বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, নাশকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীরা দেশ ও জনগণের শত্রু, কেউ যদি ভেবে থাকেন, এসব করে নির্বাচন বিলম্বিত বা ঠেকানো যাবে বা ফ্যাসিবাদকে ফিরিয়ে আনা যাবে, তবে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। জনগণের ঐক্যবদ্ধ শক্তির কাছে ওরা খড়কুটোর মতো ভেসে যাবে।
তিনি সোমবার বিকেলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট পৌর শহরের জয়িতা মহিলা মার্কেট চত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন ইউনিটের হালুয়াঘাট নিবাসী অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীদের জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলে যোগদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা যোগদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের স্বাগত জানান। যোগদানকারীরা এমরান সালেহ প্রিন্সকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অবশ্যম্ভাবী, হতেই হবে। অন্যথায় দেশ মহা বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে। নির্বাচনকে সফল, সার্থক ও অর্থবহ করতে সকলকে যার যার অবস্থান থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। নির্বাচনবিরোধী শক্তির মুখোশ উন্মোচন করে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যারা কোনো কিছু ঘটা মাত্রই বলে, ‘নির্বাচনের পরিবেশ নোই’, তাদের ভিন্ন মতলব আছে। আসলেও তারা নির্বাচন চায় না। আওয়ামী লীগের মতো তারা নিরপেক্ষ নির্বাচনকে ভয় পায়। নিজেদের ভরাডুবির আশঙ্কায় এবং বিএনপির অবশ্যম্ভাবী বিজয় ঠেকাতে কিছু দল অপতৎপরতা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, জনগণের মালিক মোকতার সেজে রেজিস্ট্রেশন ও মার্কা বিহীন দলের নেতারা যখন জিয়া পরিবারকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দেয় , তখন পাগলও হাসে। জিয়া পরিবারের সাথে বিএনপি ও জাতির আবেগ জড়িত। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জিয়া পরিবারের কয়েকজন ক্ষমতায় যাবে, একথা বলে বিএনপি ও জাতির আবেগে আঘাত করা হয়েছে। তিনি বলেন, জিয়া পরিবার এই দেশ ও জাতিকে যা দিয়েছে, ইতিহাসে তা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। ক্ষমতার জন্য জিয়া পরিবার লালায়িত নয়। নিজেরা লাভবান নয়, জিয়া পরিবার দেশ ও জনগণ লাভবান, ক্ষমতাবান করার রাজনীতি করে। স্বাধীনতার পর যা কিছু ভালো, কল্যাণকর, তার অধিকাংশই জিয়া পরিবারের হাত ধরে এসেছে। জিয়া পরিবার বহুদলীয় গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ভোটের অধিকার, জনগণের সার্বভৌমত্ব ও অর্থনৈতিক মুক্তির সোপান তৈরি করেছে, স্বাধীনতার মূলমন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে।
তিনি দলে যোগদানকারীদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামি ফ্যাসিবাদের নির্মম ও চরম দমন নিপিড়নের মুখে আন্দোলন যখন স্থবির হয়ে পড়ছিল, তখন তারেক রহমান ও বিএনপি গণঅভ্যুত্থানে নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করেছে।
সকল শ্রেণি পেশার ও রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনকে গণঅভ্যুত্থানে পরিণত করা বিএনপির প্রায় সাড়ে চার শতাধিক নেতা-কর্মী শহীদ হয়েছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের একক দাবিদার সেজে আওয়ামী লীগ যেমন নিজেদের মতো মুক্তিযুদ্ধের বয়ান তৈরি করত, এখন গণঅভ্যুত্থানের একক দাবিদার সেজে অভ্যুত্থানে নেতৃত্বের একাংশ নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে অভ্যুত্থান নিয়ে নিজস্ব বয়ান দেওয়া শুরু করেছে। বিএনপিকে অভ্যুত্থানের বিপক্ষে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করছে। তিনি বলেন, এসব কারণে ছাত্র অভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে নেতা-কর্মীরা পদত্যাগ করছেন, কিংবা বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন।
উপজেলা ছাত্র দলের আহ্বায়ক ও জেলা ছাত্র দলের সিনিয়র সহসভাপতি নাঈমুর আরেফিন পাপনের সভাপতিত্বে ও পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক নূরে আলম জনির সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বাবুল, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক হানিফ মোহাম্মদ শাকের উল্লাহ, সাবেক ছাত্র নেতা আসাদুজ্জামান আসিফ, সদস্য সচিব তাজবীর হোসেন অন্তর, উপজেলা ছাত্র দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম আর আল আমিন, যোগদানকারীদের পক্ষে ময়মনসিংহ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন রতন, সোহাগ মিয়া, রাকিব খান, হালুয়াঘাট উপজেলা এনসিপির সদস্য নাসির উদ্দিন বাপ্পী উপস্থিত ছিলেন।