অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যেখানে রাখা হয়নি কোনো লেগ স্পিনার ও বেঞ্চে রাখা হয়েছে অভিজ্ঞ পেইসার রুবেল হোসেনকে।
ক্রিকেটারদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করে এই স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়েছে বলে মনে করছেন সাবেক ক্রিকেটার ও ক্রিকেট বিশ্লেষকেরা।
বিশ্বের প্রায় সবগুলো দলে যেখানে লেগস্পিনার আছে সেখানে আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের মতো উদীয়মান লেগিকে বাংলাদেশ রেখেছে স্ট্যান্ড বাই হিসেবে।
জিম্বাবুয়ে সিরিজের মাঝপথে বাবা মারা যাওয়ায় দেশে ফিরে আসেন বিপ্লব। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে তিনি ছিলেন না দলের সঙ্গে একটি ম্যাচেও। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও।
একই ঘটনা ঘটেছে রুবেল হোসেনের সঙ্গেও। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করার পর দলে রেখে খেলানো হয়নি তাকে একটি সিরিজেও।
ফরম্যাট অনুযায়ী ক্রিকেটার তৈরি না করে ঢালাওভাবে ক্রিকেটার তৈরি করা হচ্ছে বলে মনে করছেন জাতীয় দলের সাবেক পেইসার তারেক আজিজ খান। যার কারণে দল নির্বাচনে এমন সিদ্ধান্ত আসছে বলে নিউজবাংলাকে জানান তিনি।
তারেক আজিজ বলেন, ‘প্রধান সমস্যাটা হলো টেস্ট ক্রিকেটের পারফরম্যান্স টেনে নিয়ে যাচ্ছি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। টি-টোয়েন্টিরটা নিয়ে যাচ্ছি ওয়ানডেতে। খেলোয়াড়কে বিবেচনার বিষয়টা, কোন ফরম্যাটে সে ভালো খেলছে, কোন ফরম্যাটে সে উইকেট পাচ্ছে সেটা বিবেচনা করার বিষয়টাতে আমাদের অনেক ঘাটতি রয়েছে। নির্বাচকেরা সেভাবে নির্ধারণ করতে পারছেন না, কাকে কোথায় খেলাবেন তারা। সাকিব-তামিম-মুশফিক আমাদের একটা উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার কারণে আমরা আসলে আমাদের দুর্বলতাগুলো সেভাবে এখনও বুঝে উঠতে পারছি না। আমাদের তাদের মতো খেলোয়াড় তৈরি করতে হবে, আর এই তৈরির প্রক্রিয়াটাই আমরা এখনও জানি না।’
ঘরের মাঠে টানা দুটি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ; অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত আর কোনো আন্তর্জাতিক সিরিজ নেই বাংলাদেশের।লম্বা সময় ধরে স্লো ও লো পিচে খেলার পর বিশ্বকাপের স্পোর্টিং উইকেটে নিজেদের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে কিছুটা বেগ পেতে হবে বলেও মন্তব্য করেন বর্তমানে কোচের ভূমিকায় থাকা তারেক আজিজ।
তারেক বলেন, 'এ ধরণের উইকেটে খেলে ঘরের বাইরে গিয়ে কিছুটা অপ্রস্তুত বোধ করবেন। অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ডের সিরিজটাই দেখুন। এ ধরণের উইকেটে কিন্তু ভালো ক্রিকেটাররা খেলতে চাননা। কিন্তু আমাদের ক্রিকেটারদের টানা দুইটা সিরিজ এই উইকেটে খেলতে হয়েছে। অনেকটা যুদ্ধ করে এ ধরণের উইকেটে রান করতে হয়।’
‘এ ধরণের উইকেটে খেলার পর যখন ট্রু উইকেটে খেলব তখন ধারাবাহিকতা ব্যহত হয়। আর উইকেট বানানোর ক্ষেত্রে যদি খেলোয়াড়দের মতামত নেয়া হত তাহলে তাদের ধারাবাহিকতা নিয়ে যত প্রশ্ন ছিল সব কিছুর উত্তর পাওয়া যেত’।
১৭ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে বাংলাদেশের জায়গা করে নেয়ার লড়াই। পাপুয়া নিউগিনি, স্কটল্যান্ড ও ওমানের বিপক্ষে লড়াই করে জায়গা করে নিতে হবে লাল সবুজের প্রতিনিধিদের।
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড: মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, আফিফ হোসেন, নাইম শেখ, নুরুল হাসান সোহান, শামীম পাটোয়ারী, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, শরিফুল ইসলাম, শেখ মাহেদী হাসান ও নাসুম আহমেদ।
স্ট্যান্ড বাই: রুবেল হোসেন ও আমিনুল ইসলাম।