ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝিকাড়ায় অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে (২০২৩ সালে)। কিন্তু ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্তও দৃষ্টিনন্দন তিনতলা এ ভবনটি তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
কমপ্লেক্সের ভেতরে রয়েছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সম্বলিত স্মৃতিফলক। ভবনের প্রথম তলায় মার্কেট, দ্বিতীয় তলায় অফিসের জন্য ছয়টি কক্ষ এবং তৃতীয় তলায় একটি সম্মেলন কক্ষ নির্মিত হয়েছে।
২০১২ সালে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনায় ৬৪ জেলার ৪২১টি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। প্রথমে ২০১৫ সালের জুনে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পের মেয়াদ দুই দফা বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুনে শেষ করা হয়। প্রতিটি ভবন নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
যদিও ২০২৪ সালে সারাদেশে ৩৪টি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স একসঙ্গে উদ্বোধনের পরিকল্পনা ছিল, তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। এদিকে নবীনগরের মুক্তিযোদ্ধারা বর্তমানে পৌর ভবন সংলগ্ন অফিসে স্থান সংকুলান ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
অপরদিকে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক এই ভবনটি দীর্ঘদিন তালাবদ্ধ থাকায় ভাঙচুর ও ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে। ভাঙা জানালার কাঁচ, ক্ষতিগ্রস্ত শাটার, বৃষ্টির পানি জমা, এমনকি একমাত্র নলকূপ চুরি হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। মূল গেইট না থাকায় ভবন এলাকায় অবাধে যাতায়াত করছে সাধারণ মানুষ।
নীতিমালা অনুযায়ী এই ভবনের ভাড়া থেকে শতকরা ১৫ ভাগ ব্যয় হবে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে এবং বাকি ৮৫ ভাগ জমা হবে সরকারি কোষাগারে। কিন্তু উদ্বোধনে বিলম্বের কারণে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি ভবনটিও ধীরে ধীরে অকার্যকর হয়ে পড়ছে।
এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার সামসুল আলম বলেন—
“আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ভবনটি বুঝে পাওয়ার দাবি জানিয়েছি। তিনি জানিয়েছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে অচিরেই ভবনটি বুঝিয়ে দেওয়া হবে।”
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিব চৌধুরী বলেন—
“ভবনটি সংস্কারের পর শিগগিরই উদ্বোধন করে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য চিঠি এসেছে। দ্রুতই তা করা হবে।”