বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিষণ্নতা কমাতে এক ঘণ্টা আগে উঠুন

  •    
  • ১ জুন, ২০২১ ২২:৪৯

‘আপনার দিনের উজ্জ্বলতাকে আরও দীর্ঘ করুন। একইভাবে দীর্ঘ হোক রাতের অন্ধকারও। ভোরে উঠুন, কফি খান। হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে কাজে যান। একই সঙ্গে সন্ধ্যা থেকে প্রযুক্তিনির্ভরতা কমিয়ে আনুন। এতে বিষণ্নতা কমবে। কমবে ঘুম নিয়ে দুশ্চিন্তাও।’

সূর্যের আলো বিষণ্নতা কমায়—এ মত নতুন নয়। তবে এ মতের ওপর যখন গবেষণার সিলমোহর পড়ে, তখন নিঃসন্দেহে এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে।

গবেষকদের দাবি, সকালে ঘুম থেকে এক ঘণ্টা আগে উঠলে বিষণ্নতা অন্তত ২৩ শতংশ পর্যন্ত কমে।

প্রায় সাড়ে আট লাখ মানুষের ঘুমের অভ্যাস নিয়ে চার বছর ধরে কাজ করে এ তথ্য জানিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো বোল্ডার, ব্রড ইনস্টিটিউট অফ এমআইটি এবং হার্ভার্ডের গবেষকরা।

জামা সাইকিয়াট্রি সাময়িকীতে সম্প্রতি প্রকাশিত এই প্রতিবেদনকেই মানুষের ঘুমের অভ্যাসের সঙ্গে বিষণ্নতার সম্পর্কের ওপর এখন পর্যন্ত সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য গবেষণা হিসেবে মনে করা হচ্ছে।

চলমান করোনা মহামারি মানুষের কাজের এমনকি শিশুদের স্কুল করার সময়ের ওপর তীব্র প্রভাব ফেলেছে। পরিস্থিতির কারণে বেশির ভাগ মানুষই এখন রাতজাগা পাখি এবং একই সঙ্গে বিষণ্নতায় ভুগছেন।

এই প্রতিবেদনের জ্যেষ্ঠ লেখক ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো বোল্ডারের সহযোগী অধ্যাপক সেলিন ভেটার বলেন, ‘মেজাজ ও ঘুমের সময়ের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। বিষয়টি আমাদের সবারই জানা। প্রশ্ন হচ্ছে, উপকার পাওয়ার জন্য আমাদের কতটা সময় আগে ঘুম থেকে উঠতে হবে? বা কখন ঘুমাতে যেতে হবে?

‌‘আমাদের গবেষণা বলছে, সাধারণত যে সময় আমরা ঘুম থেকে উঠি, তার এক ঘণ্টা আগে উঠলেও বিষণ্নতায় ভোগার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।’

অতীতে করা গবেষণা থেকে দেখা যায়, যারা দেরিতে ঘুম থেকে ওঠেন, তারা ভোরে ঘুম থেকে ওঠা মানুষের তুলনায় দ্বিগুণ বিষণ্নতায় ভোগেন। কতটা সময় ঘুমালেন তা দিয়ে কিছু আসে যায় না।

২০১৮ সালে ভেটার নামে এক সাময়িকীতে প্রকাশিত আরেক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, ভোরে ঘুম থেকে উঠলে বিষণ্নতার মাত্রা ২৭ শতাংশ কমে যায়। ৩২ হাজার নার্সের ওপর চার বছর ধরে এ গবেষণা চালানো হয়। কিন্তু সময়ের সুস্পষ্ট হিসাব না থাকায় এ গবেষণাটিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

ঠিক এ বিষয়টি নিয়েই সর্বশেষ গবেষণাটিতে কাজ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটির প্রধান লেখক হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের গ্র্যাজুয়েট ইয়াস ডগলাস বলেন, জেনেটিক্যাল গবেষণায় দেখা গেছে, ক্লক জিন নামে পরিচিত পিইআর২ মানুষের ঘুমের অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করে। এই জিনের প্যাটার্ন অনেকটা প্রকৃতির ঘড়ির মতোই। এর বিরুদ্ধে গেলেই স্বাভাবিকভাবেই বিরোধ হয়। যার ফল বিষণ্নতা।

গবেষকরা সাড়ে আট লাখ মানুষের ওপর এই গবেষণাটি করেন। এর মধ্যে ৮৫ হাজারকে সাত দিনের জন্য স্লিপ ট্র্যাকার পরিয়ে দেয়া হয়। আড়াই লাখ মানুষ তাদের ঘুমের অভ্যাস নিয়ে নানা প্রশ্নের জবাব দেন। এগুলো দিয়েই ঘুম ও জেগে ওঠার ওপর জিনের প্রভাব অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে যায়।

আর এই গবেষণা বলছে, সকালে যত দ্রুত বিছানা ছাড়া যাবে, বিষণ্নতার ঝুঁকি ততটাই কমবে। এক ঘণ্টা আগে উঠলে ঝুঁকি কমবে ২৩ শতাংশ।

হিসাবটি সহজ, যে ব্যক্তি ১টায় ঘুমাতে যান, তিনি যদি রাত ১২টায় ঘুমাতে যান এবং এক ঘণ্টা আগে ওঠেন, তার বিষণ্নতায় ভোগার ঝুঁকি কমবে ২৩ শতাংশ। ঘুমাতে যাওয়ার সময় ১১টায় নামিয়ে আনা যায়, একই সঙ্গে ওঠার সময়ও যদি আরও এক ঘণ্টা পেছানো যায়, তাহলে ঝুঁকি কমবে ৪০ শতাংশ।

বলা হয়ে থাকে, সূর্যের আলো মন ভালো করে দেয়। যারা ভোরে ওঠেন, তারা অনেক বেশি সময় এ আলো পান। তাদের হরমনের ওপর এর ছাপ পড়ে। যার প্রভাব পড়ে তাদের মেজাজে।

ডগলাস বলেন, ‘আমাদের সমাজ ভোরে ওঠা মানুষদের দেখতে পছন্দ করে। যারা দেরিতে ওঠেন তারা বিষয়টি নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগেন।

‘আপনার দিনের উজ্জ্বলতাকে আরও দীর্ঘ করুন। একইভাবে দীর্ঘ হোক রাতের অন্ধকারও। ভোরে উঠুন, কফি খান। হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে কাজে যান। একই সঙ্গে সন্ধ্যা থেকে প্রযুক্তিনির্ভরতা কমিয়ে আনুন। এতে বিষণ্নতা কমবে। কমবে ঘুম নিয়ে দুশ্চিন্তাও।’

এ বিভাগের আরো খবর