বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দেশীয় উদ্যোক্তাদের জন্য ই-কমার্স ওয়েবসাইটের সহজ সমাধান দেশীকমার্স

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১৬:২০

দ্রুত পরিবর্তনশীল এই ডিজিটাল যুগে, বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের ব্যবসায়ীদের (এসএমই) জন্য সহজলভ্য এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য ই-কমার্স সমাধানের প্রয়োজনীয়তা আগের চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করা যথেষ্ট জটিল এবং ব্যয়বহুল একটি কাজ। এই কাজটিকেই সহজ করছে দেশীকমার্স।

দেশীকমার্স মূলত একটি SaaS সলিউশন যেটি দিয়ে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলা যায়। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য ই-কমার্সকে সহজলভ্য করার স্বপ্ন নিয়ে দেশীকমার্সের যাত্রা শুরু ২০১৮ সালে। কোম্পানিটি এখন ১৫০-র অধিক দেশী উদ্যোক্তাকে ই-কমার্স ওয়েবসাইটের সেবা দিয়ে যাচ্ছে।স্বপ্ন এবং সাধ্যের ব্যবধান ঘুচানোর পথে বিগত কয়েক দশকে প্রযুক্তির উৎকর্ষের সাথে সাথে মানুষের কেনাকাটার ধরনে পরিবর্তন এসেছে বিশেষ করে ই-কমার্সের উত্থানের ফলে ব্যবসায়িক জগতে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন সম্পন্ন হয়েছে। এই পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত একটি গ্রামের একজন মধু বা আম বিক্রেতার পক্ষেও সরাসরি ঢাকার একজন কাস্টমারের কাছে পণ্য বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে।২০১৮ সালে ঢাকাভিত্তিক BluBird Interactive Ltd.-এর একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে Deshicommerce প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে এই উপলব্ধি থেকে দেশীয় ব্যবসায়ীরা অনলাইনে পণ্য বিক্রি করতে নানা সমস্যায় পড়েন। বিশেষ করে প্রযুক্তিগত জটিলতা এবং ওয়েবসাইট তৈরীর উচ্চ খরচ SME-দের ই-কমার্সে প্রবেশের স্বপ্নে বাধা দেয়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য DeshiCommerce এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে যেটা দিয়ে নামমাত্র খরচে মাত্র কয়েক মিনিটে একটি দ্রুতগতির ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়।

একটা সময় ছিল যখন ভালো মানের একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরী করতে কয়েক মাস এবং কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করতে হতো। দেশীকমার্স সেটাকে নিয়ে এসেছে মাত্র কয়েক মিনিট এবং কয়েকশো থেকে হাজার টাকার মধ্যে। Deshicommerce -এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা আশিক হাসান বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের জন্য ই-কমার্স সলিউশনকে সহজলভ্য ও সহজে ব্যবহারযোগ্য করে তোলা। যাতে তারা সহজেই অনলাইন ব্যবসা শুরু করে সফলতা পেতে পারেন।”

দেশীয় বাজারকে মাথায় রেখে ডিজাইন দেশীকমার্স প্ল্যাটফর্মটি বাংলাদেশের বাজার ও ব্যবসার ধরন অনুযায়ী ডিজাইন করা হয়েছে। এখানে রয়েছে কাস্টমাইযেবল ডিজাইন, সহজ পণ্য ব্যবস্থাপনা, অর্ডার রিটার্ন রিফান্ড ম্যানেজমেন্ট, পেমেন্ট ও ডেলিভারি অপশন ব্যবহারের সুবিধা। প্ল্যাটফর্মটি RedX, Pathao, Steadfast-এর মতো লোকাল লজিস্টিকস এবং bKash, SSLCommerz-এর মতো পেমেন্ট গেটওয়ের সাথে ইন্টিগ্রেটেড যা ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে করে আরও সহজ।

ব্যবসার আকার অনুযায়ী দেশীকমার্স-এর বিভিন্ন প্রাইস প্যাকেজ রয়েছে যাতে উদ্যোক্তারা নিজেদের উপযোগী প্ল্যান বেছে নিতে পারেন।দেশীকমার্স মূলত SME দের উদ্দেশ্য করে তৈরী হলেও অনেক বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানও দেশীকমার্স ব্যবহার করে তাদের ই-কমার্স বিজনেস পরিচালনা করছে। দেশীকমার্স-এর আর একজন সহ-প্রতিষ্ঠাতা কাজী শাহীন বলেন, “এর বড় কারণ হলো - দেশীকমার্স সহজে ব্যবহার করা খুব সহজ, মাত্র কয়েক মিনিটে আপনার সাইট রেডি হয়ে যাবে এবং আপনি সহজেই 'স্কেল' করতে পারবেন।”

ইকমার্স উদ্যোক্তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ ডিজিটাল টুল ব্যবহারে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেশীকমার্স গুরুত্ব দিয়ে দেখে। তাই দেশীকমার্স বিভিন্ন ভিডিও ও লেখার মাধ্যমে টিউটোরিয়াল, প্রিন্টযোগ্য পিডিএফ ইবুক এবং নিয়মিত ওয়েবিনার আয়োজন করে। সেইসাথে রয়েছে অনলাইন ও অন-সাইট প্রশিক্ষণের সুবিধা যা পরিচালনা করেন অভিজ্ঞ ট্রেইনাররা।

দেশীকমার্স একটি পূর্ণাঙ্গ বাংলা ই-কমার্স ব্লগও চালায়, যেখানে মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি, টুল ব্যবহারের কৌশল, মার্কেট রিসার্চ, ও ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির নানা আপডেট প্রকাশিত হয়। এসব তথ্য উদ্যোক্তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানের ভাণ্ডার হিসেবে কাজ করে।

ভবিষ্যতে কী? ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বেটা ভার্সনে চালু হওয়ার পর থেকে দেশীকমার্স ইতোমধ্যেই ১৫০-এর বেশি অ্যাক্টিভ ইউজার পেয়েছে। ব্যবহারকারীদের মতামতের ভিত্তিতে তারা প্রতিনিয়ত প্ল্যাটফর্ম উন্নয়ন করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে দেশীকমার্স প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হতে যাচ্ছে AI-ভিত্তিক ফিচার যেমন স্বয়ংক্রিয় প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন লেখা ও পার্সোনালাইজড প্রোডাক্ট রেকমেন্ডেশন যা ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করবে।

দেশীকমার্স শুধু বাংলাদেশে থেমে থাকতে চায় না। ভবিষ্যতে কোম্পানিটি অন্যান্য এশিয়ান দেশ, ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও নিজেদের বিস্তার ঘটাতে চায়। উদ্ভাবন, নির্ভরযোগ্যতা ও পার্টনারশিপের ওপর ভর করে তারা হতে চায় গ্লোবাল ই-কমার্স ইকোসিস্টেমের অন্যতম চালিকাশক্তি।

বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতি যেমন বাড়ছে, তেমনি দেশীকমার্স-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো স্থানীয় ব্যবসাগুলোর অনলাইন জগতে টিকে থাকা এবং বেড়ে ওঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এ বিভাগের আরো খবর