে কী কী ভুল করেছি সেটা নিয়ে কাজ করতে হবে ও সেগুলো ঠিক করতে হবে। এভাবেই চেষ্টা করতে থাকব।
নিউজবাংলার সঙ্গে কথা বলছেন আন্তর্জাতিক মাস্টার সংকল্প গুপ্ত। ছবি: নিউজবাংলা
আপনার প্রিয় দাবা খেলোয়াড় হিসেবে আনন্দ ও কার্লসেনের কথা বলেছেন, ওদের খেলার কোন দিকগুলো আপনার ভালো লাগে?
কার্লসেন যেভাবে খেলাটা শেষ করে সেটা আমার খুব ভালো লাগে। যেভাবে সে প্রতিপক্ষের একেবারে ছোট ভুলগুলোও ধরতে পারে সেটা অসাধারণ। আর ভিশি (আনন্দ) ভারতে অনেক বড় নাম। সে খুব ভালো হিসেব করে খেলে। আর তার ওপেনিংটা খুবই দারুণ। তাকে আমি দেখেছি কয়েকবার। কিন্তু কখনও কথা হয়নি।
ধন্যবাদ আপনাকে সময় দেয়ার জন্য
নিউজবাংলাকেও ধন্যবাদ।