অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচ ও নিউজিল্যান্ড সিরিজের প্রথম ম্যাচে শেরে বাংলার সেন্ট্রাল উইকেট থেকে আসেনি দলীয় ১০০ রানের ইনিংস। আর সে কারণেই কিউইদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে সেই উইকেটে হয়নি খেলা।
উইকেট বদলালেও ম্যাচের ভাগ্য কিন্তু বদলায়নি। হেরেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে সফরকারী নিউজিল্যান্ডকে। বাংলাদেশের ছুড়ে দেয়া ১৪২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৩৭ রানেই থেমে যেতে হয় ব্ল্যাক ক্যাপসদের। আর তারই সুবাদে টাইগাররা পায় ৪ রানের জয়।
শেরে বাংলায় দিনের শুরুটা বাংলাদেশের ভালো হলেও সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দেখা গিয়েছে নিউজিল্যান্ডের বেলায়। রান তাড়া করতে গিয়ে দলীয় ১৮ রানেই দুই ওপেনার টম ব্লান্ডেল এবং রাচিন রাভিন্দ্রাকে হারায় সফরকারীরা।
দলের বিপর্যয়ে এমন সময় ত্রাতা হয়ে আসেন অধিনায়ক টম লেইথাম। সঙ্গে নেন উইল ইয়ংকে। উইকেট কামড়ে ধরে দুজন এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন দলকে।
থিতু হয়ে বসা সেই জুটি ভাঙে সাকিবের হাতে। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা উইল ইয়ংকে ২২ রানে সাইফউদ্দিনের তালুবন্দি করে ফেরান সাজঘরে।
বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আগেই কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ও হেনরি নিকোলসকে ফেরান নাসুম আহমেদ ও মাহেদী হাসান। যার ফলে ৯২ রান তুলতেই পাঁচ উইকেট নেই সফরকারীদের।
উইকেটের এক প্রান্তে যখন আসা-যাওয়ার মিছিল, ঠিক অপর প্রান্ত আগলে ধরে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন কিউই দলপতি লেইথাম। তুলে নেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য সফরকারীদের দরকার ছিল ২০ রানের। তারই জবাবটা বেশ ভালোই দিচ্ছিল নিউজিল্যান্ড। টানটান উত্তেজনা সৃষ্টি করেও শেষ রক্ষাটা আর হয়নি তাদের। মুস্তাফিজ কিছুটা এলোমেলো বল করলেও শেষ পর্যন্ত সামলে নেন। ৪ রানের হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। আর তারই সুবাদে ২-০ তে সিরিজে এগিয়ে গেল টাইগাররা।
বাংলাদেশের হয়ে সাকিব ও মাহেদী হাসান দুটি করে উইকেট নেন।
এর আগে, সমালোচনার জবাব দিতে শেরে বাংলার প্রধান কিউরেটর গামিনি ডি সিলভা সারা রাত কাজ করেন পিচ নিয়ে। কারণ খুঁজে বের করতে চেষ্টা করেন কেন রান খরায় ভুগছে শেরে বাংলা।
হয়তো তিনি জেনে গিয়েছিলেন কারণ। আর সে জন্যই দ্বিতীয় ম্যাচ আর সেন্টার পিচে না খেলায় পাশের পিচে হয় খেলা। আর তাতেই দেখা গেল পরিবর্তন।
ম্যাচের শুরু থেকে ব্ল্যাক ক্যাপদের দেখেশুনে খেলতে থাকেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার; লিটন দাস আর নাঈম শেখ। দুর্দান্ত এক ওপেনিং জুটি উপহার দেন বাংলাদেশকে। এই দুজনের ব্যাটে ধীরে ধীরে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয় টাইগাররা।
দারুণ খেলতে থাকা লিটনের বিদায়ে ভাঙে জুটি। ১০ম ওভারের তৃতীয় বলে রাচিন রাভিন্দ্রার বলে ফ্লিক করতে যেয়ে প্লেইড অন হয়ে বোল্ড হন তিনি। তার আগে ২৯ বলে ১ ছক্কা ৩ চারে ৩৩ রান করেন লিটন।
পরের বলেই রাভিন্দ্রার ফ্লাইটে বোকা বনে স্টাম্পড হয়ে রানের খাতা খোলার আগেই মাঠ ছাড়তে হয় মুশফিকুর রহিমকে। যার ফলে ৫৯ রানেই দুটি উইকেট নেই বাংলাদেশের।
পরপর দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যাওয়া বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্বভার কাঁধে তুলে নেন সাকিব আল হাসান ও দলপতি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু ১১তম ওভারের শেষ বলে ম্যাককঞ্চিকে মারতে গিয়ে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় সাকিবকে। দলের স্কোর তখন তিন উইকেটে ৭২।
সাকিবের বিদায়ের পর ব্যাকফুটে না গিয়ে রানের গতি অব্যাহত রাখেন ওপেনার নাঈম ও রিয়াদ। ৩৯ রান করে বিদায় নিতে হয় তাকেও। ব্যর্থ হন আফিফ হোসেন।
শেষতক সোহানকে সঙ্গে নিয়ে বাকি কাজটা সারেন রিয়াদ। দলকে এনে দেন ১৪১ রানের বড় পুঁজি। রিয়াদ ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন। নিউজিল্যান্ডের হয়ে রাচিন রাভিন্দ্রা ২২ রানে ৩ উইকেট নেন।