আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। এই বাঁহাতি ওপেনার শুধু দেশেরই নন বিশ্বের অন্যতম ধারাবাহিক খেলোয়াড় হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিচরণ করছেন এক যুগের বেশি সময় ধরে।
সব ফরম্যাট মিলিয়ে ২৪টি সেঞ্চুরি আছে তামিমের। এর মধ্যে রয়েছে লর্ডসে সেঞ্চুরি, টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি। এতোগুলো সেঞ্চুরির মধ্যে তামিমের নিজের প্রিয় কোনটা? ফেইসবুকে এক দেশি কোম্পানির লাইভ অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক জানান লর্ডসের সেঞ্চুরির চেয়েও তার কাছে প্রিয় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করা আরেকটি সেঞ্চুরি। যেটি তিনি ঢাকার মাঠে করেন ২০১০ সালে। ওয়ানডে ম্যাচে। সেই ম্যাচটা বাংলাদেশ হেরে যাওয়ায় ওই শতক নিয়ে খুব বেশি আলোচনা হয় না। তারপরও সেটি এই টাইগার ওপেনারের কাছে সবচেয়ে প্রিয়।
তামিম বলেন, ‘ওই খেলাটা আমরা হেরে গিয়েছিলাম। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আমি ঢাকায় ১২৫ রান করি। ওইটা আমার খুব প্রিয়। ম্যাচ হেরে যাওয়ায় এটা নিয়ে বেশি কথা বলি না। কিন্তু খুব উপভোগ করেছিলাম।’
প্রিয় ইনিংসে ঢাকার পর লর্ডসের কথা উল্লেখ করেন তামিম। টেস্ট ক্রিকেটে লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম ওঠানোটা তার কাছে বরাবরই বিশেষ কিছু।
বলেন, ‘বাবার কাছে লর্ডসের গল্প অনেক শুনেছি। লর্ডসের ওই ম্যাচে আমার খেলার কথা ছিল না। হাতে ফ্র্যাকচার ছিল। তবে আমি জানতাম আগামী ১০ বছর লর্ডসে টেস্ট খেলার সুযোগ হবে না। পরে পেইনকিলার নিয়ে খেলে সেঞ্চুরি পেয়েছিলাম। ওইটা আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা অর্জন।’
২০০৭ সালে ১৭ বছর বয়সে অভিষেকের পর থেকেই নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন তামিম। পরের ১৪ বছরে হয়েছে দেশের অন্যতম সেরা পারফর্মার ও অধিনায়ক। ছোটবেলা থেকে লক্ষ্যটা বড় রাখতেন তিনি, জানালেন এমনটাই।
তামিম বলেন, ‘যখন শুরু করি তখন দলের সেরা ব্যাটসম্যান হতে চাইতাম না। সবসময়ই দেখতাম বিশ্বে কে কোথায় আছে। সেরা ৫ বা ১০জন ব্যাটসম্যান কতো রান করল। যদি চিন্তা করতাম যে দলের সেরা ব্যাটসম্যান হব তাহলে হয়তো গ্রোথটাও অতটুকুই থাকত।’
দীর্ঘ ক্যারিয়ারের ভয়ংকর সব ফাস্ট বোলারের পাশাপাশি অসংখ্য চতুর স্পিনার সামলেছেন। তামিম জানালেন একজনই তার মনে বোলার হিসেবে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন।
বলেন, ‘একটা বোলারকে খেলার সময় ভয় পেয়েছি। মনে হয়েছে ও আমাকে মেরে ফেলতে পারে, সে হচ্ছে শোয়েব আখতার। প্রথম যেদিন খেলি সেদিন মনে হচ্ছিল যে আজকে মরে-টরে যেতে পারি।’
অনলাইন আড্ডায় দর্শকদের প্রতি অনলাইনে আরেকটু সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানান তামিম। সবাইকে অনলাইন বুলিংয়ের বিরুদ্ধে সচেতন হতে বলেন এই তারকা ব্যাটসম্যান।
বলেন, ‘যখন ব্যাট করতে যাই প্রতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করার ইচ্ছা থাকে। কিন্তু বাস্তবে তো সেটা সম্ভব না। সবসময় সেরাটা খেলা সম্ভব হয় না। আর তা না হলে অনেক যন্ত্রনার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। এটার বিরুদ্ধে আমাদের সচেতন হতে হবে। একজন মানুষ বোঝে না যে খেলোয়াড়রা কিসের মধ্যে দিয়ে যায়। একজন লিখে দিল আমি ভালো না। তারপর তার কাজ শেষ। এরপরের যন্ত্রনাটা আমাদের নিতে হয়।’
তামিম চোট থেকে সেরে ওঠার প্রক্রিয়ায় রয়েছেন। তাই নিউজিল্যান্ড সিরিজে বাংলাদেশ পাচ্ছে না তাদের অন্যতম অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানকে। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চিকিৎসকদের আশা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে সেরে উঠবেন তামিম।