রাঙামাটি শহরের শিশু পার্কে কাপ্তাই লেকের মাঝখানে নির্মিত আধুনিক ওয়াচ টাওয়ার ইতিমধ্যেই পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পরিচালিত এই শিশু পার্কে টাওয়ারটি ঘিরে এখন বাড়ছে পর্যটকের ভিড়। স্থানীয়রা এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ভ্রমণপিপাসুরা বলছেন, ওয়াচ টাওয়ার রাঙামাটির পর্যটনে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২০২৬ অর্থবছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় তিনতলা বিশিষ্ট ওয়াচ টাওয়ার ও ওয়াকওয়ে। এর দৈর্ঘ্যে ২৭৮ ফুট ও প্রস্থে ৮ ফুটের এই টাওয়ারে উঠে চোখ মেলে দেখা যায় এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদ ও আশপাশের পাহাড়ি সৌন্দর্য।
শিশু পার্কে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা মো. জাকির হোসেন বলেন, “সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে পরিবার ও বাচ্চাদের নিয়ে শিশু পার্কে আসি। কিন্তু আজ ওয়াচ টাওয়ারে উঠে কাপ্তাই লেকের অপার সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত হয়ে গেলাম। এটি রাঙামাটির পর্যটনের জন্য এক নতুন সংযোজন।”
স্থানীয় পর্যটক রিয়া সেন বলেন, “আমি আগে অনেকবার কাপ্তাই লেকে ঘুরেছি, কিন্তু এত সুন্দর ভিউ একসাথে কখনো দেখিনি। এখানে দাঁড়িয়ে মনে হয় পুরো রাঙামাটিই চোখের সামনে।”
চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা শাহেদুল ইসলাম জানান, “ওয়াচ টাওয়ারে দাঁড়িয়ে কাপ্তাই লেকের দৃশ্য ক্যামেরায় বন্দি করেছি। এটি শুধু পর্যটকদের নয়, পুরো রাঙামাটির জন্যই এক নতুন সংযোজন।”
এদিকে, পাহাড়ের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সিএইচটি ট্যুরিজম অ্যান্ড কালচার রিসার্চ সেন্টার-এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, “ওয়াচ টাওয়ারটি শুধু রাঙামাটির নয়, পুরো পাহাড়ি অঞ্চলের পর্যটন খাতকে আরও এগিয়ে নেবে। এতে দেশি-বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ বাড়বে।”
রাজশাহী থেকে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মোহনা আক্তার বলেন, “রাঙামাটির পাহাড়-নদী-লেকের সমন্বয় সবসময় আমাকে টানে। ওয়াচ টাওয়ারে উঠে মনে হলো আমি যেন আকাশের আরও কাছে চলে এসেছি।”
এ প্রসঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা বলেন, “শিশু পার্কে ওয়াকওয়ে ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে পর্যটন শিল্পকে আরও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে। এখানে দাঁড়িয়ে পর্যটকেরা কাপ্তাই লেক ও পাহাড়ের প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন, যা রাঙামাটির পর্যটন বিকাশে বড় ভূমিকা রাখবে।”
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, শিশু পার্কের ভেতরে লেকের মাঝখানে নির্মিত এই ওয়াচ টাওয়ার রাঙামাটিকে নতুনভাবে পরিচিত করবে দেশি-বিদেশি ভ্রমণপিপাসুদের কাছে।