চমকের পর চমক উপহার দিয়েছে এবারের ফুটবল ট্রান্সফার মৌসুম। রামোস থেকে শুরু করে মেসি, এরপর রোনালডো। মাঝে গ্রিলিশ, লুকাকু আর হ্যারি কেইনের দলবদল নিয়ে নাটক! সমর্থকদের পাগল বানিয়ে ছেড়ে দেয়ার মতো অবস্থা তৈরি করেছে এবারের দলবদলের উইন্ডো।
এমন দলবদল আদৌ কি দেখেছে ফুটবল বিশ্ব?
শুরু করা যাক সার্হিও রামোসকে দিয়ে। রিয়াল মাদ্রিদকে একের পর এক ট্রফি উপহার দেয়া এই কিংবদন্তিতুল্য ডিফেন্ডার মাদ্রিদ ছেড়েছেন আচমকা। হঠাৎ তাকে বিদায় বলে ক্লাব। অশ্রুসিক্ত হয়ে লস ব্লাঙ্কোদের ছেড়ে দিতে হয় এই রামোসের। পরে তাকে লুফে নেয় প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)।
ফ্রান্সের এই ক্লাব জানলুইজি ডোন্নারুমার মতো ইউরোজয়ী গোলকিপার, লিভারপুলের মিডফিল্ডার জর্জিনিয়ো ওয়াইনালডামদের দলে টেনেছে।
মাঝে সবচেয়ে হতবাক করা সংবাদ দেয় ট্রান্সফার মার্কেট। সবাই যখন লিওনেল মেসিকে বার্সেলোনায় দেখছেন আরও অন্তত দুই বছর, তখন লা লিগার ‘ফেয়ার প্লে নিয়মে’ সবকিছু ওলট-পালট হয়ে গেল। প্রায় দেড় যুগের সংসার ছেড়ে মেসি পাড়ি জমান প্যারিসে। পুরো ট্রান্সফারে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা আসে মেসির খবরে।
মাঝে বাজারে আগুন ছড়ান লুকাকু-গ্রিলিশও। ক্লাব রেকর্ড ট্রান্সফারে অ্যাস্টন ভিলা থেকে ম্যানচেস্টার সিটিতে গেছেন জ্যাক গ্রিলিশ। অন্যদিকে চ্যাম্পিয়নস লিগের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চেলসিও ক্লাব রেকর্ড ট্রান্সফারে দলে ভেড়ায় রোমেলু লুকাকুকে।
মাঠ গরম হয় টটেনহ্যামের স্ট্রাইকার হ্যারি কেইনকে নিয়েও। ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন সিটিতে যাওয়া হয়নি তার। শেষ পর্যন্ত ঘরেই থেকে গেছেন এই ইংলিশ স্ট্রাইকার।
শেষ দিকে আবারও মাঠ টালমাটাল হয় ক্রিস্টিয়ানো রোনালডোকে নিয়ে। দলবদল মৌসুমের সায়াহ্নে রোনালডোকে নিয়ে নাটক জমে যায় চরম পর্যায়ে। পিএসজি থেকে শুরু হয়ে মনে হচ্ছিল সিটি কেড়ে নিচ্ছে রোনালডোকে।
কিন্তু সবাইকে হতবাক করে পুরোনো ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেন এই পর্তুগিজ সুপারস্টার।
শেষে আরেক নাটক তৈরি হয় পিএসজির ফরাসি ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপেকে নিয়ে। রিয়াল মাদ্রিদ যেতে যেতে যাওয়া হয়নি তার। নিজের ইচ্ছে তো ছিলই, পিএসজির চাহিদামতো জোগান দিতে না পারায় তাকে দলে নিতে পারেনি রিয়াল মাদ্রিদ। মঙ্গলবার ট্রান্সফার মার্কেটের শেষ দিনেও গরম হয়েছে মার্কেট। শেষ সময়ে বার্সেলোনাও দুই ফুটবলারকে বিক্রি করে দিয়েছে।
ক্লাব ছেড়েছেন ডিফেন্ডার ইলাইশ মরিবা ও এমারসন। শেষ মুহূর্তে আতলেতিকো মাদ্রিদ থেকে চেলসিতে গেছেন সাউল নিগেস।
সব মিলিয়ে এবারের মৌসুম নিঃশ্বাস ফেলার সময় দেয়নি ফুটবল বিশ্বকে। সবাই এখন অপেক্ষায় জানুয়ারির দলবদলের উইন্ডোর।