বাংলাদেশের ৫৯ শতাংশ মানুষ পাকিস্তানকে পছন্দ করেন। এর বিপরীতে নিকট প্রতিবেশী ভারতকে পছন্দ করেন ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশ বাংলাদেশি।
ভয়েস অফ আমেরিকার এক জরিপে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে। অক্টোবরের ১৩ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত দেশব্যাপী জরিপটি পরিচালনা করা হয়।
জরিপে এক হাজার উত্তরদাতাকে কয়েকটি নির্দিষ্ট দেশকে ১ থেকে ৫ ক্রমিকে ‘ভোট’ দিয়ে তাদের মতামত জানাতে বলা হয়। স্কেলের ১ ও ২ মিলে হয় ‘পছন্দ’ আর ৪ ও ৫ মিলে ‘অপছন্দ।’
উত্তরদাতাদের ৫৯ শতাংশ পাকিস্তানকে ‘পছন্দ’ স্কেলে বাছাই করেন। অন্যদিকে ভারতের ‘পছন্দ’ স্কোর ছিল ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
তবে দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই চরম প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ দুটোর মধ্যে ‘অপছন্দ’ স্কেলে বেশ বড় ব্যবধান লক্ষ্য করা যায়।
জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, উত্তরদাতাদের ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ পাকিস্তানকে ‘অপছন্দ’ করে মত দেন। অন্যদিকে ভারতের ‘অপছন্দ’ স্কোর ছিল ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ।
জরিপটি ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলার এডিটোরিয়াল নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালনা করে গবেষণা ও জরিপ প্রতিষ্ঠান ওআরজি-কোয়েস্ট রিসার্চ লিমিটেড।
ভয়েস অফ আমেরিকার ঠিক করে দেয়া সুনির্দিষ্ট (ক্লোজ এন্ড) প্রশ্নমালার ওপর ভিত্তি করে কম্পিউটার এসিস্টেড টেলিফোন ইন্টারভিউইংয়ের মাধ্যমে দেশের আটটি বিভাগে ১৮ বছর বা এর চেয়ে বেশি বয়সী এক হাজার মানুষের মধ্যে জরিপটি পরিচালিত হয়।
বাংলাদেশের জনতত্ত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জরিপের এক হাজার উত্তরদাতা বাছাই করা হয়। সেখানে সমান সংখ্যক নারী ও পুরুষ ছিলেন, যাদের মধ্যে ৯২ দশমিক ৭ শতাংশ ছিলেন মুসলিম।
ভারত ও পাকিস্তান সম্পর্কে জরিপে প্রকাশিত মতামতে ধর্মের ভিত্তিতে পার্থক্য দেখা যায়। মুসলিম উত্তরদাতাদের মধ্যে ৪৪ দশমিক ২ শতাংশ ভারতকে ‘অপছন্দ’ করে মত দেন। অন্যদিকে অমুসলিম উত্তরদাতাদের মাত্র ৪ দশমিক ২ শতাংশ ভারতকে ‘অপছন্দ’ করেন।
সার্বিকভাবে ভারত ও পাকিস্তান ‘পছন্দ’ স্কেলে প্রায় সমান হলেও, ‘অপছন্দের’ স্কেলে ভারতের পাল্লা বেশি ভারি। এর কারণ হিসেবে অনেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের ভূমিকাকে দায়ী করেন।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব বিভিন্ন গোষ্ঠীর কর্মসূচিতে প্রকাশ পাচ্ছে।
এদিকে গত ৫ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধান সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, দিল্লির সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক এখন ‘নিম্ন পর্যায়ে’ পৌঁছেছে। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে ভারত শুধু একটি দল, আওয়ামী লীগের ওপর নির্ভর করেছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট থেকে ভারতে আছেন। ভারত সরকার তার জন্য ভিআইপির মর্যাদা এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়টি বাংলাদেশের অনেকে ‘অবন্ধুসুলভ আচরণ’ বলে মনে করছে।