ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজারে জমে উঠেছে আমনের চারার (জালার) হাট। শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে রোপা আমন ধান রোপণের মৌসুমে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে কৃষকরা এ বাজারে ভিড় করছেন চারা কেনার জন্য।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই হাটে ধানের চারা বেচাকেনা শুরু হয়। কৃষকরা নিজেদের বীজতলা থেকে চারা তুলে আটি বেঁধে হাটে নিয়ে আসছেন। প্রতিটি আটি প্রকারভেদে ৭০ টাকা থেকে শুরু করে ১৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
মুরাদনগর উপজেলার হাটখলা থেকে আসা কৃষক রমজান আলী জানান, “আমাদের এলাকায় পানি সংকট থাকায় রোপা আমনের চারা বপণ করা সম্ভব হয়নি। তাই বাঙ্গরা বাজারে এসেছি। কাঙ্ক্ষিত চারা পেয়েছি, দামও নাগালের মধ্যে। দুই বিঘা জমির জন্য চারা কিনেছি।সাতমোড়া থেকে আসা কৃষক কুদ্দুস মিয়া বলেন, “বিভিন্ন এলাকা থেকে চারা তুলে এখানে বিক্রি করেন বিক্রেতারা। আমরা তুলনামূলক কম দামে চারা পাই বলেই এখানে আসি।চারা বিক্রেতা রহিম মিয়া জানান“বিআর-২২, ৪৯, ৫০, খাসা, কালিজিরাসহ বিভিন্ন জাতের ধানের চারা বেশি বিক্রি হচ্ছে। ইব্রাহিমপুর ও রতনপুর থেকে পাইকাররাও এসে চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।আরেক কৃষক দুলাল মিয়া বলেন,“এবার চারার দাম ভালো। প্রতি বিঘা জমির জন্য খরচ পড়ছে ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত।”
এ হাটে শুধু নবীনগর নয়, পার্শ্ববর্তী কসবা ও অন্যান্য উপজেলার কৃষকরাও চারা কিনতে আসছেন, ফলে বাজারে সরগরম ভাব বিরাজ করছে। এতে স্থানীয় কৃষকরা আর্থিকভাবে উপকৃত হচ্ছেন।
নবীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম লিটন বলেন, “চলতি মৌসুমে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ৬৭৫০ হেক্টর। ইতিমধ্যে ৫৫৭০ হেক্টরে চারা রোপণ শেষ হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই বাকি আবাদ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। যথেষ্ট বীজতলা থাকায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই জমজমাট চারা হাট ও কৃষকদের ব্যস্ততা যেন নতুন ফসলের সম্ভাবনায় ভরে উঠেছে।