মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে সারের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে কৃষকদের কাছে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ডিলারদের বিরুদ্ধে। নিয়ম অনুযায়ী ক্যাশ মেমো দিয়ে সার বিক্রি করার কথা থাকলেও তা মানছেন না অনেক ডিলার। অভিযোগ রয়েছে, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি বস্তায় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি নিচ্ছেন তারা। এমনকি অপরাধ ঢাকতে ক্যাশমেমোতে সঠিক দাম লিখলেও ক্যাশমেমোর পেছনে অতিরিক্ত দাম লিখে বস্তাপ্রতি ২০০/২৫০ টাকা নিচ্ছে। আর সেইসাথে অপ্রয়োজনীয় কিটনাশক জোর করে চাপিয়ে দিচ্ছে। কিটনাশক না নিলে বাড়তি আরও ২০০ টাকা জোর করেও নিচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর উপজেলার চরাঞ্চলে সারের বেশি চাহিদা বলে ডিলার থাকতেও ঝিটকা, আন্ধারমানিক, লেছড়াগঞ্জ, কান্ঠাপাড়া বাজার থেকেও বাধ্য হয়ে সার নিতে হচ্ছে কৃষকদের।
উপজেলার লেছড়াগঞ্জ চর, আজিমনগর, হারুকান্দিসহ কয়েকটি ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডিলারদের সিন্ডিকেট আর লুটপাটে অসহায় কৃষকের আর্তনাদ যেন কেউ দেখার নেই। অথচ উপজেলা ভিত্তিক প্রতি ইউনিয়নের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সারের খুচরা ডিলার থাকলেও বড় ডিলারদের সিন্ডিগেটে খুচরা ডিলাররা অসহায় আর লুটপাটের কাছে হেরে যাচ্ছে।
পাটগ্রামের কৃষক সুমন মিয়া জানান, প্রতিবস্তা ইউরিয়া সারের ১৩৫০ টাকা সরকারি দামে থাকলেও আজ আমি ঝিটকা বাজার থেকে ‘মেসার্স পলাশ ট্রেডার্স’ বস্তাপ্রতি ১৫০ টাকা করে বেশি রাখে। আর এমওপি বস্তাপ্রতি ১ হাজারের পরিবর্তে ১১৫০ আর ডিএপি ১২শ টাকা রাখে। ক্যাশমেমোতে লেখা সঠিক থাকলেও অপরপাতায় ১৫০/২০০ টাকা করে বেশি রেখেছে। তাছারা কিটনাশক নিতেও বাধ্য করেছে আমাকে। এরকম ঝিটকা বাজারে গত দুইবছর যাবৎ চলছে নিয়মিত। আর কোথাকার ডিলার কোথায় হতে সার বিক্রি করে, সেটাও আমরা বুঝতে পারিনা।
আরেক কৃষক রনি মিয়া বলেন, সারের বাড়তি দামে আমাদের মতো কৃষকদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। মৌসুমের শুরুতেই স্থানীয় বাজার থেকে সরকারি দামের চেয়ে কেজি প্রতি ২ থেকে ৫ টাকা বেশি দিয়ে সার কিনতে হচ্ছে, যা উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। আমরা আর কৃষি কাজ করুম না।
লেছড়াগঞ্জের কৃষক হারুনার রশিদ বলেন, ঝিটকা বাজারের সারের ডিলারেরা আমাদের জিম্মি করে গত এক বছরেই কোটিপতি হয়ে গেছে। তারা ঘাম ঝরানো অসহায় কৃষকের রক্ত চুষে খাচ্ছে। দেখার কেউ নেই। দেশে বিভিন্ন দলের দলীয় নেতা মস্তান আছে, তারা পদ পদবী পেয়ে আমাদের মত অসহায় কৃষকের পাশে নেই।
ঝিটকা বাজারের কয়েকজন সারের ডিলারের সাথে বক্তব্যের জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে, তারা জানান, এসে দেখা করেন। আর সাংবাদিক পরিচয় দিলে রং নাম্বার বলে ফোন কেটে দেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান জানান, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রয়ের সুযোগ নেই। আমরা মনিটরিং করছি নিয়মিত। অ্যাসিল্যিান্ডের সাথে কথা বলে অতি দ্রতই ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। যারা সারের দাম বেশি নেবে, তাৎক্ষনিকভাবে আমরা জানতে পারলে সাথে সাথেই ব্যবস্থা গ্রহণ