বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘উপযুক্ত পরিবেশের অভাবে তৈরি হচ্ছে না লেগস্পিনার’

  •    
  • ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৮:২৪

অভিজ্ঞ কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিমের মতে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে না পারায় বাংলাদেশ বিশ্বমানের কোনো লেগি পায়নি। লেগস্পিনারদের জন্য বাড়তি মনোযোগী হতে হবে কর্তৃপক্ষকে এমনটা মনে করেন ফাহিম। আলাদা অনুশীলন, স্টাফ ও পিচের পাশাপাশি প্রয়োজন প্রতিভাদের আত্মবিশ্বাস যোগানো।

বিশ্বের সেরা দলগুলোতে এখন একটা দৃশ্য অতিপরিচিত। একজন লেগস্পিনার নেতৃত্ব দিচ্ছেন আক্রমণে, গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তুলে নিচ্ছেন উইকেট। রাশিদ খান, তাবরেইজ শামসি, অ্যাডাম জ্যাম্পা, আদিল রাশিদ, বিশ্বসেরা সব দলে আছেন একজন করে লেগস্পিনার।

হাতেগোনা যে কয়টি দলে নেই তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। মোহাম্মদ রফিক, আব্দুর রাজ্জাক, সাকিব আল হাসান বিশ্বসেরা অফ স্পিনারদের সার্ভিস বছরের পর বছর পেয়েছে টাইগার ক্রিকেট। কিন্তু টেস্ট অভিষেকের ২০ বছরেও দেখা মেলেনি একজন বিশ্বমানের লেগস্পিনারের।

দুই দশকে বাংলাদেশের জার্সিতে দেখা গেছে হাতেগোনা কয়েকজন লেগস্পিনারকে। এর মধ্যে অলক কাপালি, জুবায়ের হোসেন ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লব মোটামুটি সাফল্য পেয়েছেন।

অলরাউন্ডার হওয়াতে ক্যারিয়ার কিছুটা লম্বা হয়েছিল অলক কাপালির। কিন্তু শুরুতে সাফল্যের পরও থেমে যায় জুবায়ের হোসেনের ক্যারিয়ার। আর বর্তমানে আমিনুল ইসলাম দলে থাকলেও পাচ্ছেন না খেলার সুযোগ।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটই শুধু নয় ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলোতে সুযোগ পাননা জুবায়ের, বিপ্লবরা। ঘরোয়া ক্লাবগুলো আগ্রহী নয় তাদের নিতে।

কেনো লেগস্পিনারদের থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকা বাংলাদেশের? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নিউজবাংলা কথা বলেছে জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার সাকিব-তামিম-মুশফিকদের গুরু, ঘরোয়া ক্রিকেটের কিংবদন্তি কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সঙ্গে।

অভিজ্ঞ এই কোচ জানালেন উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় বাংলাদেশ বিশ্বমানের কোনো লেগি পায়নি।

তিনি বলেন, ‘একটা লেগস্পিনার চাইলে তাকে বের করে আনতে কী ধরনের পরিবেশ লাগবে? সেটার প্রক্রিয়া কী হবে? এগুলো তো আমাদের তৈরি করা লাগবে। সেটার দিকে আমরা এখনও মনোযোগ দেইনি। তাই স্বাভাবিকভাবে যার যেটা পছন্দ সে সেটাই করে। যেই পরিবেশ আছে সেখান থেকে যতটুক সাপোর্ট নেয়ার ততটুকুই নেয়। আর সেভাবেই বেড়ে ওঠে।’

লেগস্পিনারদের জন্য বাড়তি মনোযোগী হতে হবে কর্তৃপক্ষকে এমনটা মনে করেন ফাহিম। আলাদা অনুশীলন, স্টাফ ও পিচের পাশাপাশি প্রয়োজন প্রতিভাদের আত্মবিশ্বাস যোগানো।

তিনি বলেন, ‘লেগস্পিনারদের জন্য আমাদের একটা পরিবেশ তৈরি করা দরকার। লেগস্পিন করাটা কঠিন। এই কঠিন কাজটাকে যাতে সহজে করতে পারে সে রকম একটা অবস্থায় নিয়ে যেতে হবে। লেগস্পিনারদের জন্য কোচ, ট্রেনিংয়ের সুযোগ সুবিধা আলাদাভাবে দিতে হবে। যেহেতু আমরা সেরকম কিছু করতে পারছি না, তাই স্বাভাবিকভাবে কঠিন কাজটা কেউ করতে চায় না। যে লেগস্পিনার হতে পারতো সে অফ স্পিনার হয়, কারণ সেটা সহজ।’

জাতীয় দলে এখন পর্যন্ত একমাত্র অলক কাপালি বাদে আর কোনো লেগি নিজেকে প্রমাণের জন্য পাননি পর্যাপ্ত সুযোগ। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে অলক কাপালি খেলেছেন ১৭টি টেস্ট, ৬৯টি ওয়ানডে ও ৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।

আর বাংলাদেশের হয়ে ৬টি টেস্ট, ৩টি ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি খেলেই থেমে গেছে জুবায়েরের ক্যারিয়ার। আর বিপ্লব খেলেছেন ৭টি টি-টোয়েন্টি।

তিন ছাত্র নাসির হোসেন, সাকিব আল হাসান ও সোহরাওয়ার্দী শুভর সঙ্গে ক্রিকেট কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম। ছবি: ফেসবুক

সাকিব-তামিম-মুশফিকদের গুরু ফাহিমের মতে পর্যাপ্ত সুযোগের অভাবে নিজেদের প্রমাণ করতে পারছেন না লেগিরা। যার কারণে অল্পতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে তাদের ক্যারিয়ার। কিভাবে অবস্থার উন্নতি করা যায় তার একটি উপায় বাতলেছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘লেগস্পিনার বের করতে আমরা জাতীয়ভাবে একটা উদ্যোগ নিতে পারি। যেমন পেইস বোলিং হান্ট হচ্ছে, তেমনি লেগস্পিনারদের জন্য এমন একটা প্ল্যাটফর্ম করে দিতে পারি, তাদের জন্য একটা বিশেষ ক্যাম্প হবে সেখান থেকে লেগস্পিনার উঠিয়ে নিয়ে আসতে পারি। যদি সত্যিকারের ইচ্ছা থাকে তাহলে গোড়া থেকে ধরতে হবে। নাহলে অপেক্ষা করতে হবে হঠাৎ করে একটা আন্তর্জাতিক মানের লেগস্পিনার পেয়ে যাব। যেটা একেবারেই অলৌকিক একটা ব্যাপার হবে।’

আপাতত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বিশ্বমঞ্চে লেগস্পিনার ছাড়াই নামছে বাংলাদেশ। শামসি, রাশিদরা যেখানে দলের হয়ে ঘাম ঝড়াবেন মাঠে সেখানে বিপ্লবকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে স্ট্যান্ডবাই বেঞ্চে।

এ বিভাগের আরো খবর