বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গোপালগঞ্জে কারফিউ অব্যাহত: জনমনে আতঙ্কের মধ্যে মামলা

  • ইউএনবি   
  • ১৮ জুলাই, ২০২৫ ২০:১৯

গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় গোটা জেলায় কারফিউ জারির আজ তৃতীয় দিন। সর্বত্র বিরাজ করছে থমথমে অবস্থা। জনমনে বাড়ছে আতঙ্ক। শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকাল থেকেই দেখা যায়, জেলা শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রায় ফাঁকা। দু-একটি ছোট যানবাহন ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়েনি।

বুধবারের সংঘর্ষের ঘটনায় গোপালগঞ্জ সদর থানায় পুলিশের কাজে বাধা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটনায় মামলা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। আজ গোপালগঞ্জ থানার মামলাটি দায়ের করা হয়।

সূত্র জানায়, এ মামলায় ৭৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এ পর্যন্ত ৪৫ জনকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কাউকে ছাড় না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

কারফিউ চলায় শহরের ছোট-বড় সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এখনও বন্ধ রয়েছে। এর ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতা এবং সেবাপ্রত্যাশীরা। ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। গোটা গোপালগঞ্জে এখনও থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।

আজ সকাল থেকে বিভিন্ন সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের তৎপরতা বাড়তে শুরু করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায়।

কারফিউ আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। তবে ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত শিথিল থাকবে। এরপর সন্ধ্যায় পরিস্থিতি বিবেচনা করে কারফিউ শিথিল অথবা বাড়ানো হতে পারে।

এর আগে, বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে ২২ ঘণ্টার কারফিউ শুরু হয়। চলে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে কারফিউর সময় আরও ২৪ ঘণ্টা বাড়িয়ে শুক্রবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত করা হয়। পরিস্থিতি বিবেচনা করে কারফিউয়ের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।

এ সময় ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, গোপালগঞ্জে বুধবারের (১৬ জুলাই) সহিংসতায় চারজন নিহত এবং ৪৫ জন পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকসহ প্রায় অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। উচ্ছৃঙ্খল জনতা নিহত ৪ জনের লাশ পোস্ট মর্টেম করতে না দিয়ে জেলা হাসপাতাল থেকে জোরপূর্বক নিয়ে যায় বলে জানান।

শুক্রবার (১৮ জুলাই) গভীর রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন যত অবস্থায় রমজান নামের আরও একজনের মৃত্যু হয় এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ জনে দাঁড়িয়েছে।

উল্লেখ্য, সারা দেশে মাসব্যাপী পদযাত্রার অংশ হিসেবে বুধবার গোপালগঞ্জে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতারা। এর আগে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাতে তারা এটিকে ‘লং মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ হিসেবে নামকরণ করেন। এরপর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গোপালগঞ্জের স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এটি প্রতিহতের ঘোষণা দেন।

এনসিপির নেতাদের গাড়িবহর গোপালগঞ্জে যাওয়ার পথে পথে বাধা পায়। সকালে পুলিশ এবং ইএনওর গাড়িতে হামলা চালানো হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের দায়ী করা হয়।

দুপুরে গোপালগঞ্জের পৌর পার্কে এনসিপির সমাবেশস্থলে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। হামলার কিছুক্ষণ পর সেখানে পৌঁছান এনসিপির নেতারা। তারা সেখানে স্লোগান ও বক্তব্য দেন। সমাবেশ শেষে তারা মাদারীপুরের উদ্দেশে রওনা দিলে তাদের গাড়িবহর ঘিরে হামলা করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এনসিপি নেতাদের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ বাঁধে। এতে এখন পর্যন্ত ৫ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।

এ বিভাগের আরো খবর