বগুড়ার সারিয়াকান্দির বিভিন্ন চলাঞ্চলে ফুটেছে নয়নাভিরাম কাশফুল, যা নীল মেঘের নিচে আলাদা সৌন্দর্যের সৃষ্টি করেছে। কাশফুলের শুভ্রতার ছোঁয়ায় আকৃষ্ট হচ্ছেন পর্যটকরা। ফুলের সাথে নিজেকে ক্যামেরাবন্দি করতে বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকরা ভিড় করছেন সারিয়াকান্দির যমুনা নদীর চরে।বগুড়া সারিয়াকান্দির ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে একটি ইউনিয়ন যমুনা নদী বিধৌত। তাই এ উপজেলার বিশালাকার চরাভূমি রয়েছে। এসব চরাভূমির ওপরে দিগন্ত বিস্তৃত নীল আকাশ। নীল আকাশের নিচেই ফুটে রয়েছে সারি সারি কাশফুল, যা প্রখর রোদের সাথে মিতালি করে এক ভিন্ন ধারার সৌরভ ছড়াচ্ছে, যে সৌন্দর্য আকৃষ্ট করছে প্রকৃতি প্রেমীদের। উপজেলার চরাঞ্চলে বিশালাকার কাশফুলের বাগান রয়েছে, সেখানে যেতে হয় নৌকাযোগে।তবে উপজেলার কালিতলা গ্রোয়েনবাঁধ, প্রেম যমুনার ঘাট এবং মথুরাপাড়া গ্রোয়েনবাঁধের সামনে জেগে ওঠা চরেও ফুটেছে কাশফুল। এসব পয়েন্টে হেঁটেই যাতায়াত করা যাচ্ছে অনায়াসে। তাই পর্যটকরা এসব পয়েন্টে কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এবং নিজেকে কাশফুলের সাথে ক্যামেরাবন্দি করতে ভিড় জমাচ্ছেন প্রতিনিয়নত। প্রতিদিন এসব পয়েন্টে শতশত তরুণ-তরুণীদের আগমন ঘটছে।বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর যমুনা বুকে জেগে ওঠা চর-কাজলা, বাটিয়া, শালুকা, কুড়িপাড়া, পাকুরিয়া, বাগবেড়, দিঘলকান্দি, মথুরাপাড়া, নাড়াপালাসহ বিভিন্ন কাশবনে শ্বেত-শুভ্র কাশফুল মুগ্ধতা ছড়িয়ে বাতাসের দোলায় ঢেউ খেলে যাচ্ছে। কাশফুল শুধু মুগ্ধতাই ছড়ায় না, এর অর্থনৈতিক নানা দিকও রয়েছে। কাশফুল ও এর পাতা মাটিতে ঝরে জৈবসার তৈরি করে, যা জমির উর্বরতা শক্তি বাড়ায়। সবুজ কাশ গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।কাশফুলের বাগানেই উপজেলার মহিষের বাথানের খাবারের একমাত্র অবলম্বন। প্রতি বছর শরৎকাল এলেই যমুনার তীরে জন্ম নেওয়া এসব কাশফুল নতুন করে প্রাণ এনে দেয় চরে। কাঠখোট্টা বালুচরে এ যেন এক নতুন সৌরভ। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে দোল খায় সাদা কাশফুল, বাতাসে দুলে দুলে জানান দেয় ঋতুর আগমন বার্তা। সূর্যের আলো ছড়িয়ে পড়তেই কাশফুলগুলো ঝলমল করে ওঠে এক অপার্থিব সৌন্দর্যে।উপজেলার পৌর এলাকার সিরাজুল ফুল বলেন, কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এ উপজেলায় প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষরা বিভিন্ন স্থান থেকে বেড়াতে আসেন। বিভিন্ন বয়সী এসব মানুষের মধ্যে তরুণ-তরুণীদের সংখ্যাই বেশি। তবে এ ফুল বেশিদিন থাকে না। ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যেই ফুলগুলো বাতাসের সাথে উড়ে যায়। অর্থাৎ কয়েকদিন পরেই এ ফুল আর দেখা যাবে না।সারিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান বলেন, কাশফুল এবং যমুনা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে বগুড়া জেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সারিয়াকান্দিতে পর্যটকদের আগমন ঘটে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তারা নির্বিঘ্নে এ উপজেলায় বিভিন্ন ধরনের সৌন্দর্য উপভোগ করে নিরাপদে বাড়িতে ফিরছেন।
সারিয়াকান্দিতে কাশফুল দেখতে দর্শনার্থীদের ভিড়
এ বিভাগের আরো খবর/p>