বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জয়পুরহাটে জনপ্রতিনিধির স্বজনদের নামে দুস্থদের কার্ড

  • জয়পুরহাট প্রতিনিধি   
  • ৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১৮:১৭

গরিব, অসহায় ও দুস্থ নারীদের সহায়তার জন্য সরকারিভাবে চাল বরাদ্দের ভিডব্লিউবি (পূর্বে ভিজিডি) কর্মসূচি। প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল দেওয়ার এই কর্মসূচি দরিদ্র, দুস্থ নারীদের জন্য এক বড় সহায়তা। কিন্তু ভিডব্লিউবি দুস্থদের কার্ড নিয়ে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নে এই কর্মসূচির তালিকা ঘিরে উঠেছে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ।শুধু তাই নয়, চুড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হওয়ার পর শফিকুল ইসলাম বড়তারা ইউনিয়নের প্রতিটি সুবিধাভোগীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে প্রায় ৪৪ হাজার টাকা আদায়ও করেছেন। এসব টাকা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ও প্যানেল চেয়ারম্যান মিলে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে দাবি স্থানীয়দের।অভিযোগ উঠেছে, বড়তারা ইউনিয়নের ৩নং প্যানেল চেয়ারম্যান ও ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম প্রভাব খাটিয়ে তালিকায় নিজের স্ত্রীসহ দুই হালি আত্মীয়ের নাম ঢুকিয়েছেন। শুধু তাই নয়, প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কার্ড করে দেয়ার নামে প্রতিটি পরিবারের কাছ থেকে ২ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে।তালিকায় দেখা যায়, শফিকুল ইসলামের ভাবি, চাচি, মামি, খালাসহ নিকট আত্মীয়দের নাম ঢুকানো হয়েছে। যাদের কারও জমি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা পাকা বাড়ি রয়েছে। ফলে প্রকৃত অসহায় নারীরা তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন।প্রস্তুতকৃত তালিকা যাচাই করে দেখা যায়, ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের তালিকায় বড়তাড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যানের ৫নং ওয়ার্ডের ৫৩ জনের নাম রয়েছে। তালিকায় প্যানেল চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের স্ত্রী, ভাইয়ের স্ত্রী, চাচি, মামি ও খালার নাম দেখা গেছে। তাদের মধ্যে অনেকেরই ৬-৮ বিঘা ফসলী জমি, পাকা বাড়ি, পুকুরও আছে। তালিকার ২১২ ক্রমিক নম্বরে স্থান পাওয়া মাফুজা খাতুন ও ২৩০ নং সেলিনা খাতুন তার আপন বড় ভাইয়ের দুই স্ত্রী।২১০ নাম্বরে খোতেজা সম্পর্কে মামি এবং ২১৪ নাম্বরে রিমা বেগম, ২১৬ নাম্বরে আলেয়া বেগম, ২১৭ নাম্বরে আমেনা বেগম তার সম্পর্কে চাচি। ১৮২ নাম্বরে শেফালী বেগম সম্পর্কে খালা, ১৯১ নাম্বরে রাজিয়া সুলতানা সম্পর্কে ভাবী (চাচাত ভাইয়ের স্ত্রী)। এসবই তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যনের সাথে যোগসাজস করে করেছেন বলে দাবি এলাকাবাসীর।বড়তারা ইউনিয়নের বাঘাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর নুর বলেন, শফিকুল মেম্বার গরীবদের না দিয়ে আত্মীয়-স্বজনকে কার্ড দিয়েছে। টাকা ছাড়া সে কোনো কাজ করে না। আমরা এর বিচার চাই।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপকারভোগী বলেন, আমার কার্ড করার জন্য শফিকুল মেম্বার ৫ হাজার টাকা চেয়েছিল। না দিলে অন্য কাউকে করে দেবে। পরে দেখি তালিকায় তার আত্মীয়-স্বজনের নামই বেশি।ক্ষেতলাল উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা লায়লা নাসরিন জাহান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর শফিকুল ইসলামের স্ত্রী ও এক ডাক্তার ভাগ্নির নাম বাদ দেয়া হয়েছে। তাকে অফিসে ডেকে ভর্ৎসনা করা হয়েছে। নতুন করে কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।অভিযুক্ত ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তালিকা করেছে উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। এবারে তালিকায় আমাদের কোনো হাত নেই।এ বিষয়ে বড়তারা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের মুঠোফোনে বারবার ফোন করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আল জিনাত বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী তালিকা করা হয়েছে। কোথাও অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিভাগের আরো খবর