বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সংস্কারে অসমাপ্ত ও অপরিহার্য বিষয়কে গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান দেবপ্রিয়র

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১৯:৩৭

সিপিডি’র সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘অগ্রাধিকার ও সংস্কারের জন্য সুস্পষ্ট রোডম্যাপের পাশাপাশি দ্রুত, জবাবদিহিমূলক ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন অপরিহার্য। রাষ্ট্রীয় উপরিকাঠামোর মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে তৃণমূল পর্যায়ের অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোরও সমাধান করা উচিত।’

সংস্কার উদ্যোগে অসমাপ্ত ও অপরিহার্য বিষয়কে গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

শনিবার এক সংলাপে অভিমত ব্যক্ত করে তিনি বলেছেন, ‘বিগত সরকারের অসমাপ্ত রেখে যাওয়া এবং স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা ছাড়িয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে অপরিহার্য বিষয়ে সংস্কার উদ্যোগে গুরুত্ব দেয়া দরকার।

‘অগ্রাধিকার ও সংস্কারের জন্য সুস্পষ্ট রোডম্যাপের পাশাপাশি দ্রুত, জবাবদিহিমূলক ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন অপরিহার্য। রাষ্ট্রীয় উপরিকাঠামোর মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে তৃণমূল পর্যায়ের অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোরও সমাধান করা উচিত।’

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অঠ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে ব্যাংকিং খাত ও বৈদেশিক ঋণসহ অর্থনৈতিক নীতি সংস্কার নিয়ে তথ্যবহুল এ সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস)। সূত্র: ইউএনবি

ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘বর্তমান সরকার মাত্র কয়েক মাস আগের গণঅভ্যুত্থান থেকে উঠে এসেছে। রাষ্ট্রের প্রাতিষ্ঠানিক অচলাবস্থা, বিকৃত পরিসংখ্যান এবং রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য আইনি ব্যবস্থার কারসাজি সবই খতিয়ে দেখা দরকার।

‘চুরির ঘটনায়ও যদি মামলা করার প্রয়োজন পড়ত, কোনো থানা নিত না। চুরির মামলা নেয়ার জন্য এলাকার নেতাদের অনুমতি নিতে হতো। সাবেক সরকারের সময় দেশটা এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল।’

সংলাপটি সঞ্চালনা করেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সংস্কার শব্দটি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের জাতীয় শব্দভাণ্ডারের অংশ। তবে এটিকে তাচ্ছিল্যের সঙ্গে দেখা হতো। গণঅভ্যুত্থানের পর এটি আবার প্রকটভাবে আবির্ভূত হয়েছে। মানুষ এখন পরিবর্তন চাইছে। কারণ অনেক প্রতিষ্ঠান প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করছে না।’

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস সংস্কারের বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রের রূপরেখা তুলে ধরেছেন, যা এই সংলাপের ঘটনাগুলোর ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে।

সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের চেয়ার মুনিরা খান দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘অবৈধ তহবিল বাংলাদেশে থাকলে সমস্যা কম হবে। তবে এসব তহবিলের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বিদেশে পাচার হয়, যা বন্ধ করতে হবে।’

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. রাশেদ তিতুমীর বলেন, ‘বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য খাদ্য আমদানিকারক। যদিও অতীতের বিবরণে মূল্যবৃদ্ধির জন্য বাহ্যিক কারণগুলোকে দায়ী করা হয়েছে, বিশেষত তেল ও সারের দামকে প্রভাবিত করে। আমদানিকারকরা কেন সরকারের সঙ্গে সংলাপে জড়িত হচ্ছে না।’

জাতীয় পরিচয়পত্র পদ্ধতি ব্যবহার করে সমন্বিত সমাজকল্যাণমূলক ব্যবস্থা কেন এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

পর্যাপ্ত শিল্পায়ন না হওয়া সত্ত্বেও কেন আগের সরকারের বাজেট কাঠামো অনুসরণ করা হচ্ছে-তা নিয়ে প্রশ্ন রাখেন ড. তিতুমীর। তিনি বলেন, ‘শিল্প আকৃষ্ট করতে অধ্যাপক ইউনূসের আন্তর্জাতিক খ্যাতিকে বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারলেও এখন পর্যন্ত এর পূর্ণ সুবিধা নিতে পারেনি।’

ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের পারভেজ করিম আব্বাসী বলেন, ‘আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ। পূর্ববর্তী সরকার অর্থনীতির দায়িত্ব সঠিকভাবে পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়েছে, যে কারণে বাংলাদেশ দায় বহন করতে বাধ্য হয়েছে।

‘যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক আমদানি বাড়লেও সার্বিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমেছে। এ ক্ষেত্রে আংশিকভাবে ভারতের প্রতিযোগিতা ও লবিং প্রচেষ্টার কারণে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল হিসেবে দেখানো হয়েছে।’

এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘বেসরকারি খাতকে প্রাথমিক নিয়োগকর্তা হিসেবে রেখে মাত্র ৫ শতাংশ কর্মী সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করে।

‘কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ স্থিতিশীল সামাজিক-রাজনৈতিক পরিবেশের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু বাংলাদেশের স্বল্প সঞ্চয়ের হার বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করছে।’

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলো একে অপরের সঙ্গে জড়িত এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ব্যতীত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নাগালের বাইরেই থেকে যাবে।’

এফবিসিসিআই কমিটির চেয়ার আসিফ ইব্রাহিম বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণরা প্রায়ই মনে করেন যে তারা রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত। কারণ অনেকেই কখনও ভোট দিতে পারেননি। একটি জরিপের তথ্যে দেখা যায় যে তরুণরা স্বচ্ছতা, জবাবদিহির অভাব এবং কায়েমি স্বার্থকে অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করেন।’

চাকরি নিবন্ধন সিস্টেম এবং যুব ক্রেডিট কার্ড প্রোগ্রামের প্রস্তাব করেন ইব্রাহিম। এতে ঋণ ও কর্মসংস্থানে প্রবেশ সহজতর হবে বলে তার ধারণা।

তিনি প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কমিশনেরও দাবি করেন। সে সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি বেসরকারি খাতের অর্থায়ন ব্যবস্থারও আহ্বান জানান তিনি।

পাডোকোর প্রধান পরামর্শক প্রসেনজিৎ চাকমা বলেন, ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলো উৎপাদকদের সরাসরি ভোক্তাদের সঙ্গে সংযুক্ত করে বাজারের সিন্ডিকেটগুলো ভাঙতে পারে।’

একইসঙ্গে আদিবাসী সম্প্রদায় ও এসএমইগুলোকে সমর্থন করার জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ ও কর প্রণোদনার আহ্বান জানান তিনি।

এফবিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির বলেন, ‘দীর্ঘস্থায়ী সুবিধা পেতে জনগণকে অবশ্যই উন্নয়নকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশ এখনও তার ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডকে পুঁজি করেনি এবং শিক্ষানীতিতে ঢাকার বাইরেও উৎপাদনশীলতাকে উৎসাহিত করা উচিত।

‘একমাত্র অর্থায়ন ব্যবস্থা হিসেবে ব্যাংকের ওপর দেশের নির্ভরতা এবং এর ফলে ব্যবসায় আস্থার ঘাটতি দেখা দেয়।’

এ বিভাগের আরো খবর