ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে তাদের হটাতে জাতীয় স্তরে ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া (সিপিআইএম)।
পশ্চিমবঙ্গ ৩৪ বছর শাসনের পর রাজ্যের বিধানসভায় আসন না পাওয়া সিপিএম বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার কলকাতায় রাজ্য কমিটি নিয়ে বৈঠকে বসে। প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে বিমান বসুর সভাপতিত্বে দুই দিনের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসেন সিপিআইএম-এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।
বিজেপির পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলবিরোধী লড়াইও চলবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলায় তৃণমূলও জনগণের ওপর আক্রমণ নামিয়ে আনছে। এখানে তার প্রতিরোধ করতেই হবে। তবে জাতীয় স্তরে বিজেপিবিরোধী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ লড়াই সারা দেশের জন্য জরুরি।’
জাতীয় স্তরে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের প্রশ্নে সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘এক বছরের বেশি সময় ধরে মোদির বিরুদ্ধে আমরা ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে চলছি। গত তিন মাসে দুবার যৌথ বিবৃতি দিয়েছি। আমি খসড়া লিখেছিলাম। মমতা ব্যানার্জিরা সই করেছেন। এরপরও বিজেপিবিরোধী লড়াই নিয়ে এত বিভ্রান্তির কী আছে।’
পশ্চিমবঙ্গ প্রসঙ্গে ইয়েচুরির জবাব, ‘একেকটা জায়গার পরিস্থিতি একেক রকম। এক জায়গার লড়াইয়ের পদ্ধতি কপি করে তুলে এনে, আরেক জায়গায় পেস্ট করে দিলে সমাধান হয় না। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।’
ত্রিপুরায় সিপিএমের অবস্থান প্রসঙ্গে ইয়েচুরি স্পষ্ট জানান, ত্রিপুরায় তৃণমূল কই ছিল। তারা তো সবাই মিলে আগেই বিজেপিতে চলে গেছে। এখন মিডিয়াতে তৃণমূলকে দেখা যেতে পারে, কিন্তু ত্রিপুরার মাটিতে তৃণমূল নেই। ত্রিপুরায় গত তিন বছর ধরে বামফ্রন্ট লড়াই করছে। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বামপন্থিরাই আক্রান্ত বিজেপির হাতে।’
দলের দুর্বলতা নিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘সংগঠনের যে ত্রুটিগুলো চিহ্নিত হয়েছে তা সংশোধন করতে হবে। শাখা সংগঠনগুলোকে জীবন্ত করে সর্বস্তরে কমিটির প্রয়োজনীয় পুনর্গঠন করা হবে। জনগণের স্বার্থে নিয়মিত আন্দোলন ছাড়া কমিউনিস্ট পার্টির কার্যধারা পরিচালিত হতে পারে না।
‘আন্দোলনের যে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে, তা ব্যবহার করতে হবে। রাজ্যে এই আন্দোলন-সংগ্রামে বিজেপিবিরোধী, তৃণমূলবিরোধী শক্তিকে সংগঠিত করার প্রয়াস জারি থাকবে।’