ঠাকুরগাঁও রোড রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ট্রেনে কাটা পড়ে মানুষের মৃত্যু ঠেকানোর পাশাপাশি যাত্রীদের অধিকার রক্ষার জন্য ১০ দফা দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও রোড রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে শনিবার দুপুরে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন যাত্রী অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহাবুব আলম রুবেল।
এ কর্মসূচি ১৫ দিন পর্যন্ত চলবে। ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক, রাজনীতিক, সংস্কৃতিকর্মী, শিক্ষার্থীসহ অনেকেই বক্তব্য দেন এবং বিভিন্ন দাবির কথা তুলে ধরেন।
ঠাকুরগাঁওয়ের সংবাদকর্মী মজিবর রহমান খান বলেন, ‘এই প্ল্যাটফর্মে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমার দাবি এখানে দুইটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। এখানে দুর্ঘটনা রোধে একটি ওভারব্রিজ নির্মাণ করা জরুরি।’
সাংবাদিক তানভীর হাসান তানু বলেন, ‘এ দাবি কোনো ব্যক্তির স্বার্থে নয়; এ দাবি আমাদের সকলের। পরিকল্পিতভাবে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের কাজ না হওয়ায় এখানে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে; মানুষ মরছে।’
সাংবাদিক সোহেল রানা বলেন, ‘এই প্ল্যাটফর্মের দিকে তাকালেই আপনারা দেখবেন বিগত সময়ে এখানে অপরিকল্পিত কাজ হয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মের ডিজাইন কী ছিল, আমাদের অজানা। এখাসে ট্রেন থেকে ওঠানামা করতে যাত্রীদের দুর্ভোগ হয়।
‘প্ল্যাটফর্মে ট্রেন দাঁড়ালে অনেক ফাঁকা থাকে। ফলে অনেকে পিছলে পড়ে ট্রেনের নিচে পড়ে এবং মৃত্যু ঘটে। ট্রেন বাঁশি না বাজিয়ে অনেক সময় ছেড়ে দেয়। এতেও ঘটে দুর্ঘটনা। আমরা যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বলছি। আশা করি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।’
সাংবাদিক মঈনুদ্দীন তালুকদার হিমেল বলেন, ‘এখানে টিকিটের কালোবাজারি হয়। এটি একটি বড় সমস্যা। আমরা এ কালোবাজারিদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবের দাবি জানাই। আমরা যাত্রীদের সুবিধার্থে বগি অনুযায়ী নাম্বার প্লেটের দাবি জানাই।’
সংস্কৃতিকর্মী রেজওয়ানুল হক রেজু বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। সম্প্রতি এই প্ল্যাটফর্মে এসব সমস্যার কারণে একাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সমস্যাগুলো সমাধান না হলে এ সংখ্যা আরও বাড়বে। আমরা আর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু দেখতে চাই না।’
যাত্রী অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহাবুব আলম রুবেল দাবিগুলো উত্থাপন করে বলেন, ‘ঠাকুরগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রী দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বৃদ্ধি করে ট্রেনের বগির দরজার সমান করতে হবে। প্ল্যাটফর্ম ও ট্রেনের বগির মধ্যকার ফাঁকা স্থান পূরণ করতে প্ল্যাটফর্ম প্রশস্ত করতে হবে। ঠাকুরগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের বিরতির সময় বর্তমান ৩ মিনিট থেকে বাড়িয়ে ৫ মিনিট করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ট্রেন হুইসেল দেওয়ার পর সাথে সাথে না ছেড়ে মিনিমাম ৩০ সেকেন্ড পর ছাড়া, যাত্রীদের নিজ বগির অবস্থান বোঝার জন্য প্ল্যাটফর্মে ট্রেনের সকল বগির নাম্বার সঠিক জায়গায় ঝুলিয়ে রাখতে হবে। ট্রেন প্ল্যাটফর্মে আসার ঠিক আগ মুহূর্তে স্টেশনের মাইকের মাধ্যমে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের ট্রেনে ওঠানামা করতে গিয়ে যে দুর্ঘটনাগুলো হয়, সে বিষয়ে সতর্ক করা। রাতে গোটা প্ল্যাটফর্মে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘টিকিট কালোবাজারি বন্ধে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে এবং দুই প্ল্যাটফর্মের মাঝে একটি ওভারব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। আমরা গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শেষে সংশ্লিষ্টদের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করব।’