সব সময় বিভ্রান্তিকর রাজনীতি করা একটি দল এখন ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ।
তিনি শুক্রবার (১৮ জুলাই) এক সমাবেশে বলেন, ‘তারা একসময় স্বাধীনতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল, পরে জনগণ বা তাদের অনুভূতির বিরুদ্ধে গিয়েছিল। তারা এখন গোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। আমি তাদের নাম বলব না- আপনারা বুঝতেই পারছেন আমি কাদের কথা বলছি।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির এক পদযাত্রার বক্তব্যে সালাহউদ্দিন আহমেদ এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, দেশের সংসদ নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবি করা এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার উপর জোর দেওয়া দলগুলোর কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, তাদের একটি খারাপ উদ্দেশ্য রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘যারা বাংলাদেশে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি তুলছেন - তাদের একটি খারাপ উদ্দেশ্য রয়েছে।’
চরমোনাইর পীরের প্রতিষ্ঠিত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ না করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যে দলটি ১৬ বছর ধরে হাতপাখা (আইএবির নির্বাচনী প্রতীক) দিয়ে আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করেছিল, তারা এখন দাবি করছে যে পিআর ব্যবস্থা ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়।’
জামায়াতের নাম না নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে সবসময় বিভ্রান্তিকর রাজনীতিতে লিপ্ত থাকা আরেকটি দল তাদের (আইএবি) সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এই পিআর ব্যবস্থা বোঝে না।
তিনি বলেন, একজন প্রার্থী একটি নির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকা থেকে নির্বাচিত হয় এবং সংসদ সদস্য (এমপি) হয়—জনগণ এমন একটি ব্যবস্থাকে বোঝে। সেই সংসদ সদস্য জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, স্থানীয় সমস্যা সমাধানে কাজ করেন এবং আইন প্রণয়নে অংশগ্রহণ করেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কিন্তু পিআর ব্যবস্থায়, আপনি মিরপুরে আমিনুলকে ভোট দিতে পারেন এবং সন্দ্বীপের বাবুলকে আপনার এমপি হিসেবে পেতে পারেন। এই দেশের মানুষ এই ব্যবস্থা সম্পর্কে জানে না এবং চায়ও না।’
সালাউদ্দিন বলেন, আদালতের রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল করা হয়েছে এবং তিন মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক ক্ষমতা তাদের রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এই নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী প্রশাসনকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার হিসেবে বিবেচনা করি। আপনাদের একমাত্র দায়িত্ব হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সংসদ নির্বাচন নিশ্চিত করা। স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের কোনো কর্তৃত্ব আপনাদের নেই।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, সুতরাং, যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে অনুষ্ঠিত করার জন্য চাপ দিচ্ছেন, তারাই বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে জাতীয় নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছেন।