প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তিনি পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের অংশ হতে আগ্রহী নন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, তাদের কাজ হলো নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে সুষ্ঠুভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করা।
নির্বাচনের পরে দায়িত্ব গ্রহণকারী পরবর্তী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের অংশ হওয়ার কোনো ইচ্ছা তার আছে কিনা এবং কোনো পদে থাকবেন কিনা—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. ইউনূস বলেন, ‘কোনো উপায় নেই, কোনো উপায় নেই। আমার মনে হয়, আমাদের উপদেষ্টা পরিষদের কোনো সদস্য এটি করতে চান না।’
অধ্যাপক ইউনূস স্পষ্টভাবে বলেন, তাদের কাজ হলো ক্ষমতা হস্তান্তর সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার সময় জনগণ যাতে খুশি হয়—তা নিশ্চিত করা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’
প্রশ্নোত্তর পর্বের পর তিনি লন্ডনের চ্যাথাম হাউসের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সে তিনি আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আওয়ামী লীগ যদি তরুণদের হত্যা, গুম করতে এবং অর্থ চুরি করতে পারে। তাই একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের পরিচয় নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আপনি কি এখনও এটিকে রাজনৈতিক দল বলবেন? তাহলে, এটি একটি বিতর্কিত বিচার নয়।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তারা মনে করেন, ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় সেই অধ্যায় বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু যারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন (আওয়ামী লীগ) - তাদের কেউই ভুল স্বীকার করেননি বরং তারা জনগণকে উত্তেজিত করছেন।
তিনি বলেন, জাতি আপাতত দেশের নিরাপত্তা ও রাজনীতির সুরক্ষায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত থাকবে। আমরা কেবল এটাই করেছি।’
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অতীতে গণমাধ্যম কখনও এত স্বাধীনতা ভোগ করেনি।
আরেকজন সাংবাদিক ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরটি ‘সিটি করপোরেশনের বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা’ এবং ‘প্রশাসনের নীরবতা’ ও কিছু দল বা ব্যক্তির জমায়েত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
উত্তরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অনেক বিষয় ও প্রশ্ন একসঙ্গে এসেছে এবং তারা সবকিছু সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেননি। ‘এটা এমন এক সময় ছিল—যা আমরা অতিবাহিত করেছি। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল এবং এখন বিষয়গুলো শৃঙ্খলায় এসেছে...। দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা আমাদের জন্য একটি বড় কাজ ছিল।’