বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিটকয়েন ক্ষতিকর যে কারণে

  •    
  • ১ জুন, ২০২২ ১৩:৫৪

বিটকয়েন মাইনাররা বিদ্যুৎ যেখানে সস্তায় পাওয়া যায় সেখানেই যায়। আর সে ক্ষেত্রে সস্তায় বিদ্যুৎ দিতে পারে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। তবে সৌভাগ্যের বিষয় এই যে আইসল্যান্ড, নরওয়েতে অনেক বিটকয়েন মাইনিং ফ্যাসিলিটিজ রয়েছে। যেসব দেশ শতভাগ পরিবেশবান্ধব নবায়নযোগ্য শক্তির ওপর নির্ভরশীল।

এক দশকের বেশি আগে শুরু হওয়া ব্লকচেইন প্রযুক্তিনির্ভর বিটকয়েন চেনা বৈশ্বিক অর্থব্যবস্থাকে ঝাঁকুনি দিয়েছে। বাজারের মার্কেট ক্যাপ অনুসারে এরই মধ্যে এই বিটকয়েন নবম মূল্যবান সম্পদে পরিণত হয়েছে। এই মুদ্রার দেখাদেখি আরও অনেক মুদ্রা বাজারে এসেছে। যার বহুবিধ ব্যবহারও রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইথারিয়াম, সোলানা।

এই বিটকয়েন নতুন অনেক বিলিয়নিয়ার তৈরি করেছে এবং নন ফাঞ্জিবল টোকেন, ক্রিপ্টো গেমের মতো বহু বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করেছে। একই সঙ্গে নিয়ে এসেছে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও।

প্রযুক্তিগতভাবে বিটকয়েন এমন পর্যায়ে রয়েছে যার নেটওয়ার্ককে চালু রাখার জন্য যে পরিমাণ কম্পিউটিং সক্ষমতা চালু রাখতে হয়, তার জন্য আর্জেন্টিনার মতো দেশের উৎপাদিত বিদ্যুতের থেকেও বেশি বিদ্যুৎ দরকার। যার একটি পরিবেশগত নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে।

আইসল্যান্ডের একটি বিটকয়েন মাইনিং ফ্যাসিলিটিজ

ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটির গবেষণায় দেখা গেছে বিটকয়েন নেটওয়ার্ক বছরে ১২১ টেরাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। বিটকয়েন যদি একটি দেশ হয়, তবে বিদ্যুৎ ব্যবহারে বিশ্বের শীর্ষ ৩০ দেশের একটি হতো।

যেসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বিটকয়েন মাইনিংয়ের সঙ্গে জড়িত, তারা সাধারণত সস্তায় বিদ্যুৎ খোঁজে। বেশির ভাগ বিটকয়েন মাইনিং ফ্যাসিলিটির অবস্থান চীনে। আর চীনের দুই-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় কয়লা থেকে।

বিটকয়েনের কার্বন ফুটপ্রিন্ট আরও খারাপ হবে, এর দাম যত বাড়বে, কারেন্সির জন্য তত বেশি প্রতিযোগিতা হবে এবং তত বেশি শক্তি খরচ হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়লা থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতে পরিবেশগত ঝুঁকি রয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে বেরিয়ে আসছে।

চীনের দুই-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ আসে কয়লাভিত্তিক প্রকল্প থেকে

পরিবেশের জন্য বিটকয়েনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে ইলন মাস্ক নিজ প্রতিষ্ঠান টেসলার গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে বিটকয়েন ব্যবহার বাতিল করেছিলেন।

২০০৯ সালে বিটকয়েন যাত্রা শুরুর পর পরিবেশের ওপর খুব একটা নেতিবাচক প্রভাব ছিল না, কিন্তু ২০১৭ সালের পর থেকে বিটকয়েনের দাম উচ্চহারে বৃদ্ধির ফলে এর মাইনিং নিয়ে প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হয়। ফলে আরও উচ্চ কম্পিউটিং সক্ষমতার দিকে ঝুঁকতে শুরু করে মাইনাররা। যার জন্য প্রয়োজন হয় ব্যাপক মাত্রায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো পরিবেশ বিপর্যয়ের অন্যতম প্রধান কারণ। প্রকল্পের আশপাশের পরিবেশ ছাড়াও অধিক মাত্রায় কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী এই প্রকল্পগুলো।

বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ক্রিপ্টোগ্রাফি ফার্ম আইওএইচকে-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা চার্লস হসকিনসন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘বিটকয়েনের কার্বন ফুটপ্রিন্ট আরও খারাপ হবে, এর দাম যত বাড়বে, কারেন্সির জন্য তত বেশি প্রতিযোগিতা হবে এবং তত বেশি শক্তি খরচ হবে।’

ক্রিপ্টোকারেন্সির নতুন ইউনিট তৈরি করার জন্য একজন মাইনারকে নোডস খুঁজতে হয়। নোডস মেলানোর জন্য কম্পিউটার সিস্টেমকে সা-২৫৬ হ্যাশ মেলাতে হয়। যার জন্য জটিল গাণিতিক সমীকরণ সমাধান করতে হয়। ফলে ব্যাপক কম্পিউটিং শক্তির প্রয়োজন হয়। তাই বিটকয়েন মাইনাররা বিদ্যুৎ যেখানে সস্তায় পাওয়া যায় সেখানেই যায়। আর সে ক্ষেত্রে সস্তায় বিদ্যুৎ দিতে পারে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।

তবে সৌভাগ্যের বিষয় এই যে আইসল্যান্ড, নরওয়েতে অনেক বিটকয়েন মাইনিং ফ্যাসিলিটিজ রয়েছে। যেসব দেশ শতভাগ পরিবেশবান্ধব নবায়নযোগ্য শক্তির ওপর নির্ভরশীল।

গ্লোবাল ক্রিপ্টো অ্যাসেট বেঞ্চমার্কিংয়ের তথ্য মতে, ২০১৯ সালে ৭৬ শতাংশ ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনার বিদ্যুতের ক্ষেত্রে নবায়নযোগ্য উৎসের ওপর নির্ভরশীল। ২০১৮ সালে যা ছিল ৬০ শতাংশ।

আন্তর্জাতিক নবায়নযোগ্য শক্তি সংস্থার মতে, ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিংয়ের ক্ষেত্রে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।

এ বিভাগের আরো খবর