চলতি শীত মৌসুমে প্রথমবারের মতো হাজারি জাতের উচ্চ ফলনশীল লাউ চাষ করে সফল হয়েছেন নরসিংদীর প্রান্তিক কৃষকেরা। বাজারে এ লাউয়ের চাহিদা থাকায় ভালো দাম পেয়ে খুশি তারা। কম খরচে এবং কম সময়ে ফলন আসায় হাজারি লাউ চাষে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের।
নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে নরসিংদী জেলার ৬টি উপজেলায় ১০ হাজার ৪১৭ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক-সবজির চাষ করা হয়েছে। তার মধ্যে ১ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে লাউ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ টন।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার রায়পুরা উপজেলার অলীপুরা ইউনিয়নের কাঙ্গালীমারা গ্রামের কৃষক আলী হোসেন তার বাড়ির আঙিনায় ২০ শতাংশ জমিতে এ লাউ চাষ করেছেন। মাচায় ঝুলছে লম্বা সবুজ রঙের অসংখ্য লাউ। যেদিকে তাকানো যায়, শুধু লাউ আর লাউ। বাগানের এসব সবুজ কচি লাউ দেখলে যেকোনো মানুষের চোখ জুড়িয়ে যায়। আলী হোসেন জানান, তিনি জৈব সারের সঙ্গে সামান্য রাসায়নিক সার ব্যবহার করেছেন। এতে কীটনাশক ও রোগবালাইনাশক ওষুধ ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি। এ জন্য বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি বাগানের লাউ খেতে যেমন সুস্বাদু, বাজারেও এর চাহিদা অনেক বেশ। তিনি আরও জানান, বাড়ির আঙিনায় ২০ শতাংশ জায়গা সারা বছরই পড়ে থাকত। তার এক নিকটতম আত্মীয়ের পরামর্শে এ বছর স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার সহযোগিতা নিয়ে প্রথমবার হাজারি জাতের লাউ চাষ শুরু করেন। বাজার থেকে লাউয়ের বীজ সংগ্রহ করে গত শ্রাবণ মাসের প্রথম দিকে জমিতে রোপণ করেন।
নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ আজিজুল হক জানান, হাজারি লাউ একটি উচ্চ ফলনশীল জাত। এ জাতের লাউ রোপনের ৫-৭ দিনের মধ্যে চারা হয় এবং ৪২-৪৫ দিনের মধ্যে ফুল ধরতে শুরু করে। এছাড়া ৬০-৭০ দিনের মধ্যে বাজারজাত করা যায়। এ লাউ দেখতে খুব সুন্দর ও তরতাজা। খেতেও খুব সুস্বাসু। এছাড়া বাজারে এর চাহিদা এবং ফলন বেশি হওয়ায় এ লাউ চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। এ বিষয়ে কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।