কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে টানা দুই দিন ধরে পানি না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসা নিতে আসা শত শত রোগী ও তাদের স্বজনরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, রোববারের মধ্যেই সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
রোগী নিয়ে গত তিন দিন ধরে হাসপাতালে আছেন নিকলী উপজেলার সিংপুর গ্রামের বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘বাথরুমে পানি নেই। ময়লা আর দুর্গন্ধে আশপাশেও থাকা যাচ্ছে না। রোগী বা সাথের কারও বাথরুমে যেতে হলে নিচ তলায় যেতে হচ্ছে।’
তিনি জানান, এ অবস্থায় রোগীর চিকিৎসায় সময় দেবেন নাকি পানি আনতে দৌড়াবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না।
হাসপাতালে রোগী নিয়ে এসেছেন সদর উপজেলার নীলগঞ্জের বাসিন্দা জুবেদা খাতুন।
তিনি রোববার সকালে বলেন, ‘অসুস্থ মানুষ সুস্থ হওয়ার জন্য হাসপাতালে আসে। আর এ হাসপাতালের যে পরিবেশ, তাতে একজন সুস্থ মানুষও অসুস্থ হতে সময় লাগবে না।’
৫৫ বছর বয়সী এ নারী জানান, লিফট থাকলেও সেটার ব্যবহার না জানায় বারবার সিড়ি বেয়ে নিচে নামতে হচ্ছে তার।
জেলা সদর উপজেলার কাটাবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের সমস্যার দিক একটুও চিন্তা করেন না।’
চিকিৎসার ক্ষেত্রে রীতিমতো অবহেলার শিকার হচ্ছেন দাবি করে এ যুবক বলেন, ‘এখানে নামমাত্র সেবা প্রদান করা হচ্ছে। কারও কোনো সমস্যা হলে সময়মতো ডেকেও ডাক্তার পাওয়া যায় না।’
সদর উপজেলার কাশোরারচর এলাকার বাসিন্দা আবদুল কাদির বলেন, ‘দৈনন্দিন জীবনে সবচেয়ে প্রয়োজন পড়ে পানির। কিন্তু এখানে সেই ব্যবস্থাটাই নেই। একটা মানুষ জরুরি প্রয়োজনে বাথরুমে গিয়ে যখন দেখেন পানিটাই নাই, তখন কোন ধরনের সমস্যায় পড়েন, সেটা তো বুঝতেই পারছেন।
‘এ সমস্যাটা কিছুক্ষণের জন্য হলে হতেই পারে। সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু টানা দুই দিন যাবত এই হাসপাতালে পানি নেই। অথচ কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথা নেই।’
জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভারপ্রাপ্ত) তত্ত্বাবধায়ক ডা. নূর মোহাম্মদ শামসুল আলম সমস্যার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, ছয় তলায় ১০ ঘোড়ার একটি বড় মোটর রয়েছে। ২০২০ সালে লাগানো মোটরটি প্রায়ই সমস্যা করে। কিন্তু এবার একেবারে বিকল হয়ে যাওয়ায় পানির সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আজকের মধ্যেই সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।