বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘পালিয়ে গিয়ে হাসিনা ভারত থেকে ষড়যন্ত্র করছেন। মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন। সতর্ক থাকুন, দেশকে কেউ যেন বিভক্ত করতে না পারে।’
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার সাকোয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে রোববার বিকেলে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
জনসভায় উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখানে অন্য অনেকের সঙ্গে আমাদের হিন্দু ভাইয়েরা বসে আছেন। এই দেশে নাকি আপনাদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। নির্যাতন হচ্ছে। কারও কারও কাছে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে। আপনারা বলুন তো এরকম কোথাও কি হয়েছে? হয়নি। আমরা এ অঞ্চলের মানুষ শান্তিপ্রিয়। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান- এখানে আমরা সবাই একসঙ্গে শান্তি-সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করি।’
তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী শেখ হাসিনাকে দুটি চয়েজ দিয়েছিল। দুটির মধ্যে তিনি একটিকে বেছে নেবেন। একটি হচ্ছে চারদিক দিক থেকে বিপুলসংখ্যক জনগণ আসছে, উত্তাল সমুদ্রের মতো। তাদের দ্বারা পিষ্ট হবেন, নাকি জান বাঁচানোর জন্য পালিয়ে যাবেন।
‘তিনি বলতেন- আমি পালাই না, আমি ভয় পাই না। আর সেই মহিলা জীবন বাঁচানোর জন্য নেতাকর্মীসহ সবাইকে বিপদে ফেলে পালিয়ে গেছেন। এই হচ্ছে ফ্যাসিবাদের পরিণতি।’
প্রশ্ন তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত ১৫টি বছর কেউ ভোট দিতে পেরেছেন? পারেননি। আমরা সব জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। দেশকে গড়ে তুলতে চাই।
‘শেখ হাসিনা নির্বাচনের নাম করে ক্ষমতায় যান। পরে গুম-খুন করে তিনি জোর করে ক্ষমতায় ছিলেন। এটাই হচ্ছে ফ্যাসিবাদী সরকার। ফ্যাসিবাদীদের ষড়যন্ত্র চলছে। তারা দেশকে বিভক্ত করতে চায়। তাদের সব অপচেষ্টা প্রতিহত করতে দেশের মানুষকে এক হয়ে লড়তে হবে।’
জনসভা উপলক্ষে রোববার সকাল থেকেই নেতাকর্মীর ঢল নামে বোদা উপজেলার সাকোয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে। দুপুরের মধ্যেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় জনসভা স্থল। সনাতন ধর্মাবলম্বী, উপজাতি সম্প্রদায়সহ সর্বস্তরের মানুষ যোগ দেন এই জনসভায়।
বোদা-দেবীগঞ্জ উপজেলা ও পঞ্চগড় পৌর বিএনপি আয়োজিত এই জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি নির্বাহী কমিটির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ।
জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন, সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তজার্তিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার মোহাম্মদ নওশাদ জমির, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম, সদস্য সচিব আব্দুল বারি, জেলা যুবদল সভাপতি ফেরদৌস ওয়াহিদ রাসেল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবার রহমান প্রমুখ।